চার জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’  নিহত ৫

বিটিসি নিউজ ডেস্কআজ বুধবার পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কক্সবাজার, সিলেট, খুলনা ও মুন্সীগঞ্জ জেলায় ৪ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন । এছাড়া খুলনা জেলায় এক সন্ত্রাসীকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আজ কক্সবাজারে ২ জন, মুন্সিগঞ্জ ও সিলেটে একজন করে নিহত হয়েছেন।

প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর :

কক্সবাজার

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১৯ মামলার আসামি ডাকাত নজির আহম্মদ প্রকাশ নজির (৪০) ও মাদকবিক্রেতা আবদুল আলীম (৩৮) নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোরে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়া খালীর ট্যুরিস্টজোন সংলগ্ন বেড়িবাঁধ এলাকায় জিরোপয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে থেকে ৪টি দেশীয় অস্ত্র, ২১ রাউন্ড গুলি, ১০ হাজার ১৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় পুলিশেরএসআই খাইরুল আলম (৩৮), কনস্টেবল রুমন (৩৪), মংছিং প্রু (৩৮) ও আব্দুস শুক্কুর (২২) আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। তাদের টেকনাফ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

নিহত নজির আহম্মদদ সাবরাং হারিয়াখালীর কচুবনিয়ার আব্দুল করিম মাঝির ছেলে ও আব্দুল আলীম একই এলাকার আমির হামজার ছেলে।

টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বিটিসি নিউজ প্রতিনিধিকে জানান, গ্রেফতারকৃত ডাকাত নজির আহম্মদ প্রকাশের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়াখালী বেড়িবাঁধ এলাকায় অস্ত্র উদ্ধারে যায় পুলিশ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নজিরের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।

এক পর্যায়ে নজির ডাকাতের সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নজির ডাকাত ও মাদকবিক্রেতা আবদুল আলিমকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে। তাদের টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি জানান, নজির উপজেলার একজন কুখ্যাত ডাকাত। তার বিরুদ্ধে থানায় মানবপাচার, ডাকাতি ও অস্ত্রসহ ১৯টি ও আবদুল আলিমের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা রয়েছে

সিলেট

সিলেট দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তালিকাভূক্ত মাদক ব্যবসায়ী শহিদ মিয়া নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার  দিবাগত রাতে উপজেলার মোগলাবাজার থানার শ্রীরামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় মাদক ব্যবসায়ীদের মাদক বেচাকেনার গোপন সংবাদ পেয়ে শ্রীরামপুর এলাকায় অভিযান চালায় র‌্যাব সদস্যরা। এ সময় উপস্থিতি টের পেয়ে র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে মাদক ব্যবসায়ীরা। র‌্যাবও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। পরে মাদক ব্যবসায়ীরা পিছু হটে। ঘটনাস্থল থেকে শহিদ নামের একজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে র‌্যাব। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধারের দাবি করেছে র‌্যাব।

র‌্যাবের দেয়া তথ্য অনুযায়ী নিহত শহিদ মিয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক সম্রাট । তাকে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। গুলিবিদ্ধ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

খুলনা

হত্যাসহ একাধিক মামলার শীর্ষ সন্ত্রাসী মিরাজুল ইসলাম ওরফে গরু মারুফ(৪৩) কে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনা নগরীর দৌলতপুরের কার্তিককূল বালুর মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, ১টি পাইপগান, ১ রাউন্ড গুলি ও ৫৪ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে।

নিহত মারুফ দিঘলিয়া উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের আব্দুল গফ্ফার শেখের ছেলে। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে পলাতক ছিলেন।

বিটিসি নিউজকে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মোস্তাক আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, স্থানীয় জনগণ জানায় কার্তিককূল বালুর মাঠ এলাকায় গুলিবিদ্ধ লাশ পরে আছে । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার পড়ে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে মরদেহ সনাক্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে দৌলতপুর ও দিঘলিয়া থানায় সেনহাটির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আব্দুল হালিম ও হুজি শহীদসহ একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানিয়েছে, গরু মারুফ মোটরসাইকেল নিয়ে দৌলতপুর বেবীস্ট্যান্ড এলাকায় এলে পুলিশ তাকে চ্যালেঞ্জ করে। পুলিশ তাকে ধরার চেষ্টা করলে সে পড়ে যায়। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি হয়। পরে পুলিশ তাকে চোখ বেঁধে আটক করে নিয়ে যায়।

তবে এ বিষয়ে একাধিকবার দৌলতপুর থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এ বিষয়ে কেউ মুখ খোলেননি।

মুন্সীগঞ্জ

মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আবুল হোসেন (৫০) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোরে উপজেলার সোনারং এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি, ১টি ম্যাগজিন, ৫০০ পিস ইয়াবা, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জের উপ-পরিচালক মেজর আশিক বিল্লাহ বিটিসি নিউজকে জানান, মাদক ব্যবসায়ীদের গোপন বৈঠকের খবর পেয়ে আজ বুধবার ভোর ৪টার দিকে টঙ্গীবাড়ির সোনারং এলাকায় অভিযান চালায় র‌্যাবের একটি দল। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি চালালে র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। পরে তারা পালিয়ে গেলে আবুল হোসেনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে টঙ্গীবাড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত আবুল হোসেন একজন মাদক ব্যবসায়ী। তার নামে বিভিন্ন থানায় ১৮টি মামলা রয়েছে র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা জানান।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.