কোটা আন্দোলনে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন বকশীগঞ্জের সরকার রিপন মিয়া, বাড়িতে শোকের মাতম!

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন তুঙ্গে চাকুরীর ডিউটি বাদ দিয়ে গিয়েছিলেন ছাত্রদের সাথে সংহতি জানাতে। ছাত্রদের বিজয় হলেও সেই বিজয় উৎসব দেখে যেতে পারেন নি সরকার রিপন মিয়া (২৬)।

তার আগেই পুলিশের গুলিতে পরপারে পাড়ি জমান সরকার রিপন মিয়া নামে এক টগবগে যুবক। ৫ আগস্ট (সোমবার) বিকাল ৪ টায় ঢাকার উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরে পুলিশের গুলিতে তিনি মারা যান।
নিহত সরকার রিপন মিয়া জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার চর কাউরিয়া সীমার পাড় এলাকার মরহুম সাংবাদিক সরকার রেজাউল করিম এর ছোট ছেলে।
রিপন মিয়া ঢাকায় একটি সিগারেট কোম্পানীতে বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) বিকালে জানাযা শেষে বাট্টাজোড় ইউনিয়নের পানাতিয়া পাড়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নিহত রিপনের ভাই সাংবাদিক সরকার আকতার হোসেন জানান, সোমবার সরকার পতনের আন্দোলনে ছাত্রদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সেই আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন তার ছোট ভাই সরকার রিপন মিয়া। বিকাল ৪ টার দিকে উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টর থেকে গণভবনের দিকে রওনা হলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে।
এক পর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হলে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি বর্ষণ করেন। পুলিশের গুলিতে অনেক ছাত্র-জনতা গুরুতর আহত হয়। এসময় রিপন মিয়ার বুকে গুলি লাগলে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হয়। পরে তাকে চীন-মৈত্রী হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রিপনের মৃত্যুর খবর বকশীগঞ্জে ছড়িয়ে পড়লে তার নিজ বাড়ি ও এলাকায় শোকের মাতম শুরু হয়। রাতে অ্যাম্বুলেন্স যোগে রিপনের মরদেহ চরকাউরিয়া সীমার পাড় এলাকায় পৌঁছলে শোকের ছায়া নেমে আসে।
মঙ্গলবার দুপুরে চর কাউরিয়া সীমার পাড় গ্রামের পৌর কাউন্সিল জহুরুল হকের রাইস মিল মাঠে প্রথম জানাযা ও বিকাল সাড়ে ৫ টায় বাট্টাজোড় পানাতিয়া পাড়া গ্রামে দ্বিতীয় দফা জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এদিকে রিপনের মৃত্যুর পর চোখে মুখে অন্ধকার দেখছে তার পরিবার। রিপনের ৬ বছর বয়সি মেয়ে রিপা আক্তারের ভবিষ্যত কি হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে তার শোকাহত পরিবার।
স্থানীয়রা জানান, রিপন জীবিকার তাগিদে ঢাকায় থাকতো। তার পারিবারিক অবস্থা খুবই নাজুক ছিলো। সারা বছর আর্থিক সংকটের মধ্যে তার সংসার চলতো। কিন্তু এখন কিভাবে চলবে তার পরিবার। তাই রিপনকে শহীদের স্বীকৃতি দিয়ে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের নিকট আর্থিক সহযোগিতার দাবি জানান তারা।
নিহত রিপনের বোন রেজেনা আক্তার কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, এভাবে যেন কোন বোনের বুক খালি না হয়। তবে তার ভাইকে বীর আখ্যা দিয়ে শহীদের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানোর পাশাপাশি রিপন হত্যার বিচার দাবি করেন বোন রেজেনা আক্তার।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অহনা জিন্নাত জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি জি এম ফাতিউল হাফিজ বাবু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.