খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার করেছেন : মির্জা ফখরুল

ঢাকা প্রতিনিধি: শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিথ্যাচার করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
যুক্তরাষ্ট্রের ভয়েস অব আমেরিকায় সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে আজ শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এক ‘শ্রমিক-কর্মচারী কনভেনশনে’ বিএনপির মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে শেখ হাসিনা কিছু কথা বলেছেন। সেখানে তিনি সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করেছেন। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির মামলা নেই। যে টাকা তারা বলে ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা সেই টাকা এখন ৮ কোটির ওপরে চলে গেছে… ব্যাংকে জমা আছে। শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়া যাতে রাজনীতি করতে না পারেন তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে।
এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার সংকটজনক অবস্থার জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার তাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রেখেছেন। তাকে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা, ৪৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার একটা ভয়াবহ দানবের সরকার, লুটেরা সরকার, বর্গীদের মতো সরকার। এরা সম্পদ বিদেশে পাচার করে বাড়ি-ঘর বানাচ্ছে। আর আমার দেশে মানুষ অসহায় ও অভুক্ত থাকছে।
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, এই রাষ্ট্র পরিবর্তন করতে হবে, এর কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। আমরা সমস্ত রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একদফার আন্দোলন করছি। শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং জনগণের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে হবে।
শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই শ্রমিক শ্রেণিই অতীতে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। আমি বিশ্বাস করি এবারও শ্রমিকরা ভূমিকা পালন করবে।
মতিঝিলে আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের সামনে সড়কে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের যৌথ উদ্যোগে ‘দ্রব্যমূল্য, মজুরি কমিশন, জাতীয় বেতন স্কেল, ন্যূনতম মজুরি, শ্রমিক পরিস্থিতি ও সরকার পদত্যাগের একদফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ কনভেনশন হয়। কনভেনশনে ২০টি সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
এটি দ্বিতীয় শ্রমিক-কর্মচারীদের কনভেনশন। এর আগে স্বৈরাচার এরশাদের পতন আন্দোলনের সময়ে প্রথম কনভেনশন হয়েছিল।
জেএসডির আ স ম আবদুর রব বলেন, অনেকে আল্টিমেটাম দিচ্ছে, আমাদের রাস্তায় নামতে দেবেন না। আমরা কিন্তু এখনো আল্টিমেটাম দেয়নি। যখন দেব তখন পরিস্থিতি কী হবে জানি না। তবে আপনারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। জনগণ ধরলে কেউ রক্ষা পাবেন না।
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই সরকার নড়বড় করতেছে। দেশে-বিদেশে কোথাও তারা জায়গা পাচ্ছে না। সকলে মিলে আমরা জোরছে একটা ধাক্কা দিলে এই সরকারের পতন হবে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আপনারা ভালো আছেন? জানি ভালো নেই। আপনারা যাতে ভালো থাকতে পারেন সেজন্য আজকের এই কনভেনশন।
আর দেশের জনগনের পেটে ভাত নাই। আর আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীর ছেলের বাড়ি ভার্সিনিয়াতে। ৩০ একর জমি নিয়ে গলফ মাঠ দিয়ে সেই বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। বুঝেন এই লুটেরা সরকারের নমুনা।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন এই সরকার ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে। এটা আর মেনে নেওয়া হবে না। রাজপথের আন্দোলন জোরদার করে এদের পতন ঘটাতে হবে।
শ্রমিক-কর্মচারী কনভেনশন আয়োজন কমিটির সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করিম মজুমদার ও মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় কনভেনশনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, ভাসানী অনুসারি পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের ফয়জুল হাকিম লালা, জাতীয় শ্রমিক জোটের মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের আশরাফ আলী আকন্দ, শ্রমিক ফেডারেশনের শাহ মো. আবু জাফর, বিএনপির মজিবুর রহমান সারোয়ার, আবদুস সালাম আজাদ, হুমায়ুন কবির খান, ফিরোজ-উজ জামান মোল্লা, আমিনুল হক, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, সুমন ভুঁইয়া, শাহ আলম রাজা, সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের এ এম ফয়েজ হোসেন বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মো: মাসুদ রানা খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.