ক্যাপসিকাম চাষে বাজিমাত যুবকের ইন্টারনেটে দেখে উদ্বুদ্ধ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: প্রথমে ইন্টারনেট ও ইউটিউবে দেখেই ক্যাপসিকাম চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্যাাপসিকাম চাষ শুরু করেন বেকার যুবক রিপন হোসেন ওরফে জিয়াউর রহমান। উচ্চফলনশীল জাতের ক্যাপসিকাম চাষ করে চমক দেখিয়ে বাজিমাত করেছেন তিনি।
তাই পরবর্তীতে ব্যাপকভাবে ক্যাপসিকাম চাষ করবেন বলেও জানান ওই যুবক। কৃষিবিভাগ বলছেন কুড়িগ্রাম জেলায় এবারই প্রথম ক্যাপসিকাম চাষ হয়েছে এই উপজেলায়। উচ্চমূল্যের ফসলটির আর্থিক সম্ভাবনার কথা জানিয়ে চাষীদের উৎসাহ দিচ্ছে কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। জিয়াউরকেও সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন তারা।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের ভাঙ্গামোড় এলাকায় জিয়াউর রহমানের ক্যাপসিকামের বাগান ঘুরে দেখা যায়, জমিতে শেড করা শত শত গাছে ঝুলে আছে লাল, ও সবুজ রঙের ক্যাপসিকাম। পরিচ্ছন্ন বাগানজুড়েই পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে ফলটি। ফসলের ক্ষেতে কাজ করছেন কয়েকজন কর্মী। বাইরে থেকে আসা ব্যবসায়ী তুলছেন এসব ক্যাপসিকাম। নিজেও তুলছেন জিয়াউর। আরেক কর্মী ক্যাপসিকাম তুলে বস্তায় ভরছেন।
জিয়াউর রহমান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জাানান, আগে বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াতেন তিনি, পরে ইন্টারনেট ওইউটিউবে ক্যাপিসাম চাষ এবং এই চাষাবাদে লাভবান হওয়ার গল্প দেখেই উদ্বুদ্ধ হন তিনি। পরে ৫০ শতক জমি লিজ নিয়ে কৃষি বিভাগের পরামর্শে উন্নত জাতের বীজ সংগ্রহ করে শুরু করেন ক্যাপসিকাম চাষ। চাষাবাদের মাত্র ৩ মাসেই লাভের মুখও দেখেন তিনি। হাল চাষ, সার, কৃষি শ্রমিকসহ সবমিলে তার খরচ হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আর এ পর্যন্ত বিক্রি করেছেন ২ লাখের উপর। আরও লক্ষাধিক টাকার ক্যাপসিকাম বিক্রি করতে পারবেন বলেও জানান জিয়াউর।
উচ্চ ফলনশীল এই ক্যাপসিকাম চাষে অধিক লাভের কারণে পরবর্তীতে ১ একর জমিতে চাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। তিনি বলেন, এই ফসলে অত্যন্ত লাভজনক। বিক্রিও সুবিধার। রংপুর এমনকী ঢাকা থেকে পাইকাররা এসে ফসল তুলে ন্যায্য দাম দিয়েই নিয়ে যায়। এটি সবজি এবং সালাদ হিসেবে খাবারের জন্য স্থানীভাবে হোটেলগুলোতেও নিয়ে যায় এবং বাজারেও খুচরা বিক্রি হচ্ছে। তাই বিক্রির টেনশেনও করতে হয় না। সে কারণে বেকার যুবকরা অযথা ঘোরাফেরা না করে এরকম ব্যাতিক্রম ফসল চাষাবাদ করে লাভবান হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।
রংপুর থেকে আসা ক্যাপসিকাম ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, প্রথমদিকে এই ক্যাপসিকাম ৮শ টাকা কেজিতে বিক্রি হতো। পরে নেমে আসে ৪শ টাকায় এখন ৫০ থেকে ৮০টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। আর এখানকার ফসলটি ভালো হওয়ার কারনে তিনি এখান থেকেই ক্যাপসিকাম কিনে নিয়ে রংপুরসহ ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করেন। তবে এই এলাকয় প্রচুর পরিমানে এই ফসল চাষাবাদ করা সম্ভব এবং এটি চাষ করলে অনেক লাভবান হতে পারবেন এখানকার কৃষকরা।
জিয়াউরের এমন সাফল্যে ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন আশপাশের গ্রামের চাষীরাও। আক্তার হোসেন ও মফিজুল ইসলাম নামে দুই কৃষক জানান ফসলটি অল্প জমিতে বেশি আবাদ করা যায়। কম খরচ ও অল্প পরিচর্যায় বেশি ফলন ও লাভের কারনে সবার মাঝে ক্যাপসিকাম চাষের আগ্রহ বাড়ছে। জিয়াউরের সাফল্য দেখে নিজেরাও এই ফসল চাষাবাদ করবেন বলেও জানান তারা।
উপজেলা কৃষি অফিসার রাজেন্দ্রনাথ রায় বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, কুড়িগ্রাম জেলায় এবারই প্রথম ক্যাপসিকামের চাষ করে খুব ভালো ফলন হয়েছে। উচ্চফলনশীল ক্যাপসিকাম চাষে সফলতা পেয়েছেন জিয়াউর। আশা করি, তার হাত ধরে ক্যাপসিকাম চাষে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হবেন। আর যে কেউ এই চাষাবাদ করলে কৃষি বিভাগ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মো. হাফিজুর রহমান হৃদয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.