কুয়াকাটা’র সিকদার রিসোর্ট থেকে চীনা প্রকৌশলী’র লাশ উদ্ধার
পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সিকদার রিসোর্ট এর ভবনের নিচ থেকে চাইনিজ কোম্পানীর সহকারী প্রকৌশলীর লাশ উদ্ধার করেছে মহিপুর থানা পুলিশ।
আজ সোমবার (১৫ জুন) রাত ৭টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। শেষ বিকেলে তার মৃত্যু হয় বলে ধারণা করছে পুলিশ। লী চ্যাং নামের ওই চাইনিজ সহকারী প্রকৌশলী পার্শ্ববর্তী জেলা বরগুনার তালতলীর কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন।
পার্সপোর্টের ঠিকানা অনুযায়ী নিহত লী চ্যাং চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের বাসিন্দা। তার পিতার নাম হেইলিং জিয়াং। মহিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
হোটেল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে মহিপুর থানার ওসি মো: মনিরুজ্জামান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, তালতলী পাওয়ার প্লান্টের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ওই চীনা নাগরিক সিকদার রিসোর্টের ছয়তলা ভবনের ছাদ অথবা কোন করিডোর থেকে অসতর্কতার কারণে পা পিছলে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যেতে পারেন। সুরাতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত ব্যাক্তি ওই রিসোর্টেই দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া থাকতেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সিকদার রিসোর্টে আরও বেশ কয়েকজন চীনা নাগরিক থাকেন যারা তালতলীর ওই পাওয়ার প্লান্টে কাজ করেন। তবে পুলিশের এই ধারনার সাথে স্থানীয়রা দ্বিমত পোষণ করেছেন। স্থানীয়দের ধারণা, তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তবে এটি হত্যা নাকি আত্নহত্য অথবা দূর্ঘটনা সেটা অনুসন্ধান করে খুজে বের করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
করোনার প্রাদুর্ভাবের এ সময়ে যেখানে পর্যটন কেন্দ্রর সকল হোটেল-মোটেল বন্ধ রয়েছে সেখানে সিকদার রিসোর্টে কীভাবে বোর্ডার থাকে এ প্রশ্ন রয়েছে এলাকাবাসীর।
স্থানীয়রা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানায়, লকডাউনে কুয়াকাটার সকল হোটেল মোটেল রিসোর্ট বন্ধ থাকলেও সিকদার রিসোর্ট অধিক ভাড়া আদায় করে চীনা নাগরিকদের সেখানে থাকতে দিয়েছে। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে এতদিন তারা এ ব্যবসা চালিয়ে আসছিল।
তবে এ অভিযোগ মানতে নারাজ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কলাপাড়া সার্কেল আহাম্মদ আলী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, গত ফেব্রুয়ারির আগ থেকেই চীনা নাগরিকরা ওই হোটেলে বসবাস করে আসছে। অন্য কোথাও থাকার পরিবেশ না থাকায় তারা ওখানে বসবাস করছে।
তিনি জানান, ছয়তলা থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হলেও পোষ্টমর্টেম রিপোর্ট ছাড়া নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। আর যদি আত্নহত্যা হয়েও থাকে তবে সেটা কেন কি কারণে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি জানান, কোন কিছুই আমরা হালকা ভাবে নিচ্ছি না, সবকিছুই খতিয়ে দেখা হবে পোষ্টমর্টেম রিপোর্টের উপর নির্ভর করে। এ ব্যপারে সিকদার রিসোর্টের ম্যানেজার ফয়সাল আহমেদের সাথে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি তার ব্যবহৃত ফোন রিসিভ করেননি। আর বিকেল থেকেই হোটেলের রিসিপশনের নাম্বার বন্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, কুয়াকাটা পৌরসভাসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই ক্ষমতার দাপটে কুয়াকাটা সাগড় পাড়ে ১৬ তলার টুইন টাওয়ার নির্মাণ করে আলোচিত হয়ে আসছে সিকদার রিসোর্ট।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর পটুয়াখালী প্রতিনিধি মো. নজরুল ইসলাম নজরুল। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.