বিশেষপ্রতিনিধি: দেশীয় মাছ বিলুপ্তির জন্য অত্যাধুনিক শস্য চাষ ও কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহারকে দায়ী করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেন, জলাশয় ভরাটের কারণেও দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হচ্ছে। তবে সরকার গবেষণার মাধ্যমে ৩৭টি বিলুপ্তপ্রায় মাছ ফিরিয়ে এনেছে।
আজ রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের কেন্দ্রীয় অবহিতকরণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক আমাদের জন্য খুবই উপযোগী। আমরা এক সময় সামুদ্রিক মাছে অভ্যস্ত ছিলাম না। বিদেশি মাছের চাষাবাদও হতো না। আমাদের সবচেয়ে সুস্বাদু মাছ ছিল দেশীয় মাছ। সে মাছ নানা ঘটনা প্রবাহে অনেকটা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আধুনিক শস্য চাষ করতে গিয়ে একদিকে গুরুত্ব দিয়ে অন্যদিকে গুরত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে দেশীয় মাছ উৎপাদনের উৎস মূলে আঘাত করা হয়েছে। জলাশয়, পুকুর, নদী ভরাট ও কীটনাশকের অপরিমিত ব্যবহারের কারণে দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হওয়ার মত অবস্থায় চলে গেছে। মাছের অভয়াশ্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারের কার্যকর উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মৎস্য অধিদপ্তর দীর্ঘ কার্যক্রমের মাধ্যমে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৭টি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির দেশীয় মাছ ফিরিয়ে এনেছে।
দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশীয় মাছ খাবারের চাহিদা মেটায় এবং পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা মেটায়। মাছের পাশাপাশি শামুক ও ঝিনুকের নানা প্রকার উপযোগিতা রয়েছে। দেশীয় মাছ এবং শামুকের বিস্তার ও সংরক্ষণে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। পাশাপাশি দেশের প্রচলিত ও অপ্রচলিত সব ধরণের মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণেও কাজ করতে হবে।
শ ম রেজাউল বলেন, মৎস্যসম্পদের প্রতি আমরা যত বেশি যত্নশীল হবো ততো বেশি এ খাতের বিকাশ হবে। এ খাত বিকশিত হলে খাবারের চাহিদা পূরণ হবে, আমিষের যোগান হবে। পর্যাপ্ত উৎপাদন হলে মাছ বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে।
মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হকের সভাপতিত্বে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান ও প্রকল্পের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক এস এম আশিকুর রহমান। মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মৎস্য অধিদপ্তরের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ এবং মৎস্যজীবী প্রতিনিধিগণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.