এক মানবিক ইউপি চেয়ারম্যান

নাটোর প্রতিনিধি: গরিবের বন্ধু নিঃস্বার্থ সমাজ সেবক, জনদরদি হিসেবে ভোট চেয়ে বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নাটোর জেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই ১ জন করে প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিলেন।

তবে বর্তমানের করোনা সংকটে সেই জনদরদিদের অনেকের সাড়া শব্দ কম। অনেকে ফোনই ধরেন না। কারো কারো ফোন বন্ধ। অনেকে নিজ এলাকা ছেড়ে বাস করেন ময়মনসিংহ শহরের অট্টালিকাতে। কেউ কেউ ঘুম থেকে উঠেন সকাল ১০টা/১১টার দিকে।

তবে এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমধর্মী এক মানবিক চেয়ারম্যানের দেখা মিললো নাটোরের সিংড়া উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নে। তিনি হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক মেধাবী ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা এবং তাজপুর ইউনিয়নের পর পর দুইবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিনহাজ উদ্দীন ।

রাতের আধাঁরে জাতি বর্ণ ভুলে, কর্মহীন হয়ে পড়া ও সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়াতে সিংড়া  উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের গ্রামাঞ্চলের অভাবীদের ঘরে-ঘরে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলছেন একজন মানবিক ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিনহাজ উদ্দীন ।

করোনা সংক্রমণ রোধে কর্মহীন মানুষকে সহায়তা করতে প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে ইউপি চেয়্যারম্যান মিনহাজ উদ্দীন। ইউপি চেয়্যারম্যানের নেতৃত্বে ইউপি সদস্যরা তাদের ইউনিয়নে বাসিন্দাদের করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্ত রাখতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন।

শুধু তাই নয়, করোনার প্রকোপে কর্মহীন হয়ে পড়া হতদরিদ্র পরিবার গুলোকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার স্বরূপ ত্রাণ সামগ্রী হতদরিদ্রদের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। আবার অনেকের ফোন পেয়ে ইউপি চেয়্যারম্যান অধ্যাপক মিনহাজ উদ্দীন ছুঁটে যাচ্ছেন সেখানে এবং পৌঁছে দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী। ইউনিয়নবাসীকে ভালো রাখতে করোনা সংক্রমণের ভয়কে তুচ্ছ করে  প্রতিনিয়ত ছুঁটে চলেছেন এলাকার বাসিন্দাদের কল্যাণে।

তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিহাজ উদ্দীনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ প্রশংসা পাচ্ছে সাধারণ মানুষের। তিনি নিজের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। পৌঁছে দিচ্ছেন মাস্ক, সাবান, হ্যান্ড সেনিটাইজারসহ নানা উপকরণ। নিজের ব্যক্তিগত টাকায় এই কাজগুলো করছেন তিনি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গ্রামের আনাচে কানাচে ঘুরে লোকজনকে ঘরে অবস্থান করতে দিচ্ছেন পরামর্শ। কিভাবে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে, সেই সচেতনতার কথাগুলোও সেখানে বলছেন তিনি।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের আতঙ্কে সবাই যখন ঘরে বসে সময় কাটাচ্ছেন, ঠিক তখনই মধ্যবিত্তদের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। শরীরে পোশাক ভাল হলেও ঘরে খাবার নেই কর্মহীন মধ্যবিত্তদের। মুখ লজ্জ্বায় বলতে না পারা অভাবী লোকদের মনের ভাষা বুঝে প্রতিরাতেই খাদ্যসামগ্রী নিয়ে গ্রামাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষের ঘরের দরজায় হাজির হন চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিনহাজ উদ্দীন ।

সম্প্রতি এক সন্ধায় স্থানীয় মুদি ব্যবসায়ি  দোকান থেকে ক্রয় করে প্রতিদিন রাতের আধাঁরে খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন অধ্যাপক মিনহাজ উদ্দীন । সে অনুসন্ধান করতে, পিছু নিলাম তার। দেখতে পেলাম এক মানবতা ও মানবসেবার অতুলনীয় দৃশ্য।

নাম প্রকাশ না করে, তাজপুর ইউনিয়নের প্রায় গ্রাম থেকেই মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের কয়েকজন জানালেন মিনহাজ উদ্দীন রাতে তাদেরকে বাসায় গিয়ে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে খাদ্যসামগ্রী দিয়ে আসছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিনহাজ উদ্দীন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। লোক দেখানো বা ফটো সেশন করার কি আছে। দেশের দু:সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোকে তিনি এবাদত মনে করি ।

৯ বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনে কোন প্রকার সুনাম ক্ষুন্ন হয়নি তার। বরং মানবিক একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন । উচ্চশিক্ষিত, ভদ্র, সদালপী, নিরহংকারী, সদাহাস্যমুখ মানুষ তাকে সবাই চেনে এবং জানে ।

করোনা ভাইরাস সংক্রমনের শুরুতেই জাতীয় সংসদের  নাটোর-৩ সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট জুনাঈদ আহমদ নির্দেশে এবং সহযোগিতায়  তার ইউনিয়নের প্রতিটি ইউনিয়নের অসখ্য পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী পৌছে দেন।

এছাড়া নগদ অর্থ সহায়তা তো রয়েছেই ।ইউনিয়ন পরিষদের তরুণ চেয়ারম্যান ব্যক্তি উদ্যোগে এলাকাবাসীর জন্য ছুটে বেড়াচ্ছেন দিন-রাত। নানা ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এলাকাবাসীর পাশে থাকছেন তিনি। পাশাপাশি করোনা সচেতনতায় নিয়েছেন নানা পদক্ষেপ। করোনা দুর্যোগে তরুণ ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিনহাজ উদ্দীনের মানবিক কাজগুলো প্রশংসিত হয়েছে পুরো উপজেলায় ।

স্থানীয় লোকজন বলছেন,  চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দীন সারা জীবনই মানুষের পাশে থাকা লোক। তিনি নিজে না খেয়ে মানুষকে খাওয়ানোর মত লোক। তাই তাজপুরবাসী ভালোবেসে তাঁকে দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু আগে থেকেই তিনি এর বিরুদ্ধে কিভাবে লড়তে হবে তা মানুষকে ঘুরে ঘুরে বলছেন।

স্থানীয়রা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, এ দুঃসময়ে অনেক জনপ্রতিনিধি কেবল নিজেকে নিয়ে ভাবছেন। কিন্তু তিনি নিজের কথা না ভেবে মানুষের পাশে থেকে সবাইকে নিয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছেন।

মাজেদা বেওয়া নামে এক বৃদ্ধা বলেন, ‘ছাওয়ালডা আছিলো বলে এই সময়ে দুইডা খ্যাতে পাচ্চি। না হলে খাওয়ার বেগারে মরি যাতুক।’

ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দীন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ‘এই বয়সে আমি দুইবার চেয়ারম্যান হয়েছি এটা জনগণের কাছে আমার বড় ঋণ। তারা না চাইলে আমি চেয়ারম্যান হতে পারতাম না। তাই এই বিপদে তাদের পাশে থেকে সেই ঋণ কিছুটা শোধ করার চেষ্টা করছি। এলাকায় করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক শুরু হওয়ার পর থেকেই আমি ছুটে বেড়াচ্ছি এ গ্রাম থেকে ওগ্রাম। মানুষের পাশে আছি। পাশেই থাকতে চাই। এই পরিস্থিতিতে তাদের পাশে থাকাটাই বড় দায়িত্ব বলে আমি মনে করি।’

এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২৫০০ টাকার আর্থিক সহায়তার উপকারভোগীর তালিকা নিয়ে যখন দেশব্যাপী নানারকম গুঞ্জন চলছে, ঠিক তখনই স্বচ্ছতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে প্রশংসায় ভাসছেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার ৯নং তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২৫০০ টাকার আর্থিক সহায়তার উপকারভোগীর তালিকা নিয়ে যখন দেশব্যাপী নানারকম গুঞ্জন চলছে, ঠিক তখনই স্বচ্ছতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে প্রশংসায় ভাসছেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার ৯নং তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিনহাজ উদ্দীন।

করোনা দুর্যোগে তরুণ ইউপি চেয়ারম্যান মিনহাজ এর নিরলস মানবিক কাজগুলো মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.