খুলনা জেনারেল হাসপাতালে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎঃ থানায় জিডি, দুদকে অভিযোগ

খুলনা ব্যুরো: খুলনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট প্রকাশ কুমার দাসের এখনও হদিস মেলেনি। করোনা টেষ্টের দুই কোটি ৫৭ লাখ টাকা ঘাটতি রেখে গত বৃহস্পতিবার থেকে লাপাত্তা  হয় সে। 
তবে তার বিরুদ্ধে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও খুলনার সিভিল সার্জন ডা: নিয়াজ মোহাম্মদ কেএমপির খুলনা থানায় জিডি করার পাশাপাশি আজ মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর)  দুর্নীতি দমন কমিশনেও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এদিকে, গতকাল সোমবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা আরও প্রকট হয়ে উঠছে। দীর্ঘদিন ধরে একজন মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট কাদের সহযোগিতায় এতো বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাতের সুযোগ পেলেন তাদের মুখোশ উম্মোচনও এখন সময়ের দাবি বলেও আলোচনায় উঠে এসেছে। যদিও দুদকের পক্ষ থেকে সার্বিক বিষয় নিয়েই তদন্ত করা হবে বলেও খুলনা দুদকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।
কেএমপির খুলনা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো: হাসান আল মামুন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট প্রকাশ কুমার দাসের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে খুলনার সিভিল সার্জন ডা: নিয়াজ মোহাম্মদ সোমবার রাতে একটি সাধারণ ডায়রি করেছেন। যার নম্বর-১৬০১, তারিখ-২৭/৯/২১ইং।
অপরদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক), খুলনার উপ-পরিচালক মো: নাজমুল হাসান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আজ মঙ্গলবার সিভিল সার্জন তাদের দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ওই অভিযোগে জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট প্রকাশ কুমার দাসের বিরুদ্ধে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের কথা বলা হয়। অভিযোগটি আজই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে অনুমতি আসলেই মামলা দায়ের করা হবে।
তবে দুদকের অপর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হলেও দুদকের তদন্ত হবে সার্বিক বিষয় নিয়ে। কেননা শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির দ্বারা এতো বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎ করা সম্ভব কি না সেটিও খতিয়ে দেখা হবে। এর সাথে আরও কারা কারা জড়িত সেটিও তদন্ত করা হবে।
অবশ্য, প্রকাশ কুমার দাসের গা ঢাকা দেয়ায় মানুষের মধ্যে সন্দেহ আরও বেড়ে গেছে। আজ মঙ্গলবার  জেনারেল হাসপাতালের সামনে হাসপাতালের সাথে সংশ্লিষ্ট ছাড়াও সাধারণ মানুষের মধ্যে এ বিষয়টিই ছিল প্রধান আলোচ্য বিষয়। শুধুমাত্র প্যাথলজি বিভাগের একটি শাখা থেকে যদি এক বছরে এতো টাকা আত্মসাৎ করা হয় তাহলে হাসপাতালের অন্যান্য বিভাগের কি অবস্থা হতে পারে সে প্রশ্নও তোলেন অনেকে। বিশেষ করে কেনাকাটা থেকে শুরু করে বিভিন্ন টেন্ডার প্রক্রিয়ায়ও পুকুর চুরি হতে পারে বলে সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করারও দাবি তোলেন তারা।
এছাড়া সম্প্রতি হাসপাতাল অভ্যন্তরে ফুল বাগান করার যে কর্মকান্ড শুরু হয়েছে সেখানেও বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেন। ওই কাজটি হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের নিকট আত্মীয়কে দিয়ে বিনা টেন্ডারে করানো হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
যদিও এ ব্যাপারে হাসপাতালের আরএমও ডা: এসএম মুরাদ হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, কাজটি যেহেতু কয়েকজন চিকিৎসকের নিজস্ব অর্থায়নে করা সেহেতু এজন্য টেন্ডারের প্রয়োজন হয়না। তবে একটি সরকারি স্থাপনায় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়া এ ধরনের কাজের কোন সুযোগ আছে কি না সেটিও তদন্তের দাবি ওঠে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.