টাকা পরিশোধ না করলে ট্যানারি মালিকদের চামড়া দিবে না নাটোরের ব্যবসায়ীরা

নাটোর প্রতিনিধি:  আজ শনিবার থেকে ট্যানারি মালিকরা নাটোরের চামড়া আড়তদারদের কাছ থেকে চামড়া ক্রয় করার ঘোষনা দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি। নাটোর আড়তে দেখা মেলেনি কোন ট্যানারি মালিক ও তাদের প্রতিনিধিদের।

এদিকে, বকেয়া টাকা পরিশোধ না করলে চামড়া বিক্রি না করার ঘোষনা দিয়েছেন নাটোরের ব্যবসায়ীরা। তবে আগামীকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চামড়া ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠকের পর ট্যানারি মালিকদের সাথে চামড়া বিক্রির সিদ্ধান্ত নিবেন নাটোরের ব্যবসায়ীরা।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার আড়ত নাটোরে চকবৈদ্যনাথে এখন অনেকটাই ফাঁকা। ঈদের দিন থেকে চামড়া ক্রয় করে লবনজাত করে রেখেছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করার জন্য কেউ কেউ প্রস্তুতি গ্রহন করছেন। শনিবার থেকে সরকার নির্ধারিত দরে চামড়া ক্রয় করার ঘোষনা দেন ট্যানারি মালিকরা।

তবে ঘোষনার পরও নাটোরের দেখা মেলেনি কোন ট্যানারি মালিক ও তাদের প্রতিনিধিদের। তবে বকেয়া টাকা পরিশোধ না করলে তাদের কাছে চামড়া বিক্রি না করার ঘোষনা দিয়েছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।

নাটোর চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের উপদেষ্টা মনজুরুল আলম হিরু বিটিসি নিউজকে বলেন, ট্যানারি মালিকদের সাথে আমরা চামড়া ব্যবসায়ীরা অনেকটা জিম্মি। ঈদের আগে কিছু কিছু ট্যানারি মালিক দুই থেকে আড়াই শতাংশ টাকা দিয়েছে।

যে খুবই কম। আমরা টাকা না পাওয়ার কারনে অনেক সমস্যায় রয়েছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ট্যানারি মালিকরা টাকা না দিলে তাদের কাছে চামড়া বিক্রি করবো না।

তিনি আরও বলেন, শনিবার থেকে ট্যানারি মালিকরা চামড়া ক্রয় করার কথা থাকলেও নাটোরের মার্কেটে তাদের দেখা মেলেনি। তাদের কোন প্রতিনিধিও আসেনি।

আরেক উপদেষ্টা বাবু প্রামানিক বিটিসি নিউজকে বলেন, কিছু চিটার মালিকরা আমাদের সাথে চামড়া নিয়ে বছরের পর বছর প্রতারনা করে যাচ্ছে। চামড়া ব্যবসায়ীদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। যারা ভাল টাকা পরিশোধ করেছে তারাই চামড়া ক্রয় করতে পারবে। আর যারা টাকা দেয়নি, তাদের আমরা মার্কেটেই ঢুকতে দিবনা।

এদিকে, ঈদের পর থেকে বেকার অবস্থায় পড়ে রয়েছে চামড়ার সাথে জড়িত শ্রমিকরা। ট্যানারি মালিকরা শনিবার থেকে চামড়া ক্রয় করার কথা থাকলেও তা ক্রয় না করায় অলস সময় পার করছেন তারা। তবে ট্যানারি মালিকরা চামড়া ক্রয় শুরু করলে আবারও ব্যস্ততা বাড়বে জানান চামড়া সাথে শ্রমিকরা।

নাটোর চামড়া শ্রমিক ইউনিয়নের সর্দার হোসেন আলী বিটিসি নিউজকে বলেন, ঈদের পর কিছু চামড়া আসায় আমাদের কাজ কর্ম হয়েছে। লবনজাত করার পর এখন ব্যবসায়ীরা ট্যানারি মালিকদের অপেক্ষায় রয়েছেন। ট্যানারি মালিকরা চামড়া ক্রয় করা শুরু করলে আমাদেরও কাজ শুরু হবে। না হলে অলস সময় পার করতে হবে।

এদিকে, বকেয়া টাকা পরিশোধের জন্য ৫০জন ট্যানারি মালিকের নামের তালিকা করেছে নাটোর চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপ। এই ৫০জন ট্যানারি মালিকের কাছ থেকে অন্তত ৭০/৮০কোটি টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে নাটোরের চামড়া ব্যবসায়ীদের। রবিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে টাকা পরিশোধ সহ বিভিন্ন বিষয়ে উপস্থাপন করা হবে। পাশাপাশি বকেয়া টাকা পরিশোধ না করলে চামড়া বিক্রি হবে না বলে হুশিয়ারী দিয়েছেন নাটোর চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ।

তিনি বলেন, চামড়া সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকার কাঁচা চামড়া রপ্তানির আদেশ দিয়েছে। আমরা এটাকে স্বাগত জানায়। তবে ট্যানারি মালিকদের কাছে আমরা জিম্মি অবস্থায় পড়ে রয়েছি। রবিবার বৈঠকের পর আমরা ট্যানারি মালিকদের কাছে চামড়া বিক্রির সিদ্ধান্ত নিবো। তার আগে নাটোর থেকে ঢাকায় কোন চামড়া যাবে না।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.