‘হানিয়াকে হত্যা করতে ইরানি এজেন্ট ভাড়া করেছিল মোসাদ’

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করতে ইরানি এজেন্ট ভাড়া করেছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। হানিয়া যে বাসভবনে ছিলেন সেখানকার তিনটি কামরায় বোমা পেতে রেখেছিল আইআরজিসি।
সংবাদমাধ্যম প্রতিবেদন অনুসারে, ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা আরও মাস কয়েক আগেই করা হয়েছিল। চলতি বছরের মে মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তখন হানিয়া রাইসির জানাজায় যোগ দিতে তেহরানে গিয়েছিলেন। সেসময়েই তাকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল মোসাদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইরানের দুই কর্মকর্তা টেলিগ্রাফকে বলেছেন, ইব্রাহিম রাইসির জানাজায় ব্যাপক ভিড় থাকায় সেসময় হানিয়াকে হত্যা করা সম্ভব হয়নি। এর বদলে পরবর্তীতে যখন হানিয়া তেহরান সফর করবেন এবং কোথায় অবস্থান করতে পারেন, সেই তথ্য নিশ্চিত হয়েই ভবনটির তিনটি কামরায় বোমা পেতে রেখে আসেন মোসাদের এজেন্টরা।
ইসমাইল হানিয়া যে ভবনে ছিলেন, সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে পাওয়া একাধিক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, বোমা রাখার জন্য মোসাদের এজেন্টরা মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে বেশ কয়েকটি কামরায় প্রবেশ করেন। এসময় তারা তাদের পরিচয় লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছেন। বোমা সেট করে আসার পরপরই মোসাদ এজেন্টরা ইরান ছেড়ে চলে যান।
ওই কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, মোসাদের অধিকাংশ সদস্য ইরান ছাড়লেও বেশ কয়েকজন রয়েই যান। এর মধ্যেই ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তেহরানে যান হানিয়া। সেসময় রয়ে যাওয়া মোসাদের মধ্য থেকেই কয়েকজন হয়তো বাইরে থেকে হানিয়ার বাসভবনে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটান। তাতে হানিয়া ও তার এক দেহরক্ষী মারা যান।
হানিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্বে নিয়োজিত ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) উচ্চ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, আমরা এখন নিশ্চিত যে মোসাদ ইরানের ইসলামি রেভ্যুলেশনারী গার্ড কর্পসের ‘আনসার আল-মাহদি সুরক্ষা ইউনিট’ থেকে এজেন্ট ভাড়া করেছিল। এই ইউনিটিই ইরানে দেশি-বিদেশি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইআরজিসির একটি সূত্র বলেছে, এ ঘটনা কেন্দ্র করে আইআরজিসিতে একে অপরকে দোষ দেওয়ার খেলা শুরু হয়েছে। আইআরজিসি কমান্ডার ইসমাইল কানি নিজ বাহিনী থেকে সদস্যদের বহিষ্কার ও গ্রেপ্তার করছেন। এমনকি কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.