থামছে না বালু খেকোদের দৌরাত্ন: সতী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, বিলীন হচ্ছে রাস্তা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: একটি প্রভাবশালী মহল প্রশাসনের নাকের ডগায় সতী নদী হতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যারা বিরুপ প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গন। তবুও বালু খেকোদের দৌরাত্ন থামছে না। তারা দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় ছোট নদী সতী নদী প্রবাহিত হচ্ছে। কোথাও সতী, কোথাও মরাসতী আবার কোথাও ভাটেশ্বরী নদী নামে পরিচিত নদীটি। মাত্র ৩৫-৪০ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে তিস্তা নদীতে গিয়ে মিলিত হয়েছে।
আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ও ভাদাই সীমান্তের কদমতলা সেতুটির ভাটিতে দিনরাত ২০- ২৫টি ট্রাক্টর দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি বালু খেকো চক্র। এই অবৈধবালু উত্তোলনের কারনে কদমতলা সেতুটির উজানে দেখা দিয়েছে তীব্র নদীভাঙ্গন। ইতোমধ্যে একটি সরকারি রাস্তার অর্ধেকাংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুর বস্তা ফেলে নদী ভাঙ্গন ঠেকানোর ব্যর্থ চেষ্টা করতে মাত্র। অথচ তার ৩-৪ শত মিটার উজানে নদী হতে অবৈধ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তা বন্ধ করা হচ্ছে না। গ্রামবাসীরা এই অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে একাধিকবার ইউএনওকে অভিযোগ দিয়েছে। এমন কী পুলিশের ৯৯৯ এ কল করেও সহায়তা চেয়েছিল। কিন্তু কোন আশারুপ ফল পায়নি। উল্টো প্রভাবশালীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছে।
সারপুকুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক রমজান আলী বিটিসি নিউজকে বলেন, দেশে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা এখন নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। এখানকার অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে রাস্তা, বাড়িঘর, ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। ক’দিন পরে উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বিলীন হয়ে যাবে। তবুও অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হবে না। বরং দিনদিন বেড়েই চলছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সারপুর ও ভাদাই ইউনিয়নের ভুমি কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রশাসন নগদ উ’কোচের বিনিময়ে এসব স্থানে অবৈধ বালু উত্তোলনের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। প্রতিবাদ করলে প্রভাবশালীরা মাস্তান দিয়ে হেয় করে। মাস্তানদের বিরুদ্ধে থানা পুলিশের সহায়তা পাওয়া যায়না।
অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ সম্পর্কে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর ই এলাহী সিদ্দিকীকে জানালে তিনি বিটিসি নিউজকে বলেন, বিষয়টি দেখছি। অবশ্যই এটা বন্ধ করা হবে। কিন্তু অভিযোগের ৭ দিন অতিবাহিত হলেও রহস্যজনক কারনে বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, বিগত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সতী নদীর প্রায় ৩৫ কিঃমিঃ খনন করা হয়। শতকোটি টাকা ব্যয়ে নদীটি খননের পর এখন সারা বছর পানি প্রবাহ থাকছে। নদী খননের অতিরিক্ত বালু দিয়ে নদীর দু’পাড় বেঁধে দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেই পারও ট্রাক্টর লাগিয়ে কেটে নিয়ে যাচ্ছে বালু খেকোরা। পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রশাসনকে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তো তেমন জনবল নেই প্রভাবশালীদের সাথে লড়বে। তারা পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা ছাড়া কিছুই করতে পারেনা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.