আটোয়ারীতে শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এর ৭২তম জন্মবার্ষিকী পালিত

আটোয়ারী (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ পুত্র মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক জগতের উজ্জল নক্ষত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এর ৭২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আটোয়ারী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আজ বৃহস্পতিবার (০৫ আগস্ট) সকালে উপজেলা পরিষদ ভবনের মুল ফটকের সামনে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
পরে উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্মৃতিচারণ মুলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু তাহের মোঃ সামসুজ্জামান। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে স্মৃতি চারণ করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ তৌহিদুল ইসলাম।
আরো স্মৃতি চারণ মুলক বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. মোঃ হুমায়ুন কবীর, ওসি (তদন্ত) দুলাল উদ্দীন, আটোয়ারী আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ এম.এ মান্নান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক, আটোয়ারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুশ প্রমুখ।
বক্তাগণ স্মৃতি চারণ মুলক বক্তব্যে বলেন, ১৯৪৯ সালের এই দিনে তদানীন্তন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে যখন শেখ কামাল জন্ম গ্রহন করেন,তখন বাংলার মানুষের মুক্তির আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভুমিকা রাখার কারণে বঙ্গবন্ধু থাকতে পারেননি পরিবারের সঙ্গে। অধিকাংশ সময় বাবাকে কাছে না পেলেও বাবার আদর্শ বুকে ধারণ করেই মাত্র ২৬ বছর বয়সে শাহাদত বরণ করেন শেখ কামাল।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে ঘাতকের নির্মম গুলিতে শহীদ হওয়ার আগে ছোট জীবনে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য অনেক অবদান রেখেছিলেন শেখ কামাল। ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ অনার্স পাশ করেন তিনি। বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য,সংস্কৃতি অঙ্গণে শিক্ষার অন্যতম উৎসমুখ ছায়ানটের সেতারবাদন বিভাগের ছাত্রও ছিলেন শেখ কামাল।
স্বাধীনতা উত্তর যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসুচির পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভগ্যোন্নয়নে সমাজ চেতনায় তাদের উদ্বুদ্ধ করনে মঞ্চ নাটক আন্দোলনের ক্ষেত্রে শেখ কামাল ছিলেন প্রথম সারির সংগঠক। ‘স্পন্দন’ নামে এক শিল্পগোষ্ঠী গড়ে তুলে ছিলেন শেখ কামাল তাঁর বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে।
এছাড়া তিনি ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। অভিনেতা হিসেবেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত শেখ কামাল শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি,বাস্কেট বল সহ বিভিন্ন খেলায় প্রচন্ড আগ্রহ রাখতেন।
তিনি উপমহাদেশের অন্যতম ক্রীড়া সংগঠক ও আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনি ক্রীড়া চক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি দেশীয় খেলার মানোন্নয়নে অক্লান্ত শ্রম দিয়ে অপরিসীম অবদান রেখেছিলেন। ছাত্রলীগের একজন নিবেদিত, সংগ্রামী ও আদর্শবাদী কর্মী হিসেবে ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করেন তিনি। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হয়ে মুক্তি বাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের
প্রধান সেনাপতি জেনারেল ও সমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শেখ কামাল।
বক্তাগণ বলেন, শেখ কামাল ছিলেন বাংলাদেশের আধুনিক ক্রীড়া ও সংস্কৃতি আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত। মহান মুক্তিযুদ্ধ, ছাত্র রাজনীতি, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড, খেলার মাঠ থেকে নাটকের মঞ্চ- সর্বত্র ছিল তাঁর উজ্জল উপস্থিতি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদত বরণের সময় তিনি সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের এম.এ শেষ পর্বের পরীক্ষা দিয়েছিলেন। শেখ কামালের অকাল মৃত্যুতে দেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে তো বটেই,রাজনীতিতেও এক অসামন্য ও অপুরনীয় ক্ষতি সাধিত হয়। পুস্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভায় বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ সহ গণমাধ্যম কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর আটোয়ারী (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি মোঃ লিহাজ উদ্দীন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.