নিজস্ব প্রতিবেদক: মহাপরিদর্শক নিবন্ধন অধিদপ্তরে তানোর সাব-রেজিস্ট্রার ও অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেন রাজশাহী জেলা মুসলিম নিকাহ্ রেজিস্ট্রার সমিতি। গত ১৩ মার্চ এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
অভিযোগের বরাত দিয়ে জানা যায়, রাজশাহী জেলা তানোর থানার সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে চলতি বছরের গত (২৩ ফেব্রুয়ারী) ১নং কলমা ইউনিয়নের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত-সহ সাব-রেজিস্ট্রার ও অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আবেদন করেছেন, রাজশাহী জেলা মুসলিম নিকাহ্ রেজিস্ট্রার সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক কাজী মোঃ আকবর আলী। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। “জেলা রেজিস্ট্রার নির্দেশ উপেক্ষা কাজীর অজ্ঞাত কারনে ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি সাব-রেজিস্ট্রার তানোর” সংবাদ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয় গত (২৮ ফেব্রুয়ারী) জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার-সহ একাধিক জাতীয় ও অনলাই নিউজ পোর্টালে।
প্রকাশিত সংবাদটি দৃষ্টি গোচর হয় কাজী সমিতির সদস্যদের। তারা সংবাদে জানতে পারেন, তানোর থানা ১নং কলমা ইউনিয়নের নিকাহ্ রেজিস্ট্রার নিয়োগের জন্য গত (২৮ ফেব্রুয়ারী) বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। মোঃ আতাউর রহমান নিকাহ্ রেজিস্ট্রার ১নং কলমা ইউনিয়ন ১৯৭৪ সালের প্রশাসক মোঃ আমির আলির স্বাক্ষর জাল করে নিকাহ্ রেজিস্ট্রার লাইসেন্স তৈরী করে অদ্যবধি কাজ করছেন। মোঃ আতাউর রহমান নিকাহ্ রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দাখিলের জন্য জেলা রেজিস্ট্রার দপ্তর হতে গত (৯ আগস্ট ২০১৭, ৯ সেপ্টম্বর ২০১৮, ৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ এবং সর্ব শেষ ২১ জুন ২০২০) সাব রেজিস্ট্রার তানোরকে নির্দেশ দেন। যাহা তানোর সহকারী জজ আদালতে মামলা নং- ২৮/২০ অঃপ্রঃ ১নং কলমা ইউনিয়নের নিকাহ্ রেজিস্ট্রারের নিয়োগ যেন না দেয়া হয় সেজন্য সাব-রেজিস্ট্রার তানোরকে ২নং বিবাদী করা হয়েছে।
ইতিপূর্বে কোন সাব-রেজিস্ট্রার তানোর মাননীয় আদালতকে সম্মান দেখিয়ে ১নং কলমা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগের প্রক্রিয়া করেননি। বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রার আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রানালায় ওথবা জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয় হতে কোন নির্দেশ না পাওয়া সত্বেও তিনি অনৈতিক ভাবে নিয়োগের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন। অফিস সহকারী সুরাইয়া পারভীনের যোগসাজসে জেলা রেজিস্টারের দপ্তরের চিঠি গুলো উধাও করেছেন এবং জাল নিকাহ রেজিস্ট্রার মোঃ আতাউর রহমানের সহযোগীতায় ১নং কলমা ইউনিয়নের নিয়োগ প্রক্রিয়া করছেন।
জানা গেছে, নিকাহ রেজিস্ট্রার মোঃ সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে তানোর সহকারী জজ আদালতে (মামলা নং- ২৮/২০ অঃপ্রঃ) যে মামলাটি করেছেন। সেই মামলার শুনানী হয়েছে (৬মার্চ)। শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত ৭দিনের মধ্যে জবাব দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
তানোর সাব রেজিস্টার অফিস সহকারী মোসাঃ সুরাইয়া পারভিন জানান, তানোর সহকারী জজ আদালতে (মামলা নং- ২৮/২০ অঃপ্রঃ) যে মামলাটি হয়েছে। তার সময় পেয়েছি। ১৯৭৪ সাল থেকে জাল লাইসেন্সে অদ্যবধি বিবাহ-তালাক রেজিস্ট্রার করেছে আতাউর রহমান। তার সকল অভিযোগপত্র ভলিয়্যমে আছে। সাব রেজিস্ট্রার স্যারের সাথে কথা বলেন।
তানোর ইউএনও পংকজ দেবনাথ জানান, সরকারী সকল নির্দেশনা মেনেই নিকাহ্ রেজিস্ট্রার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। জাল লাইসেন্স ব্যবহার করে নিকাহ্ রেজিস্ট্রারের কাজ করার জন্য কাজী আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। আইন মন্ত্রনালয় থেকে যে নিয়েগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। সেটি বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রারের যোগদানের পূর্বে না পরে এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএনও জানান, বিষয়টি আমি বলতে পারবোনা। সাব রেজিস্টারের কাছে জানুন।
সার্বিক অনিয়মের বিষয়ে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে সাব রেজিস্ট্রার মোঃ তহিদুল ইসলাম তানোর বিটিসি নিউজকে জানান, কোন কথার উত্তর দিতে পারবোনা বলে দাম্ভিকতা প্রকাশ করে বলেন, কোন বিষয় জানতে হলে আমার অফিসে এস জানতে হবে। অন্য কোন সাংবাদিক তার অফিস সহকারীর কাছে ফোন করার বিষয়েও তিনি ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। যাহা কাম্য নহে।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা মুসলিম নিকাহ্ রেজিস্ট্রার সমিতি’র সভাপতি কাজী মোঃ নূরুল আলম বিটিসি নিউজকে জানান, কাজী আতাউর রহমাহ জাল ভলিউমে ১৯৭৪ সাল থেকে অদ্যবধি বিবাহ-তালাক রেজিস্ট্রী করেছে। এত বিবাহ্রে বৈধতা দেবে কে? প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, সার্বিক বিষয় সাব রেজিস্ট্রার অবগত থাকলেও তিনি তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। শুধু তাইনয়, যোগদানের পর থেকে তিনি আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রালায় থেকে ১নং কলমা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগের ব্যপারে কোন পত্র পান নাই। নিয়োগের বিষয়ে তানোর সহকারী জজ আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। তারপরও তিনি ১নং কলমা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। তার এরুপ কর্মকান্ড গোড়ামী, ক্ষমতার অপব্যহার ও বিজ্ঞ আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর সামিল বলে মনে করেন কাজী সমিতির এই সভাপতি।
জানতে চাইলে জেলা রেজিস্ট্রার মোঃ মতিউর রহমান বিটিসি নিউজকে জানান, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে আমি জেনেছি। তবে তানোর সাব রেজিস্ট্রারের যোগদানের পূর্বে না পরে তা আমি বলতে পারবো না। নিকাহ্ রেজিস্ট্রার মোঃ আতাউর রহমানের জাল লাইসেন্স নিয়ে যতগুলি বিবাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রী করেছেন তার বৈধতা কে দেবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মামলা চলমান রয়েছে। আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো.মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.