দ্রুতগতির ট্রেন চালুতে বাড়বে জন্মহার, প্রত্যাশা দ. কোরিয়ার

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়া নতুন একটি দ্রুতগতির ট্রেন পরিষেবা চালু করতে যাচ্ছে। এটি চালু হলে রাজধানী সিউলের কেন্দ্র ও শহরতলীর যাতায়াতের সময় কমবে। প্রকল্পটির এক কর্মকর্তার আশা, এর ফলে তরুণরা শহরের বাইরে বসবাসে উৎসাহী হবে এবং সন্তান জন্মদান শুরু করবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বিশ্বের সর্বনিম্ন জন্মহার দক্ষিণ কোরিয়ায়। বিয়ে ও পরিবার শুরু না করার পেছনে কারণ হিসেবে দেশটির তরুণরা প্রায় সময়েই বৃহত্তর সিউলে ব্যয়বহুল আবাসন, দীর্ঘ যাত্রার কথা বলে আসছেন। সারা দেশের তুলনায় সিউলে জন্মহার আরও কম। ভর্তুকিসহ বিভিন্ন পন্থায় জন্মহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কিন্তু এসব উদ্যোগে সাফল্য খুব একটা আসেনি।
কর্মকর্তারা এখন বাজি ধরছেন গ্রেট ট্রেন এক্সপ্রেস (জিটিএক্স) প্রকল্পের ওপর। ৯৯.৫ বিলিয়ন ডলারে ভূগর্ভস্থ দ্রুতগতির ট্রেন প্রকল্পটির নির্মাণ করা হবে। ২০৩৫ সালের মধ্যে ছয়টি রুটে সিউলের সঙ্গে আশেপাশের অঞ্চলকে যুক্ত করবে প্রকল্পটি।
শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওল প্রথম রুটের একটি শাখা উদ্বোধন করেছেন। এটি চালু হওয়ার ফলে রাজধানীর সুসিও থেকে ডঙ্গটান শহরে যাতায়াতের সময় ১৯ মিনিটে নেমে আসবে। বর্তমানে বাসে যাতায়াতে সময় লাগে ৮০ মিনিট।
উদ্বোধনের সময় প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যাতায়াতে সময় কমে যাওয়ার ফলে মানুষ সকাল ও সন্ধ্যায় পরিবারের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাতে পারবেন।
কর্মকর্তারা বলেছেন, শনিবার এই রুটে ট্রেন চলাচল শুরু করবে। পুরোপুরি চালু হওয়ার পর জিটিএক্স হবে বিশ্বের দ্রুতগতির ভূগর্ভস্থ ট্রেন ব্যবস্থার একটি। ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার গতিতে চলবে এই নেটওয়ার্কের ট্রেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় বাড়ির মালিকানা বেশ ব্যয় বহুল। পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৫ শতাংশ বেড়ে ২০২১ সালের জুনে তা চূড়ায় ছিল। সিউলে জীবনযাপন ব্যয়বহুল। উন্নত দেশগুলোর নিরিখে প্রতি বর্গফুটের পেছনে ব্যয় অনেক বেশি।
দেশটির ভূমিমন্ত্রী পার্ক সাং-উ বলেছেন, জিটিএক্স এর ফলে তরুণ-তরুণীরা রাজধানী থেকে দূরে বাড়ি করার কথা বিবেচনা করতে পারবে। তখন তাদের যাতায়াতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করতে হবে না। পরিবারের সঙ্গে তারা এই সময় কাটাতে পারবেন।
তিনি বলেন, উদাহরণ হিসেবে, বাড়িতে পৌঁছাতে দুই ঘণ্টা লাগলে সন্তান নেওয়ার সময় কারও থাকে? আমাদের লক্ষ্য হলো, মানুষদের কাজ শেষে অবসরের জন্য আরও বেশি সময় দেওয়া।
কয়েকজন বিশ্লেষক অবশ্য বলছেন, জিটিএক্স চালু হলে দক্ষিণ কোরিয়ার গ্রামীণ এলাকা থেকে আরও মানুষ ইতোমধ্যে ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানীতে চলে আসবে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.