চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে এক এনজিও’র জোর করে কিস্তি আদায়ের অভিযোগ


চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে অসহায়-দরিদ্র ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক ঋণের কিস্তি আদায় করে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে নাচোলের এক এনজিও’র বিরুদ্ধে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে ‘নাচোল পুষ্প পল্লী উন্নয়ন সংস্থা’র বিরুদ্ধে এই কিস্তি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঐ এনজিও’র এক মাঠকর্মীকে ঋণের কিস্তি আদায়ের জন্য ঋণ গ্রহিতার বাড়ির পাশের্^ বসে থাকতে দেখা গেছে। করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসায়ীদের দুরবস্থার কথা বিবেচনায় ব্যাংকের ঋণ গ্রহীতাদের জন্য বিশেষ সুবিধার সময় বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোনো ঋণ গ্রহীতা ঋণ শোধ না করলেও খেলাপি করা যাবে না। এ সুবিধা আগে জুন পর্যন্ত থাকলেও বর্তমানে তা বাড়িয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে যদি কোনো ঋণ গ্রহীতা এই সময়ের মধ্যে ঋণ শোধ করেন, তাকে নিয়মিত ঋণ গ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে। জোর করে কোন ঋনগ্রহিতার কাছ থেকে কিস্তি আদায় করা যাবেনা। এমন সরকারি নির্দেশনা থাকলে ও সরকারি সেই নির্দেশনা কে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে জোরপূর্বক নাচোলে চলছে কিস্তি আদায়।

ভুক্তভোগী শরিফা খাতুনের অভিযোগ ‘পুষ্প পল্লী উন্নয়ন সংস্থা’র মল্লিকপুর শাখার ফিল্ড অফিসার এনায়েতুল্লাহ আমলাইন গ্রামে তার বাড়িতে এসে কিস্তির জন্য চাপ দিতে থাকে। এমনকি তিনি কিস্তি না পেলে সেখানেই অবস্থান করার হুমকি দেন এবং দুপুর পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। শরিফা খাতুন তার স্বামীর সড়ক দূর্ঘটনা ও করোনার কারনে কষ্টে থাকায় ২’শ টাকা নেয়ার কথা বললে ঐ মাঠকর্মী আরও ক্ষেপে যান এবং এক হাজার টাকার জন্য চাপ দেয়ার পাশাপাশি গালিগালাজ করেন।

এক পর্যায়ে ঋনের জন্য গালিগালাজ সহ হুমকি দেয়ায় শরিফা খাতুন মানষিক চাপ সহ্য করতে না পেরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু বাড়িতেই ঋনের জন্য অবস্থান নেন ফিল্ড অফিসার এনায়েতুল্লাহ। ঋন গ্রহিতা শরিফা খাতুন অভিযোগ করে আরও বলেন, পুষ্প পল্লী উন্নয়ন সংস্থা থেকে এই বছরে ৬০ হাজার টাকা ঋন নিয়ে ৫০হাজার টাকার কিস্তি পরিশোধের পথে। নিয়মিক কিস্তি দেয়ার পরও তাকে হেনস্থা করা হচ্ছে।

এবিষয়ে পুষ্প পল্লী উন্নয়ন সংস্থার মল্লিকপুর বাজার শাখা অফিসের ম্যানেজার আব্দুর রশিদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দম্ভের সুরে জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেকই আমরা করোনার মধ্যে কিস্তি আদায় করছি। জোর পূর্বক কিস্তি আদায়ের বিষরে বলা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।

এবিষয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, এনজিও সংস্থার সাথে মিটিং করে তাদের বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঋন গ্রহিতাদের কাছে জোর করে কোন কিস্তি আদায় করা যাবে না। এমনটি কেউ করলে তা প্রমানিত হলে, সেই সংস্থার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এনজিও’র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি না থাকলেও প্রশাসন ও সমাজ সেবাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সামনেই প্রকাশ্যে ঋণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অবৈধ ঋণ ব্যবসা বা এনজিও চালাতে সমস্যা না হলে, ঋণ আদায় করাটাও কোন নিয়মে পড়ে না এমনটায় মনে করছেন এসব এনজিও মালিকরা। তাই করোনা সময়ে সাধারণ মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কথা এবং অসহায়দের কথা বিবেচনায় এনে এসব এনজিও’র বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমনটায় আশা করছেন ভূক্তভোগীরা।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.