বিলুপ্তির দার প্রান্তে কাকিনার কলুর ঘানি
![](https://btcnews.com.bd/wp-content/uploads/2019/08/1111111111-102.jpg)
লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ আধুনিকতার স্রোতে গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে অনেক প্রাচীন ঐতিহ্য। যা এখন শুধু বইয়ের পাতাতেই শোভা পাচ্ছে। তেমনি সমাজ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে কলু সম্প্রদায়। প্রযুক্তির উৎকর্ষের ফলে এ পেশার গুরুত্ব কমে যাওয়ায় জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে কলু সম্প্রদায় পেশা বদল করেছেন।
তাই গ্রামাঞ্চলের কোথাও আর চোখে পড়ে না কলুর ঘানিও।
এক সময় কাকিনা তেলিপাড়ায় সচরাচর বেশ কয়েকটি পরিবার সরিষা দিয়ে ঘানি থেকে তেল তৈরি করত,কিন্তুু এখন দুটি পরিবার’কে দেখাযায় হাত দিয়ে ঘানি ঘুড়িয়ে তেল তৈরি করতে।
তাদের পেশাই ছিল তিল, তিষি ও সরিষা থেকে তেল উৎপাদন করা। ওই তেল গ্রামে গ্রামে ফেরি করে তা বিক্রি করতো। এক সময় গ্রামের বনেদি গৃহস্থরা কলু বাড়িতে গিয়ে তিল, তিষি ও সরিষা দিয়ে আসত। আর কলুরা কাঠের তৈরি গাছে তা ঢেলে নিজেরাই ঘানি টেনে তেল উৎপাদন করত। এজন্য একদিকে কলুদের যেমন ব্যবসা হত অন্যদিকে গৃহস্থ মালিকও পেতেন খাঁটি তৈল।
![](https://btcnews.com.bd/wp-content/uploads/2019/08/222222222222-14.jpg)
এক পর্যায়ে স্বচ্ছল কলুরা ঘানি টানার কাজে ঘোড়া, গরু ও মহিষ ব্যবহার করা শুরু করে। আজ থেকে কয়েক বছর আগেও লালমিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা তেলি পাড়ায় অস্বচ্ছল কলুদের ঘানি টানতে দেখা গেছে। কিন্তু কলু সম্প্রদায়ের লোকজন বাপ-দাদার এ পেশা ছেড়ে লাভজনক অন্যান্য পেশায় চলে যাওয়ায় কলুর ঘানি এখন বিলুপ্ত প্রায়।
তবুও জীবিকা নির্বাহের প্রয়োজনে এখনও দু একজন এ পেশাকে ধরে রেখেছেন। কদাচিৎ দেখা মেলে কলুর ঘানি টানার দৃশ্য। পরিশ্রম বেশি হওয়ায় এখন আর কোনো কলুই নিজে ঘানি টানেন না। এখনো কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের তেলি পাড়া গ্রামে গরু দিয়ে নয় হাত দিয়ে ঘানি টানার দৃশ্য চোখে পড়ে।
আজ মঙ্গলবার (২৭ আগষ্ট) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এ গ্রামের দুই একজন পেশাকে ধরে রেখেছেন। আব্দুল হাই নামে একজন তেল ব্যাবসায়ীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বিটিসি নিউজকে জানান, ২০/৩০ বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে তারা জড়িত। আগে তাদের বাবা একাজ করতো। বাবার মৃত্যুর পর থেকে তিনি এ কাজ করে আসছে। তবে শুধু এ পেশার উপর নির্ভর করে তাদের এখন আর সংসার চলে না।
আর এক ঘানিটানা তেল ব্যাবসায়ী বিটিসি নিউজকে জানান, আমাদের বর্তমান ১টি ঘানি টানার গাছ আছে। ঘানি টানার কাজে আমরা গরু’র পরিবর্তে নিজেই শ্রম দেই। সকাল থেকে ১২টা পর্যন্ত ঘানি টেনে ২কেজি তেল বের করতে পারি। যার বর্মমান বাজার মূল্য ৫শ টাকা। এতে আমাদের সংসার চলে।
মেশিয়ে ভানা তেলের কারণে হারিয়ে বিলুপ্তির দার প্রান্তে এসে দারিয়েছে কাকিনার এই শিল্প,এক মাত্র পরিবার যে এই কলুর ঘানিকে আগলে রেখেছে।আধুনিক হচ্ছে পৃথিবী আর আর এই আধুনিকতার ছোয়ায় যন্ত্র কেরে নিচ্ছে মানুষের যায়গা,বড় বড় প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতায় কোন ঠাসা হয়ে পড়েছে কাকিনার এই কলুর ঘানি। এই ঘানিকে বাঁচাতে হলে চাই ক্রেতাদের সচেতনতা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.