বিশেষ প্রতিনিধি:ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্র্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) এর উদ্যোগে বগুড়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শিত হচ্ছে জনসচেতনতামূলক নাটক মুখোশ।
বাংলাদেশ পুলিশের সন্ত্রাস দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের অর্থায়নে নাটকটিতে উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।
নাকটটিতে দেখানো হয়েছে- কিভাবে, কোন পরিস্থিতেতে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা গ্রহণ করে মানুষ উগ্রবাদের দিকে ধাবিত হয়। উগ্রবাদের উস্কানিদাতা বা জঙ্গি রিক্রুটাররা বিভিন্ন সংগঠনের নাম ধারণ করে, কিভাবে সমাজের মানুষদের আকৃষ্ট করে ভুল পথে নিয়ে বিপদগামী করে তুলে।
এছাড়াও একজন উগ্রবাদে বিশ্বাসী ব্যক্তির আচরণের মাঝে কী কী পরিবর্তন ঘটে এবং উগ্রবাদে জড়িত হওয়ার ক্ষেত্রে কারা ঝুঁকিতে রয়েছে তা নাটকটিতে ফুটে উঠেছে। ধর্মের আংশিক ব্যাখ্যা বা ভুল ব্যাখার বিপরীতে ধর্মের সঠিক ব্যাখা, আচরণ এবং সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে। ‘ইন্টার্যাকটিভ থিয়েটার‘ (পারস্পরিক যোগাযোগ) ধারণার প্রয়োগ ঘটানো হয়েছে নাটকটিতে।
এখানে উপস্থিত দর্শক নাটকের ঘটনার সাথে সরাসরি যুক্ত হতে পারছেন, প্রদর্শণকালীন গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রদান করে নাটকের গতি বা গল্পের মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছেন। কখনো কখনো দর্শক মঞ্চে উঠে অভিনেতায় পরিণত হচ্ছেন।
অভিনেতা ও দর্শকদের মধ্যে যৌথ মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে নাটকটির ঘটনা এগিয়ে যাচ্ছে যার ফলে দর্শক নিজেকে নাটকের ঘটনার অংশ মনে করছেন। নাটকের মাধ্যমে দর্শক সরাসরি ঘটনায় যুক্ত হতে পারছেন বলে উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের গবেষক ও সাবেক শিক্ষার্থীরা নাটকটির পরিবেশনায় যুক্ত আছেন। জায়েদ জুলহাসের রচনায় নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. আহমেদুল কবির। প্রদর্শনী বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় যুক্ত আছেন আহসান খান। ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার খন্দকার আরাফাত লেনিন নাটকটির প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
নাটকটির প্রদর্শন সম্পর্কে সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘শান্তি, সস্প্রীতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে উগ্রবাদী কার্যক্রম করে অশান্ত করার কোনো সুযোগ নেই। কেউ যাতে উগ্রবাদী আচরণ ও কর্মকান্ডে জড়িয়ে না পড়ে এবং দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটাতে না পারে সেই বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে এই নাটক প্রদর্শিত হচেছ।
নাটকটিতে অভিনয় করেছেন, আবে হায়াত সৈকত, অপূর্ব গোমস্তা, রফিকুল ইসলাম সবুজ তালুকদার, মনিরুজ্জামান রিপন, রাগীব নাঈীম, দিগার মোঃ কৌশিক, কামরুন্নাহার মুন্নি, দেবাশীষ কুমার, শুভ্র সরকার ও ইভানা মেঘলা।
বগুড়া জেলা পুলিশের সার্বিক সহযোগিতায় গত ৬-১০ মে, ২০২২ পর্যন্ত নাটকটি বগুড়ার বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শিত হয়েছ। এরপর ১১-১৫ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শিত হবে।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘উগ্রবাদ প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরিতে মাঠ পর্যায়ে এই নাটকের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সারাদেশে ব্যাপক ভিত্তিতে এরকম প্রদর্শনী আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
১১-১৫ মে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে নাটক প্রদর্শনীর স্থান ও সময়: ১১ মে, ভোলাগঞ্জ, বিকাল ৪-টা: ১২ মে, নাচোল, বিকাল ৪-টা: ১৩ মে, গোমস্তাপুর, বিকাল ৪-টা: ১৪ মে, শিবগঞ্জ, বিকাল ৪-টা: ১৫ মে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.