ঢাকাপ্রতিনিধি: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেছেন, বর্তমান সরকারের আনুগত্য করে নির্বাচন কমিশন যে তফসিল ঘোষণা করতে যাচ্ছে তা দেশের জনগণের সাথে প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগের এই দলদাস কমিশনের অধীনে জনগন দেশে আর কোন নির্বাচন দেখতে চায় না।
মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, এই একতরফা তফসিলের কারণে অন্ধকার সরকার নিজেই অন্ধকারে ডুবে মারা যাবে। তিনি বলেন, সকল বিরোধী দলের দাবীকে উপেক্ষা করে নির্বাচন করা হলে জনগন ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধে মাঠে নামতে বাধ্য হবে। শেখ হাসিনার সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। অতীতে শেখ হাসিনার অধীনে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। তাদের নেতৃত্বে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা থেকে হাবিবুল আউয়াল কমিশন যদি পিছু না হটে, তবে দেশের সর্বস্তরের জনগন অবৈধ নির্বাচন প্রতিহত করতে মাঠে নামতে বাধ্য হবে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ট রাজনৈতিক দল ও জমগন এই সরকার ও কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাবে না।
জনদাবী উপেক্ষা করে একতরফা তফসিল ঘোষণা করা হলে আগামীকাল ১৬ নভেম্বর, দেশের সকল জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। আজ ১৫ নভেম্বর, বুধবার, বিকেলে, রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে গণ মিছিল পূর্ব জমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী উপরোক্ত কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম এর সভাপতিত্বে জমায়েতে বক্তব্য রাখেন, দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান,সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ ও প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম প্রমূখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সরকারের পাতানো কোন নির্বাচনে যাবে না । তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার উন্নয়নের কথা বলে পাতানো নির্বাচন করে জনগনকে ধোকা দিতে চায়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শান্তি চায়, জ্বালাও-পোড়াও, বিশৃঙ্খলা, ভাংচুর করে না ও চায় না। ইউনুছ আহমাদ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা থাকবে না বলে তারা পাতানো নির্বাচন করতে চায়।
প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের গৃহপালিত নির্বাচন কমিশন দিয়ে দেশে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। দলের মূখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, আজকের যদি নির্বাচন কমিশন একতরফা তফসিল ঘোষণা করে তবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আগামীকাল দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করবে। তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণা করা হলে দেশে ভোটাধিকার আদায়ের আন্দোলনে নতুন মাত্র যোগ হবে। ভোটাধিকার আদায়ে জনগন রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি। তবে এখন আবার এমন কি হলো যে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলো? প্রধান নির্বাচন কমিশনার কি কারো চাপে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করতে যাচ্ছেন? তিনি বলেন, আমরা, নির্বাচন ও ভোটাধিকার চাই। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সকল দলের অংশগ্রহনে নির্বাচন চাই। তফসিলের নামে কোন প্রহসন আমরা সহ্য করবো না।
সভাপতির বক্তব্যে মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, শেখ হাসিনা ২০১৮ তে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা ভঙ্গ করেছেন। ২০২৩ এ যে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবেন না তার গ্যারান্টি কোথায়? তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন জনগনের সেন্টিমেন্ট না বুঝে যে তফসিল ঘোষণা করবে সে তফসিল দালালীর তফসিল। এই তফসিলের নির্বাচন জনগন প্রতিহত করবে।
জমায়েত শেষে ৩টা ৩০ এ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইট থেকে দলের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী’র নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন অভিমূখে গণ মিছিল নাইটেঙ্গেল মোড়, কাকরাইল মোড় হয়ে শান্তিনগরে পৌঁছলে পুলিশ বেরিকেড দিয়ে বাঁধার সৃষ্টি করে। বিকাল ৪টা ৭ মিনিটে বাধাদেয়া পুলিশী বেরিকেডের উপরে দাঁড়িয়ে বিক্ষুব্দ জনতাকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে আজকের কর্মসূচি সমাপ্ত করেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.