‘তেহরিক-ই-তালেবান’ সমস্যা পাকিস্তানকেই সমাধান করতে হবে : তালেবান

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্কআফগানিস্তানকে নয়, পাকিস্তানকেই নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবানের (টিটিপি) বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে জানিয়েছেন তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। গত শনিবার জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা জানান তিনি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএনআই।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তালেবান মুখপাত্র বলেন, ‘টিটিপির কর্মকাণ্ড বৈধ নাকি অবৈধ, পাকিস্তানের আলেম এবং ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন। আর ইমরান খানের সরকারকেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
উল্লেখ্য, পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান (টিটিপি) পাকিস্তান তালেবান হিসেবেও পরিচিত। তালেবানের দুইটি অংশ রয়েছে। একটি আফগানিস্তান, অপরটি পাকিস্তানভিত্তিক। গোপনে এরা একে অপরকে সহায়তা করে থাকে। পাকিস্তান তালেবান আফগান তালেবান নেতৃত্বকে তাদের আসল নেতা বলে মনে করে। অভিযোগ রয়েছে- পাকিস্তান নিজে দেশের তালেবানকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও আফগান তালেবানের সঙ্গে যোগসাজশ রাখছে। তবে বরাবরের মতোই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে ইসলামাবাদ।
জিও নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে তালেবান কাউকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে দিবে না উল্লেখ করে জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘তালেবানের প্রতিশ্রুতি হচ্ছে- কোন বিদেশি গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচলনার জন্য আফগান মাটি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। আর টিটিপি যদি আফগান তালেবানকে তাদের নেতা মনে করে, তাহলে তাদের এই কথা মেনে চলতে হবে।’
উল্লেখ, আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর দেশটির বিভিন্ন কারাগারে থাকা টিটিপি’র অন্তত ২ হাজার ৩০০ জন যোদ্ধাকে মুক্তি দিয়েছে তালেবান। এর মধ্যে গোষ্ঠীটির সাবেক উপ-প্রধান ফকির মোহাম্মদও রয়েছেন।
সরকার গঠনের ব্যপারে তালেবানের প্রস্তুতি সম্পর্কেও জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খুব শিগগিরই সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে একটি অন্তর্ভূক্তিমূলক সরকার গঠন করা হবে’। এ নিয়ে গোষ্ঠীটির নেতৃবৃন্দ কাজ করে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি। সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে আনুমানিক কতদিন লাগতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে এ মুখপাত্র জানান, ‘আগামী বেশ কয়েকদিনের মধ্যেই এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে।’
সরকার গঠনে বিলম্ব হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘শীর্ষ তালেবান নেতারা কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোয় ব্যস্ত। ন্যাটো সৈন্যরা আফগানিস্তান ছাড়ছেন, সেখানকার আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে। বাণিজ্য ও অন্যান্য বিষয়েও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হচ্ছে। এ ছাড়া কাবুলের সবেশেষ নেতৃত্ব এবং বিভ্ন্নি দলের নেতা-উপনেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় সময় লাগছে।’
পঞ্জশির ন্যাশনাল রেজিস্টেন্স ফ্রন্ট (এনআরএফ) সম্পর্কে জানতে চাইলে তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘তালেবান পঞ্জশিরে যুদ্ধ চায় না’। তাদের আত্মসমর্পন করতে হবে এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে হবে। উল্লখ্য, আফগানিস্তানের অধিকাংশ স্থান দখল করলেও পঞ্জশিরে দারুণ প্রতিরোধের মুখে পড়েছে তালেবান। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন আহমেদ মাসুদ। ফলে, এই অঞ্চলের কর্তৃত্ব নিয়ে তালেবান ও এনআরএফ’র মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.