খুলনা সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে পুন:নির্বাচন দাবি

 

খুলনা ব্যুরো: খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে পুন:নির্বাচন দাবি করেছেন ওই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও ১৫ মে’র নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী মো: ফারুক হিল্টন। ওই ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে ১৮১৭ জনের মধ্যে ১৮১৬জনই ভোট দিয়েছেন এমন চিত্রে হতবাক হয়েছেন তিনি। সেই সাথে ওই কেন্দ্রের সাতজন মৃত:নারী ভোটারেরও ভোটদান হিসেবে দেখানোর ফলে নির্বাচন স্বচ্ছ হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি। সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর দেয়া লিখিত অভিযোগে তিনি এসব তথ্য উপস্থাপন করে পুন:নির্বাচন দাবি করেন।

নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ ফারুক হিলটনের লিখিত অভিযোগে বলা হয়, হাজী শরীয়ত উল্লাহ বিদ্যাপিঠ কেন্দ্রে ১ হাজার ৮১৭ জন মহিলা ভোটারের মধ্যে ১ হাজার ৮১৩ জন ভোট দিয়েছেন। অথচ ৭ জন ভোটার ইতোপূর্বে মারা গেছেন। যার প্রমাণপত্রও লিখিত অভিযোগের সাথে সংযুক্ত করা হয়। এছাড়া ৩ জন ভোটার (তারা স্কুল শিক্ষক) অন্যত্র নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে থাকার কারণে ভোট দিতে পারেননি। এই কেন্দ্রের ভোটার বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের রুমানা আহমেদ ক্যাপ্টেন হিসেবে আফ্রিকা অবস্থান করায় ভোট দিতে পারেননি। আরও ২ জন ভোটার বিদেশে অবস্থান করায় ভোট দিতে পারেননি।

এ প্রসঙ্গে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক হিলটন বলেন, ৯৯.৭৮ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন, এ বিষয়টি নজিরবিহীন এবং অস্বাভাবিক। নির্বাচন কমিশনে সাত জনের নাম উল্লেখ করা হলেও এ রকম শতাধিক ব্যক্তি পাওয়া যাবে যারা মৃত, বিদেশে অবস্থান করছেন কিংবা চাকরির কারণে এলাকার বাইরে রয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেবেন বলেও জানান।

ফারুক হিলটনের লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, নয়বাটি জনকল্যাণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাওলানা ভাষানী বিদ্যাপিঠ (গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ) স্কুল ভবন দ্বিতীয় তলা ভোট কেন্দ্রে একই চিত্র পরিলক্ষিত হয়। ভোট গননার সময় দেখা গেছে ওই কেন্দ্রের প্রায় ৪ হাজার ৫০০টি ব্যালটে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার কোনো স্বাক্ষর নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি মৌখিকভাবে ও লিখিত অভিযোগ দিয়েও সুফল পাননি। তিনি অভিযোগ করায় প্রশাসনের সামনেই প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী তালাত হোসেন ও তার ভাই-চাচা দলবল নিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন।

এছাড়া তিনটি কেন্দ্রে প্রদত্ত ভোট দেখানো হয়েছে ৯৯.৭৮ শতাংশ, ৯৭.৬০ শতাংশ ও ৮৭.৫৭ শতাংশ। যা কেনো অবস্থায়ই বাস্তব সম্মত হতে পারে না। তাছাড়া সমগ্র সিটি করপোরেশনে কাস্টিং ভোট ৬২ শতাংশ, এই তিনটি কেন্দ্রে কাস্টিং ভোট এতো বেশি, যা কোনো অবস্থায় সম্ভব নয়। নয়াবাটি জনকল্যাণ স্কুল কেন্দ্রের জানালার পাশে কিছু কাটা ছেড়া ব্যালট দেখা যায় বলেও হিল্টন জানান।

এ ব্যাপারে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ ইউনুচ আলী বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর জমা দেয়া একটি অভিযোগের অনুলিপি তাকেও দেওয়া হয়েছে। এখন আর এ বিষয়ে তার তদন্ত করার কোনো এখতিয়ার নেই। নির্বাচন কমিশন তদন্ত করবে কিনা সে বিষয়ে কমিশনই সিদ্ধান্ত নেবে।

নব-নির্বাচিত কাউন্সিলর কাজী তালাত হোসেন কাউট দাবি করেন, ১০ নং ওয়ার্ডের সব কেন্দ্রেই সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে। কোনো অনিয়ম বা কাউকে লাঞ্ছিত করা হয়নি।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.