অভিভাবকের যোগসাজসে বাল্য-বিয়ের কোপানলে রিমার অকাল মৃত্যু
গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে অভিভাবকের যোগসাজসে বাল্যবিয়ের কোপানলে অকালে ঝড়ে গেল দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেধাবী রিমার জীবন।বিয়ের মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে এ মর্মস্পর্শী অকাল মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের দুবলাগাড়ী গ্রামে।
সরেজমিনে জানা যায়,দুবলাগাড়ী গ্রামের আব্দুল হালিম বাবলু ওরফে ডেসটিনি বাবলু হুজুরের ছেলে পলাশবাড়ী পলিটেকনিক্যাল ইনিস্টিটিউটের ২য়বর্ষের ছাত্র সাদেকুল ইসলামের সাথে একই ইউনিয়নের ভবানিপুর গ্রামের মন্টু মিয়ার মেয়ে বরিশাল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর মেধাবি শিক্ষার্থী রিমা আক্তারের(১৪) মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
এরই সূত্রধরে ঈদের একদিন পর গত ১৯ জুন সোমবার এলাকার কতিপয় টাউট প্রকৃতির উশৃঙ্খল যুবকগং অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে বাল্য প্রেমিক যুগলের প্রতি মিথ্যা অশালীন অভিযোগ এনে জোরপূর্বক বিয়ের ব্যবস্থা করে।
ওইদিনই রিমার বাড়ী পাশে বরিশাল ইউপি সদস্য রাজা মিয়ার বাড়ীতে একই ইউপি’র বিয়ে রেজিষ্ট্রি কাজী শাহ আলম আড়াই লাখ টাকা দেনমোহর উল্লেখ করে বিয়ে সম্পাদন করেন। এ ব্যাপারে বাবলু মিয়া বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন। ইউএনও বিষয়টি থানা অফিসার ইনচার্জ-এর উপর দায়ীত্বভার অর্পণ করেন।
গত রোববার সকালে রিমা ও সাদেকুল বাল্য দম্পতিকে থানায় হাজির করা হয়।ইউপি সদস্যসহ উভয় পরিবা- রের লোকজন তাদের সাথে ছিলেন।
এসময় ওসি তাদের প্রাপ্ত বয়স্ক পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত উভয়কে যার-যার বাড়ীতে অবস্থানের মাধ্যমে লেখাপড়া চালিয়ে যাবার পরামর্শ প্রদান পূর্বক তাদের স্ব-স্ব অভিভাবকের হাতে ন্যাস্ত করেন।
এদিকে রিমা’র মা ফরিদা বেগম তার অভিযোগে জানান,বাবা বাবলু মিয়ার কূ-পরামর্শে তার ছেলে সাদেকুল মঙ্গলবার সকালে তার মেয়ে রিমাকে তাদের বাড়ী নিয়ে যায়।পরদিন বুধবার সকালে রিমা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে খবর পান।সাদেকুলের পরিবার পরিকল্পিত জোরপূর্বক কীটনাশক বিষ পান করিয়ে অচেতন রিমার গলায় রশি পেঁচিয়ে শয়ন ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে রাখে।স্থানীয়রা কিছু বুঝে উঠার আগেই পরক্ষনই জীবিত অবস্থায় রিমাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোরে রিমা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা রিমার মরদেহ তার বাড়ীতে পৌঁছনি বলে জানা গেছে।
আহাজারি কান্নায় বিলাপরত হতদরিদ্র রিমার মা-ছোট্ট দুই ভাইসহ পাড়া-প্রতিবেশি ও আত্মীয়স্বজনরা মেধাবী রিমাকে অকালে হত্যার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু বিচার দাবী করেছেন।#
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.