চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরবাগডাঙ্গায় টিসিবি’র পণ্য বিতরনে অনিয়ম-তালিকা ছাড়ায় পণ্য

বিশেষ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নে টিসিবি’র পণ্য বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারীভাবে দেয়া তালিকা বাদ দিয়ে নিজ পছন্দের লোকদের টিসিবি’র পণ্য দিচ্ছেন চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিদ রানা টিপু। নিজের লোকদের টাকার নোটে টোকেন দিয়ে টিসিবি’র পণ্য বিতরণে টিসিবি’র সংশ্লিষ্ট ডিলারকে বাধ্য করছেন। ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না চরবাগডাঙ্গা ইউপি সচিবও। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন ট্যাগ অফিসারও।
এলাকার মানুষ এই চেয়ারম্যানের কাছে অনেকটায় জিম্মি থাকায় তালিতায় নাম থাকার পরও টিসিবি’র পণ্য না পেয়ে ফেরত আসলেও কোন প্রতিবাদ করার সাহসও পাচ্ছেন না। সরকার দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও আসন্ন রমজান উপলক্ষে দরিদ্র অসহায় মানুষদের কম মূল্যে টিসিবি’র পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নেয়।
কিন্তু চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিদ রানা টিপু সরকারের নির্দেশ কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজের ইচ্ছামত এই পণ্য বিতরণ করাচ্ছেন। এতে ক্ষুদ্ধ টিসিবি’র তালিকাভূক্ত পরিবারগুলো। আর পছন্দের লোকজন এই টিসিবি’র পণ্য নিয়ে গিয়ে বাজারে বা দোকানে বিক্রি করে অর্থ পকেটস্থ করছেন। একই ব্যক্তি বা পরিবারকে একাধিক টোকেন দিয়ে টিসিবি পণ্য দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ ভূক্তভোগীদের।
চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিদ রানা টিপুর ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টিসিবি’র কার্ডধারী চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বেশ কিছু ভূক্তভোগী বলেন, চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিদ রানা টিপু তাঁর নিজের লোকদের টিসিবি’র পণ্য দিচ্ছেন। আমরা গরিব মানুষ। সরকার গরিব অসহায় পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য কম মূল্যে টিসিবি’র পণ্য দিচ্ছেন।
কিন্তু চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিদ রানা টিপু সরকারের কোন আদেশ মানেন না। নিজের মনমতো পছন্দের লোকজনকে নিজস্ব টোকেন দিয়ে পণ্য দিচ্ছেন। বলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। উল্টো অপমান হতে হয়েছে। আসলে বর্তমানে, ‘জোর যার-মুলুক তার’ চেয়ারম্যানের ক্ষমতার কাছে আমরা গরিব মানুষরা অসহায়। আমরা নিরুপায়। আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। আর চেয়ারম্যানের লোকজন টিসিবি’র পণ্য নিয়ে বাজার বা দোকানে বিক্রি করে দিয়ে টাকা পকেটে নিচ্ছেন। একরকম টিসিবি’র পণ্য নিয়ে ব্যবসা হচ্ছে এই ইউনিয়নে।
ভূক্তভোগীদের ধারণা, চেয়ারম্যানের লোকজনেরা টিসিবি পণ্য নিয়ে গিয়ে বিক্রির লাভের টাকার একটা অংশ চেয়ারম্যানের পকেটেও যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা মাহফুজ রহমানের কাছে বিষয়টি জানাতে চাইলে ফোন রিসিভ করার পর সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার ফোন দিলেও ফোন ধরেন নি।
ইউনিয়নে টিসিবি’র পণ্য বিক্রিতে অনিয়ম বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সচিব মাজাহারুল ইসলাম প্রতিবেদককে বলেন, আসলে এসবের মালিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। এসব বিষয়ে চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলেই ভালো হয়। এব্যাপারে চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিদ রানা টিপু’র সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁর ২টি মোবাইল ফোনই বন্ধ পাওয়া যায়।
এব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রওশন আলী জানান, টিসিবি’র নীতিমালা লংঘন করে কেউ যদি অনিয়ম করে, তাহলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে দ্রব্যের উর্ধ্বগতির কারণে সরকার হতদরিদ্র পরিবারকে কম মূলে পণ্য দেয়ার উদ্যোগের অংশ হিসেবে একটি কার্ডে ২লিটার তেল, চিনি এক কেজি, মশুরের ডাল ২ কেজি, ছোলা এক কেজি। যার মোট মূল্য ৪৭০ টাকা। বর্তমান বাজার মূল্যে এই পরিমান পণ্যের দাম প্রায় ৮৫০ টাকা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.