বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক:দামাস্কাসসহ সিরিয়ার বড় অংশের এলাকা দখল করে দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর সিরিয়ার বিরোধী শক্তি এখন আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালির সঙ্গে দেখা করে বিরোধী নেতা আহমেদ আল-শারা (আবু মুহাম্মদ আল-জোলানি নামেও পরিচিত) ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে আলোচনা করেন। আল-জালালি, যিনি আসাদের অধীনে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন, হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) সিরিয়ান স্যালভেশন গভর্নমেন্ট (এসএসজি)-এর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে সম্মত হয়েছেন।
আল-জালালি বলেন, ‘আমরা চাই, রূপান্তর প্রক্রিয়াটি দ্রুত এবং মসৃণ হোক।’
সিরিয়ার জন্য জাতিসংঘের বিশেষ দূত গেইর পেডারসেন বলেছেন, ‘রূপান্তর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিরিয়ার জনগণ তাদের বৈধ আকাঙ্ক্ষাগুলি পূরণের পথে এগিয়ে যাবে এবং একটি ঐক্যবদ্ধ সিরিয়াকে পুনরুদ্ধার করবে।’
তিনি আরও বলেন, নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রাধান্য দেবে দখল করা অঞ্চলগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা, প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্গঠন এবং সিরিয়ার শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুত জনগণের প্রত্যাবর্তনে।
ক্ষমতায় থাকাকালীন বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে, যার মধ্যে হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন এবং বলপূর্বক গুম অন্তর্ভুক্ত। তার বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে।
এইচটিএস-এর নতুন নেতৃত্ব আশ্বাস দিয়েছে যে আসাদের সরকারের অধীনে সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের দ্বারা সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের জন্য ‘ন্যায্য প্রতিশোধ’ নেওয়া হবে।
আল-শারা বলেন, ‘আমরা সিরিয়ার জনগণের ওপর অত্যাচার চালানো অপরাধী, ঘাতক এবং নিরাপত্তা ও সামরিক কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে দ্বিধা করব না।’
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রধান অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, ‘ন্যায্য বিচারই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, প্রতিশোধ নয়।’
জাতিসংঘের সিরিয়া বিষয়ক তদন্ত কমিশন ‘সিরিয়ার জনগণের জন্য একটি ঐতিহাসিক নতুন শুরু’ বলে অভিহিত করেছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের নৃশংসতার পুনরাবৃত্তি রোধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, এইচটিএস-এর ঘনিষ্ঠ মোহাম্মদ আল-বাশির, যিনি ইদলিব-ভিত্তিক এসএসজি-এর প্রধান, তাকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.