খুলনা থানার সাবেক ওসি কামরুজ্জামানসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

খুলনা ব্যুরো: খুলনায় সাবেক ছাত্রদল নেতা মাহমুদুল হক টিটোর দায়ের করা মামলায় খুলনা সদর থানার সাবেক ওসি এস এম কামরুজ্জামানসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, টিটোকে দির্ঘ ১২ বছর আগে থানায় নিয়ে গিয়ে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয়েছিল।
এই ঘটনা রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) খুলনা মহানগর হাকিমের আদালতে মামলা হিসেবে দায়ের করা হয়। মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, টিটোকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার করা হয়েছিল, যা আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে যায়। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন— তৎকালীন খুলনা সদর থানার সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) মো. শাহ আলম, উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. জেলহাজ্ব উদ্দিন, কনস্টেবল কাশেম, জাহিদ, তারক, ইস্রাফিল, তৎকালীন পুলিশ কমিশনার শফিকুর রহমান ও তৎকালীন ডেপুটি পুলিশ কমিশনারসহ অজ্ঞাত আরো অনেকে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১২ সালের ২২ এপ্রিল আনুমানিক সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার দিকে তৎকালীন পুলিশ কমিশনার শফিকুর রহমান ও ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে ওসি এস এম কামরুজ্জামানসহ আসামিরা মাথায় হেলমেট, হাতে লাঠি ও সরকারি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মাহমুদুল হক টিটো ও ফেরদৌস রহমান মুন্নাকে জোর পূর্বক আটক করে। তাদের হ্যাণ্ডকাপ পরিয়ে ও চোখ গামছা দিয়ে বেধে থানায় নিয়ে আসা হয়।পরে মাহমুদুলকে হ্যাণ্ডকাপ পরা অবস্থায় থানা অভ্যন্তরে ফ্যানের হুকের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেয়। পুলিশের বেধড়ক মারধরে বাদী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। কামরুজ্জামান তখন পুলিশ সদস্যদের বলেন, ‘শালার জ্ঞান ফেরা, আমাদের আরো কাজ বাকি আসে।’ তখন আসামি এসআই মো. জেলহাজ্ব উদ্দিন চোখে মুখে পানি দিয়ে তার জ্ঞান ফেরান।
তিনি কোনভাবেই বসতে পারছিলেন না। আসামিরা তাকে বার বার লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এক পর্যায়ে তৎকালীন ওসি বাদীর পেটে লাথি মেরে মেঝেতে ফেলে দেয়। বলে-‘ শালাকে ক্রসফায়ারের জন্য গাড়িতে উঠা, সব জানতে পারবো। তখন বাদী মেঝেতে পড়িয়া থাকলে পুনরায় আসামিরা পিটাতে থাকে।
এতে তার হাড় ভেঙে যায় ও জখম হয়ে জ্ঞান হারান। পুলিশ কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনারের নির্দেশে পরে তাদের জেলহাজতে রাখা হয়। শুধু তাই নয়, ২০১২ সালের ২২ এপ্রিল পুলিশ মিথ্যা মামলা দায়ের করে। যার প্রধান আসামি বাদী ও ফেরদৌস রহমান মুন্না।
মামলার বাদী বলেন, দীর্ঘদিন অসুস্থ অবস্থায় জেল হাজতে থাকার পর সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ থেকে জামিনে মুক্তি পেলেও তিনি আসামিদের রোষানল হতে মুক্তি পাননি। পরবর্তীতে বিভিন্ন দলীয় মামলায় তাকে আসামি করা হয়। এতে তাকে কারাভোগ করতে হয়। ওই নির্যাতনে তার মেরুদণ্ডে সমস্যা ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে একাধিক বার থানা ও পুলিশের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলেও মামলা গ্রহণ করা হয়নি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.