আবারও জাজাই ঝড়, ফাইনালে জালমি

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: আগের ম্যাচের ধারা বজায় রেখে আবারও ব্যাটে ঝড় তুললেন হযরতুল্লাহ জাজাই। এই আফগান ওপেনারের সংগে যোগ দেন জনাথন ওয়েলস। এ দুজনের ঝোড়ো ফিফটিতে ইসলামাবাদকে উড়িয়ে দিয়ে পিএসএলের ফাইনালে চলে গেল পেশোয়ার জালমি।
গতকাল মঙ্গলবার (২২ জুন) রাতে আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় এলিমিনেটরে ইসলামাবাদ ইউনাইটেডকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারায় পেশোয়ার, ১৯ বল হাতে রেখেই।
ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ের এ ম্যাচে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন জালমি অধিনায়ক ওয়াহাব রিয়াজ। দলনায়কের সিদ্ধান্তকে আনন্দের সাথে স্বাগত জানান দলের বোলাররা, শুরু থেকেই চেপে ধরেন আগে ব্যাট কর‍তে নামা ইউনাইটেডদের।
জালমি বোলারদের ক্ষুরধার বোলিংয়ের সামনে অসহায় হয়ে পড়েন ইসলামাবাদের ব্যাটসম্যানরা। শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকা দলটি ৭৬ রান তুলতেই হারিয়ে ফেলে চার টপ অর্ডারকে। এর মাঝেই আউট হয়ে ফেরেন পালটা ঝড় তুলে প্রতিরোধ গড়া কলিন মুনরোও।
২৯ বলে ৭টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৪ রান করেন এই কিউই মারকুটে। তার বিদায়ের পর তো আরও অসহায় হয়ে পড়ে ইসলামাবাদ। ১১০ রানেই হারিয়ে ফেলে ৮টি উইকেট। যাতে দেড়শো করতে পারবে কিনা সেটা নিয়েই ছিল অনিশ্চয়তা।
কিন্তু সেই অনিশ্চয়তা দূর করেন পাকিস্তানের আলোচিত বোলার হাসান আলী। ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা হাকিয়ে নিজের বোলিংয়ের মতোই দ্রুত গতিতে করে ফেলেন ৪৬টি রান। তার ১৬ বলের তান্ডুবে ইনিংসে ভর করেই মূলত পৌনে দুইশ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর পায় শাদাব খানের দল। নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ইসলামাবাদ জড়ো করে ১৭৪ রান।
পেশোয়ার জালমির পক্ষে ২টি করে উইকেট তুলে নেন দলপতি ওয়াহাব রিয়াজ ও উমাইদ আসিফ। একটি করে উইকেট লাভ করেন মোহাম্মদ ইরফান, মোহাম্মদ ইমরান ও আমাদ বাট। তবে একটি উইকেট পেলেও ৪ ওভারে মাত্র ২১টি রান দিয়ে নিজেকে সবার নজরে আনেন দীর্ঘদেহী বাহাতি পেসার ইরফান।
ইরফানদের এমন বোলিংয়ের পর ইসলামাবাদের ওই চ্যালেঞ্জিং স্কোরকে সহজ লক্ষ্যে পরিণত করেন জালমি ব্যাটসম্যানরা। ব্যাট হাতে ঝড় তোলা হাসান আলীর পেস তোপে মাত্র ১৫ রানে কামরান আকমলকে (৮) হারালেও হযরতুল্লাহ জাজাই ও জোনাথন ওয়েলসের ব্যাটিং তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় শাদাব বাহিনীর বোলিং আক্রমণ।
মাত্র ৮৭ বলে তুলে ফেলে ১৪১ রান। যাতে জাজাইয়ের অবদান ৬৬। মোহাম্মদ ওয়াসিমের শিকার হওয়ার আগে ৪৩ বল মোকাবেলায় আফগান মারকুটে হাকান ছয়টি চারের সঙ্গে চারটি বিশাল বিশাল ছক্কা। কম যাননি তাকে যোগ্য সঙ্গ দেয়া জোনাথনও, খেলেন ৪৩ বলে ৫৫ রানের অপরাজিত ইনিংস।
৩২ বছর বয়সী এই অজি ব্যাটসম্যানের ঝোড়ো ইনিংসে ছিল পাচটি চারের সাথে তিনটি ছয়ের মার। তবে শোয়েব মালিকের মাত্র ১০ বলে ৩২ রানের ক্যামিও ইনিংসে চড়ে ১৯ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে ফাইনালে চলে যায় পেশোয়ার। পাচটি চারের সঙ্গে একটি ছক্কা হাকিয়ে দুর্দান্ত ওই ইনিংস খেলেন শোয়েব।
তবে ম্যাচ সেরার পুরস্কার গেছে জাজাইয়ের হাতেই। এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচেই সেরা খেলোয়াড় হলেন জাজাই। চলতি পিএসএলে চার ম্যাচে সুযোগ পেয়ে এক ম্যাচে ডাক মারলেও বাকি তিন ম্যাচেই ফোকাসটা নিজের দিকেই টেনে নেন জাজাই। পঞ্চাশের বেশি গড়ে (৬৪+৭৭+৬৬) মোট ২০৭ রান করেন ২৩ বছর বয়সী এই আফগান তারকা। ফাইনালেও নিজের এই ধারা বজায় রাখবেন বলেই প্রত্যাশা সবার।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার  (২৪ জুন) আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিবারাত্রির ফাইনালে মুলতান সুলতানের মুখোমুখি হবে জাজাইদের পেশোয়ার। আর এর মধ্যদিয়েই পর্দা নামবে এবারের পাকিস্তান সুপার লিগ তথা পিএসএল আসরের। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.