ঈশ্বরদীতে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণায় টাকা-পয়সার খেল হয়েছে : স্থানীয় এমপি


ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি: সম্মেলন, পূর্বঘোষণা বা আলোচনা ছাড়াই অগোচরে ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় পাবনা-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্যসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা মধ্যে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
পকেট কমিটি ঘোষণার ক্ষেত্রে টাকা-পয়সার খেল হয়েছে বলে স্থানীয় এমপি মন্তব্য করেছেন।
এঘটনায় ছাত্রলীগের সাধারণ নেতা-কর্মীরা মঙ্গলবার বিকেলে শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। তবে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কমিটি ঘোষণার আগে স্থানীয় এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করা হয়েছে জানালেও স্থানীয় এমপিসহ পাবনা জেলা ও ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা অগোচরে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার (০৫ মার্চ) পাবনা জেলা ছাত্রলীগের প্যাডে জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ আলী ও সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয় মেয়াদ উত্তির্ণ হওয়ায় পূর্বতন কমিটি বিলুপ্ত এবং সংগঠনকে গতিশীল ও বেগমান করার লক্ষ্যে ১ বছরের জন্য ছাত্রলীগের উপজেলা ও পৌর কমিটি অনুমোদন দেয়া হলো।
জেলা কমিটিতে মল্লিক মিলন মাহমুদ তন্ময়কে সভাপতি এবং খন্দকার আরমানকে সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কমিটিতে আবির হাসান শৈশবকে সভাপতি এবং মারুফ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এবিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করে এবং বিতর্কিত পরিবারের সন্তানদের নিয়ে যে কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়েছে, সেই বিষয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা এমনকি জেলা আওয়ামী লীগও অবগত নয়।
ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নায়েব আলী বিশ্বাস অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, গঠনতন্ত্রের অবমাননার সাথে সাথে জননেত্রী শেখ হাসিনার নিয়মকানুন, বয়সসীমা এবং বৈবাহিক অবস্থা সকল কিছুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ছাত্রলীগের যে পকেট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে ঐতিহ্যবাহী ছাত্রলীগ তিগ্রস্থ হবে। তিনি অবৈধ প্রক্রিয়ায় ঘোষিত কমিটি স্থগিত করে অবিলম্বে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি নির্বাচনের দাবী জানিয়েছেন।
ঈশ্বরদী-আটঘোরিয়ার সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, অবৈধ প্রক্রিয়ায় ঘোষিত কমিটি মানি না, মানি না, মানি না। স্থানীয় এমপি হিসেবে আমার সাথে কোন আলোচনা বা সম্মেলন না করে কমিটি ঘোষণা গর্হিত অপরাধ। যেভাবে কমিটি করা হয়েছে তাতে আওয়ামী লীগের সংগঠন ও নৌকার ভোট নষ্ট হবে। এই দালালি চলবে না, এখানে টাকা পয়সার খেল আছে বলে জানান তিনি।
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম লাল বলেন, কমিটি ঘোষণা আমি বা আমার সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি’র কোন পূর্ব অনুমতি নেয়া হয়নি এবং আমরা জানিও না। কমিটি ঘোষণার পরে সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপিকে জানিয়েছি বলে শুনেছি। তবে তিনি এর বিরোধিতা করেছেন এবং স্থানীয় এমপি’র সাথে কেন আলোচনা করা হয়নি এবিষয়ে প্রতিবাদও করেছেন।
এবিষয়ে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ও সাংগাঠনিকভাবে কমিটি ঘোষণার নিয়ম রয়েছে জানিয়ে বলেন,করোনা পরিস্থিতির ও রমজান মাসের কারণে জেলা থেকে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এক বছর মেয়াদে ছাত্রলীগের কমিটি গঠিত হলেও আগের যে কমিটি ছিল, তার মেয়াদ চার বছর পার হয়েছে। স্থানীয় এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আলোচনা করেই এই কমিটি দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি মো: ময়নুল ইসলাম লাহিড়ী মিন্টু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.