কাদা-মাটি আর ধুলা-বালিতে চলাচলের ব্যাঘাত, বাগমারায় যত্রতত্র ট্রাক্টর উঠা নামায় সড়কের বেহালদশা


বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারার বিভিন্ন সড়কে মাটি পরিবহনে ব্যবহিত ড্রেজার মেশিন ও ট্রাক্টর উঠা-নামায় রাস্তাগুলো ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে পড়ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ এলাকার কিছু প্রভাবশালী অবৈধ পুকুর খনন ও ইট ভাটায় মাটি বহনে ট্রাক্টর গুলো যত্রতত্র ব্যবহারে সড়কের বেহালদশা খো দিয়েছে।
বিষয়টি প্রশাসনের নজরে দিলেও তেমন ব্যবস্থা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন। সড়কে ব্যক্তি স্বার্থে এলাকার কিছু প্রভাবশালীদের ট্রাকটার ঊঠা-নামায় রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে বিশাল আকৃতির গর্তসহ পুকুরের ধারী ভেঙ্গে চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সড়ক ব্যবস্থার অবকাঠামোতে নির্মাণ সড়কের সংরক্ষণের ব্যবস্থা না হলে অচিরে রাস্তা নষ্ট হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অভিজ্ঞমহল।
জানা গেছে, বাগমারা উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জ-কেশরহাট মূল রাস্তার মাথাভাঙ্গা ছাওয়ালকান্দা বিলে পুকুর খনননে এলজিইডি’র পাকা রাস্তাটির একাধিক ধারে ট্রাক্টর গাড়ী উঠা নামায় সড়ক ভেঙ্গে যাতয়াত সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। এছাড়া জেলা শহরের সংগে যোগযোগের ওই সড়ক ঘেঁষে অবৈধ পুকুর খননসহ বিলে মাছ ছাড়ার প্রবণতায় সড়কটি গিলে ফেলছে।
একই ভাবে পুকুর খননের বিক্রিত মাটি ট্রাক্টরযোগে এক স্থান হতে অন্যস্থানে নিতে অনবরত সড়কে পড়ছে কাদামাটি আর হচ্ছে ধুলা-বালি। বৃষ্টির সময় ট্রাক্টরযোগে পুকুর খকনের মাটি সরবরাহের সময় ওই রাস্তার উপর ট্রাক্টর থেকে মাটি ছিটকে পড়ে জমা আঠালো মাটি রাস্তায় ব্যাপকভাবে কর্দমাক্ততা সৃষ্টি হয়। ফলে সড়ক দিয়ে কোন ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করতে গেলে অধিকাংশ সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন যাত্রীরা।
রাস্তায় চলাচলকারী বালানগর গ্রামের জাবেদ আলী, আব্দুল হাকিম, মোহম্মাদপুর গ্রামের আব্দুস সোবহান, জোনাব আলী, সোহরাব হোসেনসহ এলাকার একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে জানান, প্রতি বছরই এলাকার প্রভাবশালীরা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে পুকুর খনন অব্যাহত রেখেছে।
গতকাল বুধবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের মাঝিগ্রামে রাস্তা ঘেঁষে একটি পুকুর সংস্কারের নামে চলছে মাটি বিক্রির ধুম। ওই রাস্তা দিয়ে ট্রাক্টরে করে মাটি পরিবহনের ফলে মাটি ছিটকে পড়ছে রাস্তায়। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই মাটিগুলো ধুলাবালিতে পরিনত হচ্ছে। মাটি নিয়ে বারবার ট্রাক্টর চলাচলের কারনে ওই রাস্তায় ধুলাবালিতে পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। দূরত্ব অনুযায়ী ৭০০-১২০০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে প্রতি ট্রাক্টর মাটি।
মাটি বিক্রয়ে লাভবান হওয়ার কারণে বিভিন্ন মহল ম্যানেজ করে মাটি বিক্রয় করে চলেছেন ইলিয়াস নামের ওই পুকুর মালিক। মাটি বিক্রয়ের বিষয়ে কথা বলতে গেলে সাংবাদিকদের সাথে খারাপ আচরণ করেন পুকুর মালিক। সেই সাথে কিছু করার থাকলে সেটা করতে বলেন।
এদিকে প্রভাবশালী হওয়ার কারনে সাধারণ লোকজন তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছেন না। অবৈধ ভাবে মাটি বিক্রয় করার কারনে রাস্তা দিয়ে চলাচল অনেক কষ্ট কর হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে দ্রুত পুকুরের মাটি বিক্রয় বন্ধ করতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকার লোকজন।
অন্যদিকে পুকুর মালিক ইলিয়াস আরো বিটিসি নিউজকে বলেন, আমি প্রশাসনের নিকট থেকে পুকুর সংস্কারের অনুমতি নিয়েছি। সংস্কারের নামে মাটি বিক্রয় করছেন কেন এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেননি তিনি। জোরপূর্বক রাস্তা নষ্ট করে মাটি বিক্রয় করে চলেছেন ইলিয়াস।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক সুফিয়ান বিটিসি নিউজকে বলেন, রাস্তা নষ্ট করে মাটি বিক্রয় করার কোন সুযোগ নেই। সাংবাদিকদের মাধ্যমে সড়কের ক্ষতির বিষয় জানতে পারলাম। কাজেই এ বিষয়ে খুব শিগগিরই খোঁজখবর নিয়ে সরকারী রাস্তা নষ্টকারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগমারা প্রতিনিধি মোঃ আফাজ্জল হোসেন / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.