খুলনা ব্যুরো: খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, ধূমপান মানে জেনে শুনে বিষপান। তামাকজাত দ্রব্য অথবা ধূমপানের ইতিবাচক কোনো প্রাপ্তি নেই বরং ক্ষতির অনেক দিক রয়েছে। ধূমপায়ী ব্যক্তি নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আবার এদ্বারা আশপাশে থাকা মানুষদেরও ক্ষতি করে। কালের বিবর্তনে তামাকের ব্যবহারেও ভিন্নতা এসেছে। তামাক, জর্দা, হুক্কা, বিড়ি, সিগারেট পেরিয়ে তরল নিকোটিন বহনকারী ক্ষতিকর ই-সিগারেটের ব্যবহারও এখন দৃশ্যমান।
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন বাস্তবায়নে করণীয় বিষয়ে খুলনা বিভাগীয় সেমিনারে তিনি একথা বলেন।
আজ বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) সকালে খুলনা সার্কিট হাউজ সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ ফিরোজ শাহ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন ও বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার দপ্তরের পরিচালক মোঃ হুসাইন শওকত। এসময় ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ও বিধি বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের কারিগরি উপদেষ্টা সৈয়দ মাহবুবুল আলম।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এই তামাকচাষ বন্ধ করা প্রয়োজন।তামাকচাষ কৃষি জমির উর্বরতা নষ্ট করে। সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে বিড়ি, সিগারেট, জর্দার ন্যায় তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে দেশের মানুষ তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পাবে।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধে জানানো হয়, দেশের ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ বা ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ ধূমপান বা তামাকজাত দ্রব্যে আসক্ত। দেশে তামাকজনিত রোগে বছরে এক লাখ ৬১ হাজার লোক মারা যায় এবং তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় সাধারণ মানুষের প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়।
এছাড়া দেশের মোট মৃত্যুর ৬৭% শতাংশ অসংক্রামক রোগের কারণে হয়। এই অসংক্রামক রোগের পেছনে তামাকের ব্যবহার বহুলাংশে দায়ী। আইন অনুযায়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, শিশুপার্ক ও খেলাধুলার স্থান হতে একশত মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষেধ। তামাকজাত দ্রব্য অথবা সিগারেট ফেরি করে বা ভ্রাম্যমান দোকানের মাধ্যমে বিক্রি করা যাবে না। সিগারেটের বিজ্ঞাপন প্রচার ও নাটক-সিনেমার দৃশ্যে ধূমপান ও মাদক গ্রহনের দৃশ্য প্রদর্শন করা নিষিদ্ধ।
পাবলিক প্লেস, গণপরিবহন, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে ‘ধূমপানমুক্ত এলাকা’ সাইন বোর্ড স্থাপনা না করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আর্থিক জরিমানার মুখোমুখি হতে পারে।
সেমিনারে বিভাগীয় পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও এনজিও প্রতিনিধিরা অংশ গ্রহণ করেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.