আমাদের অনেকেই পার্টটাইম রাজনীতিবিদ : রিজভী

ঢাকা প্রতিনিধি: দলের প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আমাদের অনেকেই আছে যারা পার্টটাইম রাজনীতিবিদ, পার্টটাইম ব্যবসায়ী। কিন্তু খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ছিলেন ফুলটাইম রাজনীতিবিদ। নেতাকর্মী এবং জনগণের সঙ্গে একটা সংযোগ তৈরি হওয়ার ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি।
আজ বুধবার (১৭ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে এক দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ১০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
রিজভী বলেন, খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে এমনিতে মনে হবে একরোখা, নিজের নীতির প্রশ্নে অটল, আপোষ করে না। আবার তার সঙ্গে মিশলে মনে হবে একবারে তুলতুলে নরম মানুষ। এক-এগারোতে দুইজন সেনা অফিসার তার বাসায় গিয়ে পরিবারসহ হত্যার হুমকি দেন। তিনি ঠাণ্ডা মাথায় হজম করেন। পরদিন বেগম খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে বিএনপি গঠন করা হবে, সেখানে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের স্বাক্ষর করতে হবে। খোন্দকার দেলোয়ার হাসপাতালে ভর্তি হলেন, হাসপাতাল থেকে তিনি উধাও হয়ে গেলেন। এই যে অসাধারণ কৌশল একজন রাজনীতিবিদের। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ছিলেন এই ধরনের ধুব্রতি চরিত্রের একজন মানুষ।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমরা প্রতিদিন এই ধরনের গুণী রাজনীতিবিদদের হারাচ্ছি। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে হারালাম, বিগ্রেডিয়ার হান্নান শাহকে হারালাম। সবশেষ হারালাম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে। এই ধরনের মানুষ হারিয়ে আমরা কাদেরকে পাচ্ছি? আমরা পাচ্ছি পাপুলকে, খালেদকে, সম্রাটকে। এরা রাজনীতিবিদ? এই যে রাজনীতির অধঃপতন, এটা সরকার সৃষ্টি করেছে।
বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, গুণী মানুষের কদর নেই। মুক্তিযোদ্ধারা আজ লাঞ্ছিত হচ্ছে সরকারের কাছে। ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ স্বাধীনতার দিবস পর্যন্ত কোনো মিছিল মিটিং করতে দিবে না। এই গোটা সময়টাতে মানুষ র‌্যালি করবে, কেউ আলোচনা সভা করবেন। কিন্তু তারা সব বন্ধ করে দিলেন। আওয়ামী লীগ যে চেতনার কথা বলে তার সঙ্গে স্বাধীনতার কোনো সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক নেই বলেই তো ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ সব সভা সমাবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। এটাই তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী কাজ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ন্যায়, নীতি, সত্যের কোনো দাম নেই বলে অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন রিজভী।
মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকার কথা তুলে ধরে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, নিজের পরিবার পরিজন সন্তানের কথা চিন্তা না করে নিজের কমান্ডারকে হত্যা করে যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন, আর সেই জিয়াউর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ২৫, ২৬ মার্চ ব্যারিকেট দেয়া বাঙালিদের হত্যা করেছে। এটা শুধু মিথ্যায় নয়, এটা জলজ্যান্ত জঘন অপপ্রচার। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ন্যায়, নীতি, সত্যের কোনো দাম নেই।
বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদের সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য খোন্দকার আকরব হোসেন বাবলু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মোমাসুদ রানা খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.