তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণের সঙ্গে এসিডি’র মতবিনিময়
(তামাকের অবৈধ প্রচারণা বন্ধে শ্রীঘ্রই মাঠে নামছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন)
এসিডি প্রতিবেদক: ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনের অধিকতর বাস্তবায়নে এবং তামাকের বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর অবৈধ বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও পুরস্কার-প্রণোদনা প্রদান বন্ধে খুব শীঘ্রই মাঠে নামছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন।
আজ বুধবার সকালে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে মাঠে নামার এ বিষয়টি অবহিত করে জেলা প্রশাসন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও উন্নয়ন সংস্থা ‘এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’র সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হামিদুল হক। জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্থানীয় সরকার, রাজশাহীর উপ-পরিচালক (উপ-সচীব) পারভেজ রায়হান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মুহাম্মদ শরিফুল হক, নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত এডিম আবু আসলাম, ‘ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিড্স-সিটিএফকে’ এর গ্র্যান্ট্স ম্যানেজার আব্দুস সালাম মিয়া ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে আমাদের কার্যক্রম গতিশীল আছে।
এ আইন আরও অধিকতর বাস্তবায়নে আইনের সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে আরও বেশি বেশি কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘ধূমপানের জন্য জোন তৈরী করা দরকার। কেননা ধূমপানের কারণে অনেক মানুষ ‘সেকেন্ড হেন্ড স্মোকিং’র শিকার হচ্ছে। তাই যে খায় খাক। সে ঘরে ভেতরে খাক। তার দ্বারা যেন অন্যের ক্ষতি না হয়।’
তামাকের ব্যবহার কমানোর উপায় হিসেবে ডিসি বলেন, ‘যারা চাকুরিতে যোগদান করবে, কিংবা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবে তার আগে তারা ধূমপান করে কীনা সেজন্য তাদের রক্ত পরীক্ষা করার ব্যবস্থা চালু করতে হবে। অর্থাৎ যারা ধূমপায়ী তাদেরকে চাকরি বা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হবে না। এমন উদ্যোগের ব্যবস্থা করা হলে আস্তে আস্তে ধূমপায়ীরা ধূমপানে নিরুৎসাহিত হবে।
কমে যাবে তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা। ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন হতে শুরু করবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪০ সালের মধ্যে ধূমপানমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার সেই স্বপ্ন।’
সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে আমরা এসিডি’র সাথে একত্রিত হয়ে কাজ করতে চাই। রাজশাহীতে তামাকপণ্যের অবৈধ বিজ্ঞাপন, পুরস্কার, প্রণোদনা বন্ধে আমাদের অভিযান আগে চলেছে, বর্তমানেও চলছে এবং ভবিষ্যতে এটি আরও গতিশীল হবে।’
সভায় বক্তারা আরও বলেন, মাঝে-মধ্যেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হলেও রাজশাহীর পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহণে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন প্রতিনিয়ত লঙ্ঘিত হচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অমান্য করে তামাকের বহুজাতিক কোম্পানিগুলো অবৈধভাবে বিজ্ঞাপন, প্রমোশন, প্রণোদনা চালিয়ে যাচ্ছে। আইন অনুযায়ী, অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির দ্বারা তামাকপণ্য বিতরণ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধের কথা থাকলেও তাদের দ্বারা তামাকপণ্য বিপণন ও ক্রয়-বিক্রয় করানো হচ্ছে। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে এগুলো বন্ধের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ জানানো হয়।
সভায় রাজশাহীতে তামাক নিয়ন্ত্রণ লঙ্ঘনের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন এসিডি’র এডভোকেসি অফিসার মো. শরিফুল ইসলাম শামীম। এসময় জেলা প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে মোবাইল কোর্ট, কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে চিঠি প্রদান; পাবলিক প্লেস সমূহে সতর্কতা নোটিশ/ সাইনেজ অনুপস্থিত থাকলে কর্তৃপক্ষকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা; বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও প্রদর্শনী বন্ধে জেলা প্রশাসনের মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা’ প্রতি মাসে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা শিডিউলে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে অন্তর্ভূক্ত করা; প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে গৃহিত পদক্ষেপসমূহে সহায়তা দান করা।
বার্তা প্রেরক আমজাদ হোসেন শিমুল, মিডিয়া ম্যানেজার ,এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.