ঈদ শেষ, এখনো আনন্দের রেশ গংগাচড়া শেখ হাসিনা সেতুতে

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ  মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসবের অন্যতম ঈদুল আজহা। ঈদ শেষ হয়েছে বেশ কদিন, কিন্তু ঈদের পুরো আমেজ এখনো রয়ে গেছে শেখ হাসিনা সেতুতে।  গতকাল শনিবার, ১৭ আগস্ট সেতু এলাকার এরকম একটি চিত্রই চোখে পড়ে।
ঈদের দিন থেকে সব বয়সী মানুষের ভিড় জমছে সেতুর উপরে, সেতুর দুই পাড়ে। তবে এদের মধ্যে বেশিরভাগই তরুণ-তরুণী। সেতু সংলগ্ন তিস্তার দুই তীরে মা-বাবার হাত ধরে শিশুরা, দলে দলে যুবক যুবতিরা ঘুরছে মনের উল্লাসে। চারদিন আগে ঈদ শেষ হলেও এখানকার পর্যটকের সংখ্যা কমেনি একটুও।
সেতু এলাকায় ঘুরতে আসা পর্যটকেরা কিছুক্ষণের জন্য  আনন্দের রাজ্যে হারিয়ে যাচ্ছেন। সেতু সংলগ্ন রাস্তার দুপাশে সারি সারি নানা প্রজাতির গাছ-গাছালির সমারোহ। পানি আর সবুজ মিলে সে যেন এক অন্য রকম অপরূপ দৃশ্য। এখানে দাড়িয়ে সীমাহীন তটরেখায় অনেকেই সমুদ্র সৈকতের স্বাদ নেন।
কেউ পরিবারের সদস্য নিয়ে, কেউ বন্ধুদের নিয়ে, অনেকে আত্মীয়স্বজন নিয়ে আসার পাশাপশি প্রেমিক জুটিও বিনোদনের জন্য আসছে এই সেতুতে। সেতুর উপর দাড়িয়ে সেলফি তোলা, সেতুর কার্নিশে বসে সুর্যাস্ত দেখা, দুই পারের বাধে ব্লকের উপর বসে আড্ডা দেয়া-এ যেন নিজেকে ভুলে যাওয়া আনন্দের অনুভূতি।
মন চাইলে সেতুর নিচে নেমে নৌকায় চড়ে কিছুক্ষন নদীর বুকে হারিয়ে যাওয়া। নদীর বুকে ভাসমান বিলুপ্ত আশির দশকের বেশ কিছু পাল তোলা নৌকা। সব মিলিয়ে ভালো লাগার সকল অনুসঙ্গই এখানে উপস্থিত। ভালো লাগতেই হবে। আপনার মন যতই বিষাদে পূর্ণ থাক- এখানে এলে আপনি আনন্দিত হবেন, হতেই হবে।
সূর্য ডোবার সাথে সাথেই সেতুর দু’ধারে মাথার উপরে জ্বলে উঠে হলুদ বাতি। সেতুর পরিবেশ-পারিপার্শিকতা যেন পাল্টে যায় মূহুর্তেই।  সেতু সংলগ্ন রাস্তার দু’ধারে নানা ধরনের খাবার, ফলমূল ও শিশুদের খেলনা সামগ্রীর অস্থায়ী দোকান। বিনোদনপ্রেমী মানুষের কারণে এসব দোকানে বিক্রিও বেশ ভালো।
গংগাচড়া এলাকার বাসিন্দা মনোয়ারুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে জানান, প্রাকৃতিক নির্মল বাতাসের স্বাদ নিতে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে গংগাচড়ার শেখ হাসিনা সেতুতে ঘুরতে এসেছেন তিনি। তিনি বলছিলেন, ‘সন্ধ্যায় গংগাচড়া সেতু এলে শীতল বাতাসে মন মুগ্ধ হয়ে যায়। তাই পরিবারসহ বেড়াতে এসেছি।’
বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে এসেছেন আকাশ। আকাশ বিটিসি নিউজকে জানান, ‘আমি কয়েক বছর ধরে ঈদ এলেই গংগাচড়া সেতু আর না হয় তিস্তা ব্রিজে বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে যাই। রাতের বেলা মায়াবী এই আলোতে  মনে হয় বিদেশের কোনো জায়গায় আছি। প্রশান্তিতে বুক ভরে যায়।’
আইনশৃংখলা বিষয়ে গঙ্গাচড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বিটিসি নিউজকে জানান, ‘গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতু এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সব সময় টহলরত অবস্থায় রয়েছে। কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটতে পারে আমরা তা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি।
আরো পরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো গড়ে উঠলে এই এলাকাটি একটি ভালো পর্যটন এলাকা হিসাবে গড়ে উঠতে পারে বলে জানালেন এখানে ঘুরতে আসা অনেকেই।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.