করোনা চিকিৎসায় রাজশাহী বিভাগের ৭টি জেলায় পাচ্ছে ১২৫ আইসিইউ

বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহী বিভাগের ৪০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স করোনা সংক্রমণে মরণাপন্ন রোগীদের চিকিৎসায় পাচ্ছে ১২৫টি আইসিইউ। রাজশাহী বিভাগের সাত জেলায় যাচ্ছে এই সামগ্রী।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর সুত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোয় অন্তত একটি করে আইসিইউ বেড সংযোজন করা হবে। জেলার সদর হাসপাতাল গুলোতেও যাবে আইসিইউ বেড।
বর্তমানে যেসব হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধা রয়েছে, সেগুলোতেও বাড়বে বেড সংখ্যা। দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ বাড়তে শুরু করায় চিকিৎসা প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, করোনা চিকিৎসায় খোলা রয়েছে ১০টি ‘কভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল। এসব হাসপাতালে সব মিলিয়ে সাধারণ বেডে রোগী ভর্তি করা যাবে ৫৮১ জন। এছাড়া কভিড-১৯ আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসায় ১০টি হাসপাতালের মাত্র চারটিতে আইসিইউ বেড। এসব হাসপাতালে আইসিইউ বেডের সংখ্যা ৫১টি। বর্তমানে ১২ জন রোগী আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ২০টি আইসিইউ বেডের মধ্যে রোগী ভর্তি আছে সাতটিতে।
রাজশাহী বিভাগের করোনার হটস্পট হিসেবে বিবেচিত বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) ১৩টি, বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আটটি এবং টিএমএসএম হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ বেড রয়েছে। এর মধ্যে শজিমেক হাসপাতালে চার’জন এবং টিএমএস হাসপাতালে এক’জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এর’ই মধ্যে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল’সহ বিভিন্ন হাসপাতালে আরো ১৩৪টি আইসিইউ বেডের চাহিদা পাঠিয়েছে বিভাগীয় সাস্থ্য দপ্তর। নতুন করে শজিমেক হাসপাতালে ২০টি এবং রামেক হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ বেডের চাহিদা পাঠানো হয়েছে।
এছাড়াও রাজশাহীর নয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আধুনিক সদর হাসপাতালে ১০টি, সেখানকার চার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চারটি, নওগাঁ সদর হাসপাতালে ১০টি, জেলার ১০ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০টি, পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঁচটি, সিরাজগঞ্জের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ১০টি, জেলার আরো আট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০টি, বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে দুটি এবং জয়পুরহাট আধুনিক সদর হাসপাতালে ১০টি মনিটরসহ আইসিইউ বেডের চাহিদা পাঠানো হয়েছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিভাগের আট জেলাজুড়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুদ রয়েছে ১ হাজার ৮৪০টি। এছাড়া ৫২টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা, ৫১টি ভেন্টিলেটর এবং ১০৭টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মজুদ রয়েছে। তবে মজুদ বাড়াতে ১১৫টি ভেন্টিলেটরেরও চাহিদা পাঠানো হয়েছে অধিদপ্তরে। এর মধ্যে রাজশাহী জেলায় ২০টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৪, নাটোরে পাঁচ, নওগাঁয় ৩০, পাবনায় পাঁচ, সিরাজগঞ্জে ১২, বগুড়ায় সাত এবং জয়পুরহাটে ১২টির জন্য চাহিদা দেয়া হয়েছে। বিভাগজুড়ে অক্সিজেন সিলিন্ডারের চাহিদা পাঠানো হয়েছে ১০ হাজার ২৬১টি। এর মধ্যে নয় হাজার সিলিন্ডারের চাহিদা গেছে সিরাজগঞ্জের আট উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য।
অন্যদিকে বিভাগ জুড়ে রেমডেসিভির চাহিদা পাঠানো হয়েছে ৬৮ হাজার ৮৬৩ পিস। চাওয়া হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ৫ পিস কভারঅলসহ পিপিই, ২ লাখ ৮২ হাজার ১০৬ পিস এন-৯৫ মাস্ক, ৩০৪ পিস হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা, ৩৮৯ পিস অক্সিজেন কনসেনট্রেটর।
এদিকে করোনা সংক্রমণ শনাক্তে ব্যাপকহারে নমুনা পরীক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর। এর’ই অংশ হিসেবে বিভাগের চারটি পিসিআর ল্যাবের জন্য ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬০৪টি আরটি পিসিআর কিটের চাহিদা দেয়া হয়েছে।
এর মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবের জন্য ধরা হয়েছে ৭২ হাজার, রামেক হাসপাতাল ল্যাবে ৩০ হাজার, শজিমেক কলেজ ল্যাবে ৩৩ হাজার ৬০০ এবং সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ল্যাবের জন্য ৪০ হাজার।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.