চাঁপাইনবাবগঞ্জে যক্ষ্মা নির্মূল বিষয়ক মতবিনিময় সভা

বিশেষ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি: যক্ষ্মা নির্মূল বিষয়ক মতবিনিময় সভা হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। বৃহস্পতিবার সকালে এই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল। সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আহমেদ মাহবুব উল ইসলাম।
যক্ষ্মা বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ নানা বিষয়ে আলোকপাত করেন জাতীয় সংসদের মহিলা সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির বোর্ড সদস্য এবং পিপ ট্রাষ্টের ভাইস চেয়ারপারসন আরমা দত্ত এমপি।
ইউএসওআইডি স্টার’র সিনিয়র যক্ষ্মা বিষয়ক উপদেষ্টা ডাক্তার আজহারুল ইসলাম খান এর সঞ্চালনায় পিপ ট্রাস্ট ও আইসিডিডিআর.বি এর যৌথ উদ্যোগে সভায় যক্ষ্মা রোগ নিয়ন্ত্রন ও নির্মূলে করনীয় বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডাঃ এস.এম মাহমুদার রহমান, শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নাটাব চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মনিম উদ দৌলা চৌধুরী, ভোলাহাট উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রাব্বুল হোসেন, রাজশাহী যক্ষ্মা হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ সাইফুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও এনটিভি’র স্টাফ রিপোর্টার সিনিয়র সাংবাদিক শহীদুল হুদা অলক, চ্যানেল আই’র জেলা প্রতিনিধি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ‘দৈনিক চাঁপাই দর্পণ’ এর প্রকাশক ও সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু, রহনপুর মেয়র আলহাজ¦ মতিউর রহমান, নাচোল মেয়র আব্দুর রশিদ খান ঝালু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভোলাহাট, গোমস্তাপুর ও নাচোলসহ অন্যরা।
সভায় শিশুদের যক্ষ্মা পরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রণ এবং জেলার যক্ষ্মা রোগী নির্ণয় ও চিকিৎসা বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা। উপস্থিত ছিলেন ‘দৈনিক চাঁপাই দৃষ্টি’র সম্পাদক এমরান ফারুক মাসুম, জেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোসা. সাহিদা আখতার, জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক উম্মে কুলসুম, সিটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামাল শুকরানা, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর কর্মকর্তা, যক্ষ্মা চিকিৎসায় স্বুস্থ হওয়া কয়েকজন রোগীসহ আমন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। এসময় প্রিপ ট্রাস্ট এর বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রতিদিনই দেশে যক্ষ্মায় ১২১ জন মারা যাচ্ছে এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় মোট যক্ষ্মা রোগী ৪৩৫৬ এবং বর্তমানে চিকিৎসাধিন রয়েছে ৭৬৩জন।
সভায় উঠে আসে দেশের যক্ষ্মা রোগী নিয়ে নানা তথ্য। সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ ৬০ হাজার। এর মধ্যে চিকিৎসা নিচ্ছে ২ লক্ষ ৩০ হাজার। প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার যক্ষ্মা রোগী বিনা চিকিৎসায় অবাধে চলাফেরা করছে। যদিও মাত্র ৬ মাস নিয়মিত চিকিৎসা নিলে একজন যক্ষ্মা রোগী স্বুস্থ হয়ে উঠে। সমাজের এক ধরণের কু-সংস্কার এবং আর্থিক অনটনই এর জন্য দায়ী বলছেন বিশেষজ্ঞরা। করোনা মহামারীকে সরকার অনেকটায় নিয়ন্ত্রণ করলেও নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছে না যক্ষ্মা। বর্তমানে সারাদেশে যখন ৪/৫জন করোনা রোগী মারা যাচ্ছে, ঠিক তখন দেশে যক্ষ্মায় মারা যাচ্ছে ১২১জন। তাহলে করোনার চেয়েও ভয়ঙ্কর অবস্থা দেশে যক্ষ্মা রোগ নিয়ে।
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ২০২১ সালের তথ্যে জেলায় যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ৪৩৫৬ জন, কিন্তু চিকিৎসা নিয়েছেন ১৩০১জন, যা ২৯.৯%। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ২০১৭ সালে রোগী ছিলো ৪১৩০ জন, ২০২১ সালে ৪৩৫৬জন। গত ৫ বছরে যক্ষ্মা রোগী বেড়েছে ১২৬ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধিন যক্ষ্মা রোগী রয়েছে ৭৬৩জন। অনদিকে, পরীক্ষা না করায় অনেক যক্ষ্মা রোগী তালিকার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। ফলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা দিন দিন যক্ষ্মা ঝুঁকির দিকেই এগোচ্ছে। এখনই প্রয়োজন যক্ষ্মা রোগ নিয়ন্ত্রনে কার্যকরী প্রদক্ষেপ গ্রহন করা বলে গুরুত্বারোপ করেন সভায় বক্তারা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.