সাতক্ষীরায় সংস্কারকৃত বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে আবারও প্লাবিত! এখনো পর্যন্ত কেউ ত্রাণ পানিন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনেরপোতার শ্মশানঘাটা পয়েন্টে বেতনা নদীর সংস্কৃারকৃত বেড়িবাধ পুনরায় ভেঙে যাওয়ায় সদর ও তালা উপজেলার নিন্মঅঞ্চলে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ বলছেন সকলের সহায়তা পেলে রাতের মধ্যে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা যাবে।
আটদিন ধরে সাধারণ মানুষের নিদারুণ দুর্ভোগ ও কষ্টের পর ধারণা করা হয়েছিল এবার ভাঙা বাঁধ মেরামত হয়ে যাবে। কিন্তু সাতক্ষীরা নদী উপকৃলের ভাগ্য যেন কখনই সহায়ক না। ভোর রাতেই কাজ শেষ করে ঘরে ফেরার আগেই ফের বেতনার সংস্কারকৃত বাঁধ ভেঙে নিন্মঅঞ্চলে হু-হু করে ঢুকে পড়তে শুরু করেছে পানি।
ইতোমধ্যে নতুন করে রাস্তা ঘাট ঘরবাড়িতে ঢুকেছে পানি। ভেসে গেছে মাছের ঘের। ধ্বংস হয়েছে আমন ও সবজি ফসল। দেশের সবথেকে শক্তিশালী কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্রি, বারী ও বিনা কৃষি গবেষণাপ্লটেও ঢুকে পড়েছে পানি। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসীর দাবি এই নদীর একটি পয়েন্ট আটকে রেখেছে কোন এক প্রভাবশালী যার ফলে পানির চাপ বেড়ে ভেঙে গেছে সংস্কারকৃত বাঁধ। এজন্য দ্রুত প্রশাসনিক উদ্যোগ।
এর আগে সদর উপজেলার লাবসা ইউনিয়নের বিনেরপোতা, রাজনগর শিবনগর এগারোআনি তালা উপজেলার  নগরঘাটা ইউনিয়নের নিমতলা রথখোলা কাপাসডাঙ্গা ও হরিন খোলার নিন্মঅঞ্চল বিস্তির্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বেতনানদী বেঁড়িবাধ ভেঙে ও টানা বৃষ্টিতে ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমিসহ নিন্মঅঞ্চল  বিস্তির্ণ এলাকা। ঘরবাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় জ্বলছে না চুলায় আগুন। রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। পানিবন্দীতে স্থবির হয়ে  পড়েছে মানুষের জীবনযাত্রা।
এছাড়াও প্রতিবছর বর্ষা হলে জলাবদ্ধতা শহরের  অভিশাপ। ফি বছর এ শহর জলাবদ্ধতার কবলে পড়লেও এ অভিশাপ থেকে মানুষের মুক্তি মিলছে না। হাতে গোনা কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির কারণে ভুগে মরছে গোটা শহরের মানুষ। পানি নিষ্কাশনের পথ দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলার কারণে সরছে না পানি। ফলে পঁচা পানিতে নাকানি-চুবানি খাওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। দিন আসে দিন যায়, বদলায় অনেক কিছু। শুধু বদলায় না সাতক্ষীরা শহরের জলাবদ্ধতার চিত্র।
দেখা গেছে, সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজের পশ্চিম পাশে ৯ নং ওয়ার্ডের মেহেদীবাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। শহরের এই এলাকার মানুষ দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় ধরে জলাবদ্ধতায় হাবুডুবু খাচ্ছে। পানি নিষ্কাশনের পথ (ড্রেন) বন্ধ থাকার কারণে হাজারো পরিবার বর্তমানে জলাবদ্ধতার মধ্যে রয়েছে। বাড়িঘরে পানি উঠেছে। টিউবওয়েলগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। রান্নাঘরে পানি ঢুকে পড়েছে, ঘর থেকে বের হওয়ার কোন উপায় নেই। এমনকি এলাকার অনেক পরিবার নিজ নিজ বাড়ি প্লাবিত হওয়ায় পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভাড়াবাসায় দিন কাটাচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানান।
তবে এসব প্লাবিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এখনো পর্যন্ত কেউ ত্রাণ ও অর্থ সহায়তা পাননি বলে খোপের সাথে এলাকাবাসিরা জানান। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী গতানুগতিক ধারায় বললেন সবার সহায়তা পেলে আজকে রাতের মধ্যেই ভেঙে যাওয়া বাঁধ সংস্কার সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত, আটদিন আগে টানা বৃষ্টির চাপে এই বাঁধের ২৫ মিটার ভেঙে অন্তত ৪০গ্রামের মানুষ পানিতে প্লাবিত হয়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি মো. সেলিম হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.