ইউএনওরা পাচ্ছেন শারীরিক-বাসভবনের নিরাপত্তায় ‘গানম্যান’

বিশেষ প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার পর দেশের ৪৯২টি উপজেলায় চার’জন করে মোট এক হাজার ৯৬৪ জন সশস্ত্র অঙ্গীভূত আনসার সসদ্যদের মোতায়েন করা হয়। এবার ইউএনওদের শারীরিক নিরাপত্তায় এক’জন পুলিশ (গানম্যান) এবং তাদের বাসভবনের নিরাপত্তায় তিন শিফটে ছয়জন করে ব্যাটালিয়ন আনসার মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
ইউএনওদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যদের জন্য নির্মাণ করা হবে ব্যারাক ও সেন্ট্রি পোস্ট। ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলা কমপ্লেক্সে এ ব্যারাক নির্মাণ করা হবে। এতে আনসার সদস্যরা থাকা-খাওয়া’সহ সব ধরনের সুবিধা পাবেন।
সরকারি দপ্তর সুত্রে জানা যায়, ইউএনওদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা থাকা-খাওয়া’সহ নানা সমস্যায় ভুগছেন। তাদের সার্বিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য সম্প্রতি একটি পরিকল্পনা করে বাংলাদেশ আনসার ও প্রতিরক্ষা বাহিনী। এরপর স্থানীয় সরকার বিভাগ চলতি বছরের গত (২৯শে মার্চ) প্রত্যেক ইউএনওর বাসভবনে আনসার বাহিনীর সদস্যদের জন্য ব্যারাক ও সেন্ট্রি পোস্ট নির্মাণে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয়ের অনুমোদন দেয়।
এই সকব আনসার সদস্যের বেতন-ভাতা ইউএনও কার্যালয় থেকে পরিশোধের জন্য গত (০১ এপ্রিল) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্নিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে মাঠ পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সব মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন। এসব দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তারা ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। তাই তাদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রদানসহ উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে বসবাসকারী সব কর্মকর্তার বাসস্থান ও অফিসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এ জন্য ইউএনওর সার্বক্ষণিক গানম্যান হিসেবে একজন পুলিশ সদস্য, ইউএনওর বাসভবন নিরাপত্তায় দু’জন করে তিন শিফটে ছয়জন ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরের নিরাপত্তার জন্য একজন পুলিশ ও তিনজন আনসার সদস্যের সমন্বয়ে তিন শিফটে মোট ১২ জন মোতায়েন করা হবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, সম্প্রতি হেফাজতের কর্মীরা ইউএনওদের বাসভবনে আক্রমণ করেছে। তাই এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিতে সংশ্নিষ্টদের বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তারা থানায় হামলা করছে। আবার ইউএনওর বাসভবন থেকে অনেক থানা দূরে হওয়ায় পুলিশ দ্রুত আসতে পারছে না। এ পরিস্থিতিতে আনসার সদস্যদের সব ধরনের প্রস্তুতি থাকার নির্দেশনা দেওয়ার জন্য ইউএনওদের বলা হয়েছে। ইউএনওদের নিরাপত্তায় ব্যাটালিয়ন আনসার ও গানম্যান মোতায়েনেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, হেফাজতের কর্মসূচি চলাকালে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ’সহ বিভিন্ন জায়গায় হামলা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেই জেলা প্রশাসকের বাসভবন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, থানা, ফাঁড়ি, ভূমি কার্যালয়’সহ ৩১টি সরকারি ও আধা-সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। একের পর এক চলমান পরিস্থিতিতে চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন দেশের উপজেলা নির্বাহী অফিসার’ (ইউএনও) গণ। এ জন্য সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোকে বিবেচনায় রেখে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মোতাবেক উপরোক্ত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.