ক্রিপ্টো কারেন্সির ফাঁদে জড়াচ্ছে বেলকুচির তরুণ যুবকরা

বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: অনেকেই জানে না ক্রিপ্টো কারেন্সি বা বিট কয়েন কি এবং কাকে বলে? কিন্তু অন্যেদের কথায় প্রভাবিত হয়ে এবং লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখে এখন অনেক তরুণ কিপ্টো কারেন্সির ফাঁদে জড়াচ্ছেন। ঘরে বসে খুব সহজে রোজগারের নেশায় পড়ে ক্রিপ্টো কারেন্সির ফাঁদে পড়েছেন বেলকুচির বেশ কিছু যুবক। বিনা পরিশ্রমে খুব সহজে আয় করার লোভে ডিজিটাল মুদ্রা বাজারে বিনিয়োগ করে এখন ঝুঁকিতে রয়েছে অনেকে।
যুব সমাজ খুব সহজে রোজগারের নেশায় পরে হয়তো ক্রিপ্টো কারেন্সি বা বিট কয়েনে বিনিয়োগে ঝুঁকছেন। কিছু যুবক জুম এ্যাপের মাধ্যমে আবার অনলাইনে বিট কয়েনে বিনিয়োগের জন্য প্রশিক্ষণও নিচ্ছেন অধিক রোজগারের আশায়। কিন্তু এমন প্রশিক্ষণ নিয়ে লোভে পরে সর্বস্ব হাড়ানোর ব্যাপক ঝুঁকি রয়েছে।
অর্থনীতিবিদদের ভাষায় এটা এক ধরনের জুয়া খেলার মতো, যার ভিত্তিতে টাকা খাটিয়ে লাভজনক কিছু করা যেতে পারে। সেজন্য অনেক মানুষ আকৃষ্ট হচ্ছে। যদিও বাস্তবে এটার কোন অস্তিত্ব নেই, তথাপিও ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রোগ্রামিং করা আছে যেটা চাইলে ক্রয় করা যায়। ইন্টারনেট সিস্টেমকে কাজে লাগিয়ে কিছু ব্যক্তি এটা গড়ে তুলেছেন।
বেলকুচি পৌর এলাকার এক যুবক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নোমান (ছদ্মনাম) তিনি জানান, আমি কিছুদিন যাবৎ এখানে কিছু টাকা বিনিয়োগ করেছি কিন্তু মার্কেটে বিট কয়েনের মূল্য সবসময় ওঠানামা করে এখন পর্যন্ত লাভ লস মিলে গড়ে সমতায় রয়েছি। তবে আমি জুম এ্যাপের মাধ্যমে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছি।
সরকার ডিজিটাল কারেন্সি নিষিদ্ধ করতে পারে ইতিমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে সারা দেশে বেশকিছু ক্রিপ্টো ক্রেতা বিক্রেতা বিপাকে পড়তে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে বলেছে, ভার্চুয়াল মুদ্রা কোন দেশের বৈধ কর্তৃপক্ষ ইস্যু করে না, বিধায় ইহার বিপরীতে আর্থিক দাবির কোন সুযোগ নেই। ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেনে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন সম্পর্কিত আইনের লঙ্ঘন হতে পারে বলে স্পষ্ট বাংলাদেশ ব্যাংক সতর্ক করে দিয়েছেন।
বাংলাদেশের একজন অর্থনীতিবিদ আহসান মনসুর ইতিমধ্যে বিটিসি নিউজকে বলেন, এখন বিট কয়েনের পেছনে অনেকেই বিনিয়োগ করছেন আরও বেশি টাকার লক্ষ্যে। এ ক্ষেত্রে হঠাৎ করে এসব লোকেরা মার্কেট থেকে সরে গেলে অনেকেই বিপদে পড়বেন।
বিট কয়েন বা ক্রিপ্টো কারেন্সির বিষয়ে আমাদের যুব সমাজকে আগে থেকেই সতর্ক না করলে হয়তো শুধু বেলকুচি নয় এ দেশের অনেক যুবক ক্রিপ্টোর ফাঁদে পরে সর্বস্ব হারাতে পারে। ক্রিপ্টো কারেন্সি শেয়ার বাজারের চেয়েও ঝুঁকি বহুল বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল। এক শ্রেণির মানুষ হয়তো প্রলোভন দেবে যে এখানে বিনিয়োগ করো অনেক লাভ! কিন্তু সহজে ও অল্প সময়ে লাভের যে প্রবণতা থেকে মানুষ লটারি বা জুয়া খেলেন, সেই প্রবণতা থেকেই বিট কয়েন বাণিজ্য বাড়ছে।
স্থানীয় এক অভিবাবকের নিকট জানতে চাইলে তিনি, বিট কয়েন বা ক্রিপ্টো কারেন্সি কি? এটা সম্পর্কে আমার কোন ধারণাই নেই। তবে আমাদের ছেলে মেয়েরা যেন কোন প্রতারণার চক্করে না পরে সে ব্যাপারে সকলকেই সচেতন হতে হবে বলে জানান। লোভনীয় বিজ্ঞাপনের মোহে পরে তরুণরা বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে ক্রিপ্টো কারেন্সির প্রতি। তারপর একদিন দেখা যাবে ভার্চুয়ালের চক্করে পরে হারিয়ে যাবে অনেক কিছু কিন্তু সেদিন কিছুই করার থাকবে না। তাই সবাইকে এখন থেকেই এ ব্যাপারে সজাগ হতে হবে, যাতে কেউ প্রতারণার শিকার না হয়।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি এম মুছা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.