তিন জেলা নিয়ন্ত্রণ করত প্রতারক রনি : গড়েছেন অট্টালিকা!

নাটোর প্রতিনিধি: বাড়ির সামনে পুকুর, তার সামনে নির্মিত হয়েছে দুই তালা বাড়ি। প্রাচীর ঘেরা বাড়িটি নিচের তোলা কমপ্লিট হলেও দ্বিতীয় তোলা এখনও সম্পন্ন হয়নি। তাছাড়া প্রাচীর ঘেরা বাড়ির সামনের অংশটুকু টাইলস দিয়ে মোড়ানো।প্রাচীরে রয়েছে রাতের জন্য সাদা চারটি লাইট।

এ সবের মধ্যে চোখে পড়লো বাড়ির সামনে টাইলস দিয়ে লেখা রয়েছে ‘মন্ডল বাড়ি’সমাজ সেবক ফজলুর রহমান ওরফে রনি। দেখে হয়তো আপনি খটকায় পড়ে যেতে পারে, আসলে এটা কোন সমাজ সেবক বা ধনির বাড়ি। যিনি নিজেকে পরিচয় দেন সমাজ সেবক হিসেবে। মূলত তিনিই হচ্ছেন নিয়োগ জালিয়াতি চক্রের মুলহোতা।

নাটোর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ এই তিন জেলার পুলিশ সহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় চাকুরী দেওয়ার কথা বলে জালিয়াতি করে আসছিল। আর এই জালিয়াতি করেই বড়াইগ্রাম উপজেলার মাড়িয়া গ্রামে তিনি গড়েছেন বিশাল অট্টালিকা।সমাজ সেবক হিসেবে এলাকায় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহন করে প্রতারক রনি।

সম্প্রতি পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি করতে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন প্রতারক রনি। গতকাল শুক্রবার (২৮জুন)জেলা পুলিশের এক প্রেস বিফ্রিংয়ে প্রতারক রনির বিষয়ে সাংবাদিকদের সামে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

এলাকাবাসীরা জানান, মাড়িয়া গ্রামের সাইদুল মন্ডলের ছেলে রনি মুলত অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ঢাকায় কোন এক কলেজের পড়াশুনা করছে সে। কিন্তু এলাকায় বেশির ভাগ সময় থাকে রনি। তাছাড়া এলাকায় রনি সমাজ সেবক হিসেবে পরিচিত। শীতের সময় কম্বল সহ বিভিন্ন উপকরণ

বিতরণ করেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।তাছাড়া রনি বড়াইগ্রাম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য। ছাত্রলীগের ব্যানারে বিভিন্ন সময় দলের কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করে এসেছে। পরে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন তিনি। সে সময় সভাপতি হওয়ার জন্য এলাকায় বিভিন্ন বিলবোর্ড সাঁটান।কিন্তু ছাত্রলীগের সভাপতি হতে পারেননি।

নাটোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈকত হাসান বিটিসি নিউজকে বলেন,ফজলুর রহমান ওরফে রনি মুলত পুলিশ, সমাজসেবা কার্যালয় সহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় চাকুরি প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জালিয়াতি করে আসছিল। সে মুলত উত্তরাঞ্চলের নাটোর, পাবনা এবং সিরাজগঞ্জ নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল। এলাকায় সে একজন সমাজ সেবক হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অনুদানও দিয়ে এসেছি। মুলত তার অপকর্ম ঢাকার জন্য সে সমাজ সেবক সাজেওসি বলেন, রনির সকল অপকর্ম জানতো তার পিতা। নিয়োগ জালিয়াতি করে মাড়িয়া গ্রামে অট্টালিকা গড়েছে। তবে রনির কথিত মামা সিরাজগঞ্জের গডফাদার আলতাব হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবি শিক্ষার্থীদের দিয়ে একজনের পরিবর্তে অন্যজনকে পরীক্ষা দেওয়ায়। যেটা বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ছাড়া সনাক্ত করা সম্ভব নয়। তাছাড়া ছবি টে¤পারিং করে যে কোন নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র তারা তৈরী করে একজনের বদলে অন্যজনকে পরীক্ষা দিয়ে আসছিল।

আর নিয়োগ পরীক্ষার আগেই সাদা ষ্ট্যা¤েপ এবং চেকে স্বাক্ষর নিয়ে রাখতো। কেউ টাকা না দিলে চেক ডিজঅর্নার মামলা করে টাকা হাতিয়ে নিতো। মুলত রনি এভাবেই প্রতারনা করে আসছিল।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.