উজিরপুরে অসহায় পঙ্গু শিক্ষক পরিবারকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

 

উজিরপুর প্রতিনিধি:  বরিশালের উজিরপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে অসহায় পঙ্গু প্রবীন শিক্ষক পবিরারকে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে প্রতিপক্ষ ভুমিদস্যুরা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিপক্ষ ভুমিদস্যু সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে চরম আতঙ্কে পঙ্গু শিক্ষকের পরিবার।

উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের পূর্ব জয়শ্রী গ্রামের মৃত মন্নান হাওলাদারের ছেলে সোহাগ হাওলাদার(৩২) এর একই বাড়ীর চাঁচা বৃদ্ধ প্রবীন শিক্ষক আঃ বারেক হাওলাদার(৮৫) এর সাথে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিল। জানা যায় ৮৩নং জয়শ্রী মৌজায় খতিয়ান নং-২০০৫, দাগ নং- ১৩৭৬, মোট জমি-৭৬ শতাংশ জমি। এরমধ্যে ২৩ শতাংশ জমি দাবী করছে সোহাগ হাওলাদার। তবে স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ঐ জমি আঃ বারেক হাওলাদার দীর্ঘদিন যাবৎ ভোগদখল করে আসছে।

শিক্ষক পরিবারের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে জোরপূর্বক জমি দখলের মিশনে নেমেছে ভাতিজা সোহাগ হাওলাদার। উল্লেখ্য ২৭ আগষ্ট মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় ভূমিদস্যু সোহাগ হাওলাদার(৩২) ও তার স্ত্রী নুপুর বেগম(২৫) মিলে এক দল ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে ঐ জমি জোরপূর্বক দখল করতে যায়। এসময় জমির প্রকৃত মালিক আঃ বারেক হাওলাদার ও তার স্ত্রী হেনা বেগম, মেয়ে ইয়াসমিন বেগম, শিল্পি বেগম মিলে বাধাঁ দিলে তাদেরকে পিটিয়ে রক্তাক্ত যখম করে। এমনকি আহতদেরকে চিকিৎসার জন্য উজিরপুর হাসপাতালে যেতে বাঁধা প্রদান করে সোহাগ বাহিনীরা। কোন উপায়ান্তর না পেয়ে আহতরা গৌরনদি উপজেলার অশোকাঠী হাসপাতালে ভর্তি হয়।

এদিকে সুচতুর সোহাগ মারধরের ঘটনা ধামাচাঁপা দেয়ার জন্য তার লিঙ্গে সামান্য সুচ ফুটিয়ে এবং তার স্ত্রীর হাতে সামান্য আঘাত করে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে দুজনেই উজিরপুর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে শিক্ষকের পরিবারকে ফাঁসানোর জন্য ঘটনার দিন উজিরপুর মডেল থানায় স্ত্রী নুপুর বেগমকে দিয়ে বাদী করে ৪ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যাক্তি জানিয়েছে, সোহাগ এলাকায় মাদক, জুয়াসহ বিভিন্ন কুকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে থানায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। উভয় পক্ষের মধ্যে সালিশ মিমাংশার বৈঠকের দিন ধার্য হওয়ায় গত ৩ আগষ্ট বৃদ্ধ বারেক হাওলাদার ও তার স্ত্রী বৃদ্ধ হেনা বেগম(৬০) বরিশাল আদালতে জামিনের জন্য গেলে খবর পেয়ে সন্ত্রাসী সোহাগ হাওলাদার চিকিৎসার নামে উজিরপুর হাসপাতালে ভর্তি থেকেও তাৎক্ষনিক ভাবে আদালতে গিয়ে জামিনের বিরুদ্ধে নারাজি দেয়। বাদীর নারাজি দেয়ার কারনে হেনা বেগমকে আদালত হাজতে প্রেরন করেন বলে জানান শিক্ষকের পরিবার।

“প্রশ্ন রাখেন এলাকাবাসী” আহত ব্যাক্তি হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও কিভাবে বরিশাল আদালতে যাওয়া আসা করে আবার পূনরায় হাসপাতালে অবস্থান করে ? আরো জানা যায় প্রবীন শিক্ষক আঃ বারেক হাওলাদার একজন সৎ লোক। তিনি বর্তমানে পঙ্গুত্ব নিয়ে অসহায় অবস্থায় জীবন যাপন করছে। তার ৫ মেয়ে ও ১ ছেলে সন্তান রয়েছে।

এক মাত্র ছেলে অভাবের তাড়নায় বাবা-মা ও পরিবারে সদস্যদের জন্য দু মুঠো আহার যোগাতে ঢাকায় ক্ষুদ্র চাকুরি করেন। আয় উপার্জনের একমাত্র ভরসা ছেলের উপর পরিবারের সকল সদস্যদেরকে নির্ভর করতে হচ্ছে। অভাবের তাড়না নিয়ে কোনরকম জীবন যাপন করছেন শিক্ষকের পরিবার।

অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে প্রতিপক্ষ ভূমিদস্যুরা পঙ্গু শিক্ষকের পরিবারকে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানী করছে এবং তাদের ভোগদখলীয় জমি থেকে উৎখাতের পায়তারা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে সোহাগের কাছে প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান। ঐ ভুমিদস্যু প্রতারকদের নাটকের অবসান ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ ঐ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন অসহায় শিক্ষকের পরিবার।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর উজিরপুর প্রতিনিধি আঃ রহিম সরদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.