আ’লীগ সংবিধানের বাইরে যাবে না, আলোচনার দুয়ার খোলা আছে : ওবায়দুল কাদের

 

ঢাকা প্রতিনিধিগতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপ শেষে গণভবন থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী তাদের যেভাবে যুক্তি দিয়েছেন তাতে মনে হয়েছে উনাদের অনেকেই কনভিন্স। ঐক্যফ্রন্ট চাইলে আবারও আলোচনা হবে। তবে আমরা সংবিধানের বাইরে যেতে পারবো না- এটাও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আলোচনার দুয়ার সব সময় খোলা থাকবে। তারা চাইলে আলোচনা আবারও হবে। প্রধানমন্ত্রী এও বলেছেন, সরকার নির্বাচনে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার পর সব দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা ঐক্যফ্রন্টকে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর থেকে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা একে একে গণভবনে প্রবেশ করেন। সংলাপে যোগ দেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও।

সন্ধ্যা ৭টার পর শুরু হওয়া গণভবনের ব্যাঙ্কুয়েট হলে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংলাপ চলে। এর মাঝেই নৈশভোজে অংশ নেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।

মোট ১০টি গাড়িতে করে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বেইলি রোডে ড. কামাল হোসেনের বাসা থেকে শান্তিনগর হয়ে গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন। প্রথমেই ছিল ড. কামালের গাড়ি, এরপর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যান্য নেতাদের গাড়ি।

সংলাপের জন্য ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে ১৬ জনের নামের তালিকা পাঠানো হয় আওয়ামী লীগকে। এর মধ্যে বিএনপির পাঁচ প্রতিনিধি হলেন, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও মির্জা আব্বাস।

তাদের সঙ্গে ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ও এস এম আকরাম; গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরী; জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন ও সহসভাপতি তানিয়া রব; ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মনসুর ও আ ব ম মোস্তফা আমিন এবং স্বতন্ত্র হিসেবে ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

সংলাপের আড়াই ঘণ্টা আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে শেষ মুহূর্তে যোগ করা হয় আরও পাঁচজনের নাম।

নতুন যোগ হওয়া পাঁচ জনের মধ্যে দু’জন বিএনপির ও তিন জন গণফোরামের। বিএনপির দুই নেতা হলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

অন্যদিকে, গণফোরামের তিন জন হলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান, অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিকুল্লাহ। তবে সংলাপে উপস্থিত হননি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই সংলাপে ১৪ দলীয় জোট থেকে ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল যোগ দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া অন্যরা হলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, মো. আবদুর রাজ্জাক, কাজী জাফর উল্যাহ, আবদুল মতিন খসরু, রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও জাসদের একাংশের সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.