ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন: ৫ ছাত্রীকে ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কার ও হল প্রভোস্ট-টিউটরকে প্রত্যাহারের নির্দেশ

ইবি প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্মমভাবে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীসহ ৫ ছাত্রীকে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট ও টিউটরকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী ছাত্রীকে তিন দিনের মধ্যে যে কোনো হলে তার পছন্দ মতো সিট বরাদ্দ দিতে হবে। একই সঙ্গে বহিষ্কার হওয়া পাঁচ ছাত্রী কোনো একামেডিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না।বুধবার ১ মার্চ এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী গাজী মো. মহসীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
অভিযুক্ত ৫ ছাত্রী হলেন- শাখা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম, চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি ও ফিন্যান্স বিভাগের মুয়াবিয়া জাহান। চাঁর জন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন মঙ্গলবার হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ অন্তত ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পায় তদন্ত কমিটি। সর্বশেষ চারুকলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শারমিন আক্তার লিমার নাম অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছে। তবে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করছেন তিনি। এছাড়া ঘটনার জন্য দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট শামসুল আলম, হাউস টিউটর মৌমিতা আক্তার, ইশরাত জাহানসহ কয়েকজনের দায়িত্বে চরম অবহেলা রয়েছে বলে তদন্তে উল্লেখ করা হয়।
গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় হলের গণরুমে নবীন ছাত্রী ফুলপরীকে রাতভর র‌্যাগিং, শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরাসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি পৃথকভাবে তিনটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষ ও শাখা ছাত্রলীগ। এছাড়া হাইকোর্টের নির্দেশেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন।
এদিকে ইবি ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় গঠিত প্রতিটি তদন্ত কমিটি নির্যাতনের প্রমাণ পেলেও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর বিরুদ্ধে এখনো সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ছাত্রলীগ। তিনি এখনো ছাত্রলীগের কমিটিতে বহাল।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ইসলামী (কুষ্টিয়াবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নাজিম হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.