গাইবান্ধায় পেঁপে চাষে  সফল পলাশবাড়ীর আজাদ 

গাইবান্ধা প্রতিনিধি: পেঁপে চাষ করে সফল পলাশবাড়ীর আজাদ। গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় ফল ও সবজি হিসেবে পেঁপে এখন বেশ জনপ্রিয়। শুধু পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য একসময় বাড়ির আঙিনায় চাষ করা হতো ফলটি। প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় উপজেলায় এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে পেঁপের।
পলাশবাড়ী পৌরসভার সিধন গ্রামের মোঃ ছামাদ মাস্টারের ছেলে আজাদ, মৃত ওমরের ছেলে আইয়ুব,মৃত হায়দার আলির ছেলে দুলা মিয়া, ওমরের ছেলে এমদাদুল বর্তমানে পেঁপে চাষে সফল একজন চাষী। তাদের বাগানে গিয়ে দেখাযায় সারি সারি পেঁপে গাছ। প্রতিটি গাছে ঝুলে আছে অসংখ্য পেঁপে। বর্তমানে  পেঁপে তুলে বিক্রি করলেও গাছের পেঁপে যেন শেষই হচ্ছে না। তাঁদের বাগানে হাইব্রীড জাতের পেঁপে চাষ করা হয়।
সফল পেঁপে চাষী আব্দুস ছামাদ মাস্টারের ছেলে আজাদ জানান, ৫ বিঘা জমিতে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন। বর্তমানে সাড়ে ৩ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করেছেন। প্রতিদিন তার বাগান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া,রংপুর ও গাইবান্ধা সদরসহ দেশের দুর দুরান্ত থেকে পাইকেরেরা পাকা এবং কাঁচা পেঁপে কিনতে আসে বাগানে। এর পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে পিয়াজ ছিল। পিয়াজেরও বাম্পার  ফলন  হয়েছিল।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে যদি সার্বিক সাহায্য সহযোগিতা পাওয়া যেত, আমরা আরো সফলতা অর্জন করতে পারতাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় তারা আমার পেঁপে বাগানে একটি দিনের জন‍্যও আসেনি। আমি অনেক ঘুরেছি কৃষি অফিসের লোকজনের পিছনে তবুও ওরা আসেনি।
আজাদ আরো জানান, বাপ দাদার শিখানো পদ্ধতি ব‍্যবহার করে আমি পেঁপে চাষ করে সফল হয়েছি। কৃষি অফিসের একটি ট্রেনিংও পায়নি। আমি এ বছর আরও বেশ কিছু জমিতে পেঁপে চাষের চিন্তা ভাবনা করছি  ।
বর্তমানে পেঁপে চাষে আজাদ হয়ে উঠেছেন পলাশবাড়ী পৌরসভার মডেল। তার বাগানের পেঁপে আরো দুই বছরে প্রায় ২০ লাখ টাকায় বিক্রি করা যাবে বলে জানান তিনি। তার সফলতা দেখে গ্রামের অন্যরাও পেঁপে বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
আজাদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, মাকড়সা ও ছত্রাক ছাড়া পেঁপে বাগানে তেমন কোনো সমস্যা দেখা যায় না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে পুষ্টিমানসমৃদ্ধ পেঁপে চাষে ভাগ্য বদলে ফেলা যায়। পেঁপে চাষে অর্থনৈতিকভাবে সরকারি সহযোগিতা পেলে দেশের অনেক বেকার সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। তিনি মনে করেন, শিক্ষিত বেকার যুবকরা যদি চাষে অগ্রসর হয় তাহলে তারাও লাভবান হবে।
সিধন গ্রামের অনেক কৃষক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান,  আজাদ শিক্ষিত ছেলে। সে হঠাৎ করেই মাঠে পেঁপে ও সাথী ফসল পিয়াজ চাষ শুরু করে সফল হয়েছেন। তার চাষ দেখে আমাদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ তৈরি হয়েছে। তার সাফল্য দেখে গ্রামের অনেকেই পেঁপে চাষ করার পরিকল্পনা করছে।
একই গ্রামের  ওমর আলির ছেলে আইয়ুব আলির জমিতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি ২২ শতাংশ জমিতে  পেঁপের বাগানের মাঝে সাথী ফসল হিসেবে আদার চাষ করেছেন। পেঁপে এবং আদা দুই ফসলের ফলনও বেশ ভালো হয়েছে।
এ গ্রামের পেঁপে চাষী আজাদসহ আইয়ুব, দুলা মিয়া, এমদাদুল বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের বাগানের পেঁপের চাহিদা ভালো থাকায় বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা ছুটে আসছেন। এখান থেকে ১২ ‘শ টাকা দরে  (৪০ কেজি) পেঁপে কিনে বগুড়া,রংপুরসহ ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছেন।
উপজেলা  কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফাতেমা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, পেঁঁপেতে প্রচুর পুষ্টি উপাদান রয়েছে। পেঁপে চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছেে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর গাইবান্ধা প্রতিনিধি মোঃ শাহরিয়ার কবির আকন্দ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.