অস্ট্রেলিয়া না নিউজিল্যান্ড, কার ঘরে আলো?

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: ফাইনালে শ্রীলংকাকে হারিয়ে ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। তিন বছর পর ঢাকায় সেই ভারতকে হারিয়ে ২০১৪ টি ২০ বিশ্বকাপ জেতে শ্রীলংকা। বিশ্বকাপের মঞ্চে ক্রিকেটের সবচেয়ে উর্বর ভূমি এশিয়ার দাদাগিরি সেখানেই শেষ।
ওয়ানডে ও টি ২০ মিলিয়ে টানা চারটি বিশ্বকাপ ফাইনালে নেই এশিয়ার কোনো দেশ। বিশ্বায়নের হাওয়ায় লাতিন আমেরিকাও যখন ক্রিকেট মানচিত্রে ঢুকে পড়েছে, এশিয়ান ক্রিকেট কী তখন উল্টো পথের যাত্রী?
উত্তরটা সময়ের হাতে তুলে দিয়ে নজর ফেরানো যাক এবারের টি ২০ বিশ্বকাপে। সহ-আয়োজক ওমানের শিক্ষা সফর শেষ হয়েছিল প্রথম রাউন্ডেই। ভারত, শ্রীলংকা, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের যাত্রা থামে সুপার টুয়েলভে।
এশিয়ার সবেধন নীলমণি হয়ে টুর্নামেন্টে টিকে ছিল শুধু পাকিস্তান। একমাত্র দল হিসাবে সুপার টুয়েলভে পাঁচ ম্যাচের সবকটি জেতা পাকিস্তানের দুর্দান্ত ফর্ম আশা জাগিয়েছিল, সাত বছর পর হয়তো এশিয়ায় ফিরবে বিশ্বকাপ ট্রফি।
কিন্তু গত পরশু দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ১৭৭ রানের কঠিন লক্ষ্য তাড়ায় ম্যাথু ওয়েডের ছক্কাবাজিতে পাকিস্তানকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ থেকে এশিয়ার বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
আগেরদিন প্রথম সেমিফাইনালে একই রেসিপিতে ইংল্যান্ডকে পাঁচ উইকেটে হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। দুবাইয়ে রবিবাসরীয় ফাইনালে দেখা হচ্ছে ভাসমান সাগরের দুই পারের দুই পড়শির। সেখানে যারা জিতুক না কেন, টি ২০ বিশ্বকাপ পেতে যাচ্ছে নতুন চ্যাম্পিয়ন।
টি ২০ বিশ্বকাপের আগের ছয় আসরে দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একবার করে শিরোপা জিতেছে ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড ও শ্রীলংকা। দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে ওঠা অস্ট্রেলিয়া ২০১০ আসরের ফাইনালে হেরেছিল ইংল্যান্ডের কাছে।
অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের এটা প্রথম টি ২০ ফাইনাল। টুর্নামেন্টের শুরুতে ফেভারিটের তালিকায় না থাকা দল দুটি সেমিতে উঠেছিল গ্রুপ রানার্সআপ হিসাবে। ফেভারিট তত্ত্বকে ভুল প্রমাণ করে শেষ পর্যন্ত তারাই নামছে শিরোপার যুদ্ধে।
ট্রান্স-তাসমান ফাইনাল অবশ্য এটাই প্রথম নয়। মেলবোর্নে ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েই এই সংস্করণে রেকর্ড পঞ্চম বিশ্বকাপ ট্রফি জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।
এবার তার বদলা নেওয়ার সুযোগ নিউজিল্যান্ডের সামনে। তবে যুদ্ধে নামার আগে রণসঙ্গীতের বদলে কাল ভ্রাতৃত্বের জয়গান গাইলেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার, ‘পরস্পরের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও বন্ধুত্বই দুই দলের সুসম্পর্কের ভিত। আমাদের দ্বৈরথের ইতিহাস অনেক সমৃদ্ধ। তাদের খেলা দেখে আমরা বড় হয়েছি।
গত কয়েক বছর ধরে যে ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলছে নিউজিল্যান্ড, এককথায় অসাধারণ। তাদের হারাতে গোটা আসরের মতোই সামর্থ্যরে শেষ সীমা ছুঁতে হবে আমাদের। আগে ব্যাট করি বা পরে, ভয়ডরহীন আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে হবে। পাকিস্তানের বিপক্ষে বা তার আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে ঠিক যেভাবে খেলেছি।’
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড যে ব্র্যান্ডের ক্রিকেটই খেলুক না কেন, বাস্তবতা হলো এশিয়ার মাটিতে আগামীকাল রবিবার (১৪ নভেম্বর) ফাইনালে এশিয়ার ভূমিকা নীরব দর্শকের। ফাইনালের টিকিট আগেই কেটে রাখা প্রবাসী এশিয়ানরা করতালি দেবেন কার জন্য? #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.