কার্যক্রম নেই লালমনিরহাটে শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রের, অনুদানবঞ্চিত ৬০ হাজার শ্রমিক

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: দীর্ঘদিন ধরে কোনো কার্যক্রম নেই লালমনিরহাটের শ্রম কল্যাণকেন্দ্রের। ১২টি পদের মধ্যে মূলপদসহ ৭টিই শূন্য। এ কারণে সরকারি স্বাস্থ্য-আর্থিক অনুদানবঞ্চিত জেলার অন্তত ৬০ হাজার শ্রমিক।
জানা যায়, শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করতে ১৯৮৪ সালে কেন্দ্রটি শহরের কলেজ রোডে এক একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত হলেও এটি ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ব্যবহৃত হয় প্রশাসনিক ভবন হিসেবে। পরে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ব্যবহৃত ডায়াবেটিকস সমিতির কার্যালয় হিসেবে।
২০১০ সালে এসে এটি শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রে রূপ পায়। ১২টি পদের মধ্যে প্রধান পদ মেডিকেল অফিসার ও নার্সসহ সাতটি পদে লোক না থাকায় এটি অচল হয়ে রয়েছে এখনও। কোনো কর্মকাণ্ড না থাকায় কেন্দ্রের একজন লেবার অর্গানাইজার, একজন ডিসপেনশারি অ্যাসিস্ট্যান্ট, একজন ফার্মাসিস্ট, একজন অফিস সহকারী আর একজন নৈশ প্রহরীকে কাটাতে হচ্ছে অলস সময়। সারা দিন কাটে গল্পগুজব আর ক্যারম বোর্ড খেলে।
শ্রমিকরা জানান, সরকারি শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের খবর জানেই না অনেক শ্রমিক। আর জানবেই বা কেমন করে; কারণ কেন্দ্রটির নেই কর্মকাণ্ড, আছে শুধু ভবন আর কিছু জনবল। শ্রমিকদের কল্যাণে প্রতিষ্ঠিত সরকারি শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রটি শ্রমিকদের কোনো কাজে না আসায় জেলার শ্রমিকরা হতাশ। তাই শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে আর তাদের কল্যাণে সরকারি শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রটিকে সচল রাখতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তারা।
অফিস স্টাফ আনোয়ার পারভেজ ও আতিকুর রহমান জানান, মেডিকেল অফিসার ও নার্স না থাকায় কোনো শ্রমিক এ কল্যাণ কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না। তবে অন্য কার্যক্রম চালু রয়েছে।
লালমনিরহাট সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির বিটিসি নিউজকে জানান, শ্রম কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত কেন্দ্রটি পুরোদমে চালু রাখার একাধিক প্রতিশ্রুতি এলেও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আর শ্রমিকরাও বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের অধিকার থেকে। অথচ সরকার প্রতি বছর এই কেন্দ্রে কর্মচারীদের বেতন ও অন্যান্য খরচ মেটাতে গিয়ে ব্যয় করছেন কোটি কোটি টাকা। লালমনিরহাটে শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রটি বাস্তবে শ্রমিকদের জন্য কোনো কাজ করছে না। শুধু মাঝে মধ্যে কিছু শ্রমিককে নিয়ে সেমিনার করে যা লোক দেখানো।
রংপুর আঞ্চলিক শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের উপপরিচালক মো. সাদেকুজ্জামান বিটিসি নিউজকে জানান, মেডিক্যাল অফিসার ও নার্সসহ মোট সাতটি পদে জনবল না থাকায় শ্রমিকদের সেবা দিতে পারছে না কেন্দ্রটি। আশা করা যাচ্ছে, এসব সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বিটিসি নিউজকে বলেন, কেন্দ্রটির সমস্যাগুলো সমাধানে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.