ঈশ্বরদীর সার্কেল অফিস ভবন নির্মাণে নিন্মমানের ইট ও রড ব্যবহারের অভিযোগ

পাবনা প্রতিনিধি:  ঈশ্বরদীর শহরের শেরশাহ রোড এলাকার সার্কেল অফিস ভবন নির্মাণে নিন্মমানের ইট ও রড ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ প্রশাসন।
এলাকাবাসী ও সার্কেল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির জন্য একটি নতুন তিনতলা ভবন নির্মাণ করছে পাবনা গণপূর্ত বিভাগ। এ জন্য ২ কোটি ৫৪ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫০ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। ওই কাজ পান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সাজিন কনস্ট্রাকশন।
এ ছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের গ্রিন সিটি আবাসনের কেনাকাটার অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত এ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে অর্থ ফেরত এবং আইনি ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রণালয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের তৃতীয় তলার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ হয়ে গেছে। সেখানে উপস্থিত কয়জন শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিটিসি নিউজকে বলেন, দরপত্র অনুযায়ী ছাদ ঢালাইয়ে এক নম্বর পিকেট ইটের খোয়া ও ৬০ গ্রেড মানের রড ব্যবহার করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু এর পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে স্যালট (আঁধা পোড়া) ইটের খোয়া ও ৪০ গ্রেড রড। এটা ইমারত নির্মাণ কোড পরিপন্থী। এতে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
স্থানীয়রা জানান, এখানে সরকারিভাবে পাঁচতলার চেয়ে উঁচু ভবন নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয় না। এই অবস্থায় সার্কেল অফিস ভবন নির্মাণে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। যা কিনা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া, নির্মাণে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ ভবন নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই পরিত্যক্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচছুক শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ চারিতায় জানা যায়, নির্মাণকাজে নিন্মমানের (৪০ গ্রেড) রড ও নিন্মমানের ইট ব্যবহার করছেন তারা। সঙ্গে আবার পুরনো ইট ও সিমেন্ট মেশানো হচ্ছে, যা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে পিলার। শ্রমিকরা বিটিসি নিউজকে জানান, ঠিকাদারদের নির্দেশে নিন্মমানের সামগ্রী দিয়েই তারা নির্মাণ কাজ চালিয়ে আসছেন। যা দেখার কেউ ছিলেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শ্রমিক বিটিসি নিউজকে বলেন, এর আগে আমি এত নিন্মমানের কাজ করিনি। একটি রড ও ইট ভালো মানের দেওয়া হয়নি। সব মিলিয়ে খুবই নিন্মমানের কাজ হচ্ছে এখানে।
তিনি আরও বলেন, ঠিকাদারেরা কাজ শুরুর সময় একবার এসেছিল। এরপর তারা আর তদারকি করতে এখনও পর্যন্ত আসেনি। সবকিছু কাজের মাঝিকে বুঝিয়ে দিয়ে গেছে।
নির্মাণ কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা মো. কোরবান মিস্ত্রি বিটিসি নিউজকে বলেন, এখানে ঠিকাদারেরা আমাদের যা দিতে বলেছে, আমরা তাই দিচ্ছি। সবাই ঠিকমতো কাজ করছে কিনা বা কোনও সমস্যা আছে কিনা, এটাই কেবল আমি তদারকি করছি। এর বাইরে অন্য কিছু আমি জানি না।
ওই সময় ঠিকাদার মোকসেদুল আলম নয়নকে সেখানে পাওয়া যায়নি। এক ব্যক্তি নিজেকে ঠিকাদারের ভাই পরিচয় দিয়ে বলেন, ঠিকাদার ব্যস্ত থাকায় আমি কাজ দেখাশোনা করছি। ছাদ ঢালাইয়ে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। নির্মাণাধীন ভবনের পাশে নিন্মমানের ইটের স্তূপ ও ইটের খোয়া প্রসঙ্গে বলেন, ইটভাটার মালিক ভুল করে কিছু নিন্মমানের ইট এখানে ফেলে রেখে গেছেন । এগুলো ফেরতৎ দেওয়া হবে। এত ধরলে কাজ করা যাবে না।
অভিযোগ প্রসঙ্গে মোকসেদুল আলম নয়ন এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বিটিসি নিউজকে বলেন ওই ভবনের ছাদ ঢালাইয়ে এক নম্বর পিকেট ইটের খোয়া, ৬০ গ্রেড মানের রড ও ভালো মানের সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। যাঁরা নিম্মমানের কাজের কথা বলছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য ভালো নয়।
এ বিষয়ে পাবনার গণপূর্ত সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী দেবাশীষ চন্দ্র সাহার কাছে জানতে চাইলে এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না বলে বিটিসি নিউজকে জানান।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর পাবনা প্রতিনিধি মো: ময়নুল ইসলাম লাহিড়ী মিন্টু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.