দ্রুত দখল করছে চীন ভারত মহাসাগর ?

ছবি Online

বিটিসি নিউজ ডেস্ক : সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো চীন ক্রমশ ভারত মহাসাগরে নিজের শক্তি বাড়িয়ে চলেছে। ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স গ্রুপের সাম্প্রতিক প্রকাশিত এক রিপোর্টে এ কথাই বলা হয়েছে।

এখন বিশ্বের সব জায়গায় গভীর সমুদ্রে চীনের পতাকা দেখতে পাওয়া যাবে । বিশেষ করে ভারত মহাসাগরে, যেখানে চীনা যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতি প্রায় নিয়মিত বিষয়। মার্কিন নৌবাহিনীর নীতিনির্ধারকদের এটা ধরে নেয়া উচিত যে ভারত মহাসাগরের পশ্চিমাঞ্চলে পিএলএ নেভির উপস্থিতি আরো বাড়বে। এবং তাদের সম্প্রসারিত অবস্থানকে সংহত করার জন্য নতুন নতুন ঘাঁটি এবং জায়গা এর সঙ্গে যুক্ত হবে। হর্ন অব আফ্রিকা ও পূর্ব আফ্রিকার অন্যান্য হটস্পট থেকে বাইরে বেরিয়ে যা খুশি করার সেই স্বাধীনতা আর মার্কিন কর্তৃপক্ষের নেই। ভারতের কাছাকাছি হটস্পটগুলোর ব্যাপারেও এটা প্রযোজ্য। যেমন কলম্বোর হাম্বানটোটা বন্দর, যা বেজিংকে ভারত মহাসাগরে বাণিজ্যের সুবিধা করে দিয়েছে।

বেইজিং ভারত মহাসাগরে কী করার চেষ্টা করছে ? বেশকিছু মিশন রয়েছে তাদের। একটা উদ্দেশ্য হল, উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো থেকে তাদের তেলবাহী জাহাজগুলোকে জলদস্যুদের কবল থেকে রক্ষা করা। সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্টাডিজ জানিয়েছে, ২০০৮ সালের ডিসেম্বর থেকে আরব সাগরে বিরামহীনভাবে জলদস্যু-বিরোধী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে পিপলস লিবারেশান আর্মি নেভি (পিএলএএন)। তাদের আরো একটি মিশন হলো, আমেরিকা যাতে মালাক্কা প্রণালীর পথ বন্ধ করতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করা। ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রবেশের জন্য এটা কৌশলগতভাবে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ জলপথ যেটা দিয়ে একদিকে আফ্রিকা ও আরব দুনিয়া, অন্যদিকে এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য পরিচালিত হয়।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে মালাক্কা প্রণালীর গুরুত্ব অনেকগুণ বেড়ে গিয়েছে চীনের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে । কারণ জাপানের অন্যতম প্রধান বাণিজ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়া ছাড়াও ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ চীন সাগরে আমেরিকার আধিপত্যের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে চীন।

তেলের চাহিদা মেটাতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর ওপর চীনের নির্ভরশীলতা বেড়েই চলেছে। এই তেলবাহী জাহাজগুলিকে মালাক্কা প্রণালী দিয়েই চীনের উপকূলে পৌঁছাতে হয়। এর অর্থ হলো, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে বিবাদ এবং তাইওয়ান নিয়ে আমেরিকা ও চীনের মধ্যে যদি যুদ্ধ বেঁধে যায় এবং আমেরিকা যদি মালাক্কা প্রণালীর পথ বন্ধ করে দেয়, তাহলে আরব দুনিয়া থেকে তেল নেয়া বন্ধ হয়ে যাবে চীনের।

সমুদ্রপথের বাণিজ্য কেন্দ্রগুলোকে সামরিক ঘাঁটিতে রূপান্তরের মাধ্যমে ভারতকে ঘিরে ফেলা চীনের তৃতীয় মিশন,। কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন যাতে সেটা তা সম্ভব না হয়। যেমন, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বহুজাতিক নৌ মহড়ার আয়োজন করা। গত বছর বঙ্গোপসাগরের মালাবারে জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এই ধরনের মহড়া করেছিল ভারত। মার্চে এ ধরনের আরো একটি মহড়ার আয়োজন করে ভারত। তাতে ২৩টি দেশ অংশ নেয়। ওই মহড়া নিয়ে ক্ষুব্ধ বেইজিং প্রতিক্রিয়া দেয়। যদিও এটা এখনো স্পষ্ট নয় যে নৌ শক্তির ভারসাম্য কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। তবে একটি বিষয় কিন্তু পরিষ্কার, এই অঞ্চলে ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বাড়তেই থাকবে, যা নিয়ে স্থানীয় বাজারে বিনিয়োগকারীদেরও উদ্বেগ বাড়বে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.