ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা গণহত্যা পরিচালনা করেছেন তাদের বিচার এদেশের মাটিতে হবে – অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার

খুলনা ব্যুরো: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা গণহত্যা পরিচালনা করেছেন তাদের বিচার এদেশের মাটিতে হবে। ইতোমধ্যে অন্তবর্তীকালীন সরকার বিচারের কার্যক্রম শুরু করেছে। আমরা তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। আন্তর্জাতিক আদালতেও ইতোমধ্যে গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাসহ তার সব দোসরদের নামে মামলা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের সময়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার পর যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি সেখানে আর কখনো যেন স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা ফিরে না আসে। জুলুম নির্যাতনের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়। সে জন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় খুলনা মহানগরীর ১৮ নং ওয়ার্ডের নবপল্লী বায়তুল আকাবা সংলগ্ন তার বাড়ির সামনের সোনালীনগর মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও শহীদ সাকিব রায়হানের গর্বিত পিতা আজিজুর রহমানের হাতে নগদ অর্থ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। এ সময় শহীদ সাকিব রায়হানের পিতা আজিজুর রহমানকে তিনি বুকে টেনে নিলে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তিনি পরিবারের সার্বিক খোঁজ-খবর নেন এবং শহীদ সাকিব রায়হানের শাহাদাত কবুলের জন্য দোয়া করেন। মহান আল্লাহর কাছে ধৈর্য কামনা করেন। তিনি শহীদের পিতার হাতে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে নগদ আর্থিক সহায়তা তুলে দেন। ঢাকায় একটি শুমারীতে কর্মরত থাকাবস্থায় সাকিব রায়হান ১৯ জুলাই ঢাকার মিরপুরে পুলিশের গুলিতে শাহাদাৎবরণ করেন।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলালের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও অঞ্চল টিম অধ্যক্ষ মাওলানা মশিউর রহমান ও মাস্টার শফিকুল আলম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, সাতক্ষীরা জেলা আমীর মুহাদ্দিস রবিউল বাশার। এতে বক্তব্য দেন মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট শাহ আলম ও প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম, শামীম সাঈদী, মহানগরী ছাত্রশিবির সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন ও সেক্রেটারি মুহাম্মদ নূরুল্লাহ, জেলা সভাপতি বেলাল হোসাইন রিয়াদ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহানগরী সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, সেক্রেটারি এস এম মাহফুজুর রহমান, মাওলানা শাহারুল ইসলাম, মশিউর রহমান রমজান, মো. আব্দুর রহিম প্রমুখ ।
সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, অসংখ্য ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে দেশের মানুষের উপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে। এই আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার তার শাসনামলে কত মানুষকে হত্যা করেছে তার হিসাব করাও কঠিন। লাশের বিভৎসতা দেখে কোনো পরিবার স্থির থাকতে পারেনি। স্বামী সন্তান হারিয়ে হাজারো মানুষ দিশেহারা। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ হতে দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করার এই আন্দোলনের সকল শহীদ পরিবারের সাথে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো ইনশাআল্লাহ। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে গণঅভ্যুত্থানের শহীদেরা আমাদের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, শহীদেরা যে জন্য জীবন দিয়েছেন, তাদের সেই স্বপ্ন যেন বাস্তবায়ন হয়। অতীতে কে কি করলো, তা নিয়ে প্রতিশোধ পরায়ন না হই। সবাইকে আল্লাহ তায়ালা হেদায়েত দান করুন। ন্যায় ও ইনসাফপূর্ন সমাজ প্রতিষ্ঠায় হাতে হাত রেখে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা ক্ষমতার মসনদের জন্য রাজনীতি করি না। এটা আমাদের দায়িত্বের অংশ।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমাদের জন্য আসমান থেকে বরকতের দরজা খুলে দিন। জুলুম থেকে বাংলাদেশকে চির জীবনের জন্য মুক্ত করুন। মেহেরবানী করে আল্লাহর দ্বীনকে এ জমিনে কায়েম করে দিন। প্রয়োজনে আল্লাহর দ্বীনের জন্য আমাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন। যারা জীবন দিয়েছে তাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করে নিন। আল্লাহ শহীদদের পরিবার পরিজন ও আমাদেরকে সুস্থতা দান করুন। বাংলাদেশের জমিনে জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা হাতে হাত মিলিয়ে ইনসাফের বাংলাদেশ গড়বো, ইনশাআল্লাহ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.