রাজশাহীতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উদ্যাপিত

প্রেস বিজ্ঞপ্তি: আজ ৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) প্রথম জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন। সারাদেশের মতো রাজশাহীতেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদ্যাপন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষ্যে সকাল নয়টায় বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ নগরীর সিএন্ডবি মোড় চত্বরে জুলাই শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, শহিদ জুলাইযোদ্ধা পরিবারের সদস্য ও আহত জুলাইযোদ্ধারা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আলাদাভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জুলাই শহিদদের শ্রদ্ধা জানান।
সকাল সাড়ে নয়টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে বিভাগীয় কমিশনার জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে চিত্র প্রদশর্নী পরিদর্শন করেন।
সকাল দশটায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জুলাই শহিদ পরিবার ও জুলাইযোদ্ধাদের সম্মিলন অনুষ্ঠান শুরু হয়। সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার পর জুলাই শহিদ পরিবারের সদস্য ও জুলাইযোদ্ধাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন ও প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য সম্প্রচার শেষে শুরু হয় জুলাই স্মৃতিচারণা।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জুলাই শহিদ শাকিব আনজুম এর বাবা মাইনুল হক বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র দেখলাম তা শুধু এখানেই প্রচার করলে হবে না, শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রদর্শন করতে হবে। তাহলে সাধারণ মানুষ বুঝতে পারবে ফ্যাসিস্ট সরকার কীভাবে নিরস্ত্র সন্তানদের উপর আক্রমণ করেছিল। তিনি শহিদদের সুষ্ঠু বিচার ও আহতদের সুচিকিৎসার দাবি জানান এবং ছেলে জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।
অনুষ্ঠানে জুলাই শহিদ পরিবারের সদস্য ও জুলাইযোদ্ধাদের অনেকেই স্মৃতিচারণ করেন। জুলাইকে রক্ষা করতে হবে উল্লেখ করেতাঁরা বলেন, আমরা একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র চেয়েছিলাম, সেটা নিশ্চিত হোক। জুলাই আন্দোলনের সফলতা বাস্তবায়িত এবং সকল বৈষম্য দূর হোক।
তাঁরা আরও বলেন, লোক দেখানোর জন্য জুলাই আন্দোলন হয়নি। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে এ আন্দোলন হয়েছে। শহিদ ভাইয়েরা মনুষ্যত্বের জন্য জীবন দিয়েছে। আন্দোলনকারীদের রক্তকে বৃথা যেতে দিবেন না। এই রক্তের বিনিময়ে আমরা একটি সৌহাদ্যের বাংলাদেশ চাই।
নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের কথা উল্লেখ করে তাঁরা বলেন, এই দেশে যেন আর কারো প্রাণ না হারায়, কারো অঙ্গহানী না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।তাঁরা আন্দোলনের ফুটেজ দেখে অপরাধিদের গ্রেফতারের জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ জানান।
এসময় তাঁরা ফ্যাসিস্ট সরকারের দ্রুত বিচার কামনা করেনএবং এই বাংলায় আর কখনও ফ্যাসিস্ট সরকার তৈরি হতে দিবেনা বলেও তাঁরা উল্লেখ করেন।
স্মৃতিচারণ শেষে জুলাই শহিদদের আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে দোয়া করা হয়।
জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান, আরএমপি’র কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুধীজন এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে জুলাই শহিদ পরিবারের সদস্য ও আহতদের হাতে জুলাই ফাউন্ডেশনের উপহার ও জেলা পরিষদের আর্থিক অনুদান হস্তান্তর করা হয়।
সংবাদ প্রেরক স্বা/-জনসংযোগ কর্মকর্তা, পিআইডি, রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.