১০ জনের বার্সাকে হারিয়ে দিল মোনাকো

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: শুরুতেই জোড়া ধাক্কা- একজন খেলোয়াড় কমে যাওয়ার পর গোল হজম। সেই ধাক্কা সামলে লামিনে ইয়ামালের দারুণ গোলে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিল বার্সেলোনা। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। তাদের হারিয়ে ছয় বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফেরার উপলক্ষ রাঙাল মোনাকো।
প্রতিপক্ষের মাঠে বৃহস্পতিবার রাতে ২-১ গোলে হেরেছে হান্সি ফ্লিকের দল।
মানসা স্বাগতিকদের এগিয়ে নেওয়ার পর প্রথমার্ধেই সমতা ফেরান ইয়ামাল। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নেমে ব্যবধান গড়ে দেন জর্জ ইলেনিখেনা।
চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার প্রথম হার এটি। লা লিগায় প্রথম পাঁচ ম্যাচে জয়ের পর এলো এই হার।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনার বিপক্ষে তিন ম্যাচে মোনাকোর প্রথম জয় এটিই। এর আগে ১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে গ্রুপ পর্বের দুই দেখায় বার্সেলোনা জিতেছিল যথাক্রমে ২-০ ও ১-০ গোলে।
ইয়ামালের গোলটি বাদ দিলে, ১০ জনের দল নিয়ে রক্ষণের পাশাপাশি আক্রমণেও বিবর্ণ ছিল বার্সেলোনার পারফরম্যান্স। গোলের জন্য ৪টি শট নিয়ে মাত্র একটি লক্ষ্যে রাখতে পারে স্প্যানিশ দলটি। আর ফরাসি ক্লাবটির ১৮ শটের ৮টি ছিল লক্ষ্যে।
দশম মিনিটে বড় ধাক্কাটি খায় বার্সেলোনা। বক্সের একটু বাইরে তাকুমি মিনামিনোকে পেছন থেকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ডিফেন্ডার এরিক গার্সিয়া।
এখানে দায় ছিল বার্সেলোনার অধিনায়ক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনেরও। দুই পাশে দুই সতীর্থ ফাঁকায় থাকা সত্ত্বেও জার্মান এই গোলরক্ষক পাস দেন মাঝে গার্সিয়ার উদ্দেশ্যে, পেছনেই থাকা মিনামিনো বলের দখল নিতে এলে ফাউল করে বসেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার।
সেই রেশ থাকতেই ষোড়শ মিনিটে গোল খেয়ে বসে বার্সেলোনা। ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে দুই পাশে ছড়িয়ে থাকা প্রতিপক্ষের কয়েকজন খেলোয়াড়ের মাঝ দিয়ে নিচু শটে লক্ষ্যভেদ করেন ফরাসি মিডফিল্ডার মানসা।
২৭তম মিনিটে ব্রিল এমবোলোর শট ঠেকিয়ে ব্যবধান বাড়তে দেননি টের স্টেগেন। পরের মিনিটেই ইয়ামালের চমৎকার গোলে সমতায় ফেরে সফরকারীরা।
মাঝমাঠ থেকে মার্ক কাসাদোর উঁচু করে বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এগিয়ে যান ইয়ামাল। এক ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে একটু জায়গা বানিয়ে বক্সের বাইরে থেকে তার বাঁ পায়ের নিচু শট খুঁজে পায় ঠিকানা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে স্প্যানিশ এই উইঙ্গারের প্রথম গোল এটি। ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতাটির দ্বিতীয় কনিষ্ঠ গোলদাতা তিনি (১৭ বছর ৬৮ দিন)। বার্সেলোনার হয়েই ১৭ বছর ৪০ দিন বয়সে গোল করে রেকর্ডটি গড়েন আনসু ফাতি।
চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে প্রথম ৬ ম্যাচে ইয়ামালের গোল ও অ্যাসিস্ট হলো সমান ৪টি করে।
বিরতির আগে মোহামেদ সালিসুর হেড ঠেকান টের স্টেগেন।
৫৫তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ পান রফিনিয়া। ডান দিক থেকে জুল কুন্দের পাসে ছুটে গিয়ে বক্সে স্লাইডে বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
দুই মিনিট পর আরেকটি সেভ করেন টের স্টেগেন। বক্সের বাইরে থেকে ভান্দারসনের জোরাল শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন তিনি।
৭১তম মিনিটে ফের এগিয়ে যায় মোনাকো। নিজেদের অর্ধ থেকে সতীর্থের উঁচু করে বাড়ানো বল অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে ধরে এগিয়ে যান ইলেনিখেনা। বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের শটে গোলটি করেন দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা এই নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড।
চাম্পিয়ন্স লিগে অভিষেকেই গোলের দেখা পেলেন ১৮ বছর বয়সী এই ফুটবলার।
৮৪তম মিনিটে ইনিগো মার্তিনেসের চ্যালেঞ্জে ফোলারিন বার্সেলোনার বক্সে পড়ে গেলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে ভিএআরে মনিটরে রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত পাল্টান তিনি।
নির্ধারিত সময়ের দুই মিনিট বাকি থাকতে আলেহান্দ্রো বাল্দের বদলি নামেন আনসু ফাতি। চোটে বাইরে থাকার পর বার্সেলোনার হয়ে এই মৌসুমে প্রথম খেলতে নামলেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।
গত মৌসুমে ধারে ইংলিশ ক্লাব ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ অ্যালবিয়নের হয়ে খেলা ফাতি অল্প সময়ে কিছু করে দেখাতে পারেননি, তার দলও পারেনি হার এড়াতে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.