কষ্টের জয়ে শিরোপা ধরে রাখার অভিযান শুরু রেয়ালের

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: শুরুতে নিজেদের ছায়া হয়ে থাকা রেয়াল মাদ্রিদ জেগে উঠল দ্বিতীয়ার্ধে। বিরতির পর প্রথম মিনিটেই পেল জালের দেখা। প্রতিপক্ষের মাঠে আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দেওয়া ভিএফবি স্টুটগার্ট লড়াই করল সমান তালে। তবে ইউরোপ সেরার মঞ্চে আরও একবার নিজেদের সামর্থ্য দেখিয়ে জয় দিয়েই শিরোপা ধরে রাখার অভিযান শুরু করল কার্লো আনচেলত্তির দল।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে মঙ্গলবার রাতে ৩-১ গোলে জিতেছে রেয়াল। স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নদের হয়ে জালের দেখা পেয়েছেন কিলিয়ান এমবাপে, আন্টোনিও রুডিগার ও এন্দ্রিক।
ম্যাচজুড়ে অসংখ্য সেভ করে দলের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া।
৫৪ শতাংশের বেশি সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ১৭টি শট নেয় স্টুটগার্ট, এর সাতটি ছিল লক্ষ্যে। জার্মান ক্লাবটির বিপরীতে রেয়ালের ২০ শটের আটটি ছিল লক্ষ্যে।
ঘরের মাঠে গতিময় শুরু করে রেয়াল। তবে তাদের চমকে দিয়ে দ্রুতই মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় স্টুটগার্ট। প্রথম ১৮ মিনিটে গোলের জন্য নেয় পাঁচটি শট!
চতুর্থ মিনিটে ক্রিস ফিউরিখের শট ঠেকিয়ে শুরু হয় কোর্তোয়ার কঠিন পরীক্ষা। ছয় মিনিট পর এনজু মিইয়ুর শট তাকে ফাঁকি দিলেও বেরিয়ে যায় দূরের পোস্ট ঘেঁষে!
দ্বাদশ মিনিটে জেমি লেওয়েলিংয়ের জোরাল শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন কোর্তোয়া। তিন মিনিট পর মিইয়ুর শটও ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান তিনি।
অষ্টাদশ মিনিটে আনজেলো স্টিলারের শটও দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন পোস্টের নিচে ব্যস্ত সময় কাটানো কোর্তোয়া।
২৬তম মিনিটে এমবাপের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান স্টুটগার্ট গোলরক্ষক আলেকসান্দার নুবেল। প্রথমার্ধে এটাই ছিল রেয়ালের সেরা সুযোগ।
৩৩তম মিনিটে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে ভিএআর মনিটরে ট্যাকলের দৃশ্য দেখে বাতিল করেন সিদ্ধান্ত। রুডিগার নয়, আগে বলেই লেগেছিল স্টুটগার্ট ডিফেন্ডারের পা। ৪০তম মিনিটে ডেনিস উন্দাভের শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান কোর্তোয়া।
ফুটবলের উপাত্ত নিয়ে কাজ করা অপটার তথ্য অনুযায়ী চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লক্ষ্যে থাকা সবশেষ ৩৫ শটের মধ্যে এটি বেলজিয়ান গোলরক্ষকের ৩০তম সেভ!
প্রথমার্ধে নিজেদের খুঁজে ফেরা রেয়াল এগিয়ে যায় বিরতির পরপরই। নিজেদের অর্ধ থেকে আসা বল ধরে পায়ের কারিকুরিতে এগিয়ে যান রদ্রিগো। আগুয়ান গোলরক্ষককে এড়িয়ে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড খুঁজে নেন এমবাপেকে। ফাঁকা জালে অনায়াসে বল পাঠান ফরাসি তারকা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটি রেয়ালের হয়ে তার প্রথম গোল। ইউরোপ সেরার মঞ্চে সব মিলিয়ে ৪৯তম। জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচকে পেছনে ফেলে শীর্ষ ১০ গোলদাতার তালিকায় ঢুকলেন তিনি। বসলেন রেয়াল কিংবদন্তি আলফ্রেদো দি স্তেফানোর পাশে।
৪৮তম মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন এমবাপে। বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়ে গোলরক্ষক বরাবর শট নেন তিনি। তিন মিনিট পর রদ্রিগোর শট বেরিয়ে যায় পোস্ট ঘেঁষে।
৫৯তম মিনিটে ভিনিসিউস জুনিয়রের শট ব্যর্থ হয় ক্রসবারে লেগে। দুই মিনিট পর লেওয়েলিংয়ের শট ঠেকিয়ে ব্যবধান ধরে রাখেন কোর্তোয়া।
৬৭তম মিনিটে এদের মিলিতাওয়ের পায়ে লেগে পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায় লেওয়েলিংয়ের শট। সেই কর্নার থেকেই পরের মিনিটে হেডে জাল খুঁজে নেন উন্দাভ।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে দারুণ জমে ওঠা ম্যাচের ৮৩তম মিনিটে ফের এগিয়ে যায় রেয়াল। লুকা মদ্রিচের কর্নারে সবার উঁচুতে লাফিয়ে বল জালে পাঠান রুডিগার।
পাঁচ মিনিট যোগ করা সময়ের শেষটায় জালের দেখা পান একটু আগে বদলি নামা এন্দ্রিক। প্রতি-আক্রমণে বল পেয়ে দারুণ গতিতে অনেকটা এগিয়ে দূরপাল্লার শটে ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি। ঝাঁপিয়ে হাত ছোঁয়ালেও জালে যাওয়া ঠেকাতে পারেননি নুবেল।
সতীর্থদের নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিষেকে গোল পাওয়ার আনন্দে মাতেন ব্রাজিলের নতুন ফুটবল সেনসেশন এন্দ্রিক। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রেয়ালের সর্বকনিষ্ঠ গোলস্কোরার এখন তিনিই (১৮ বছর ৫৮ দিন)।
আগের রেকর্ডটি ছিল রাউল গনসালেসের (১৮ বছর ১১৩ দিন), ১৯৯৫ সালে হাঙ্গেরির ক্লাব ফেরেন্সিভারোসের বিপক্ষে ৬-১ ব্যবধানে জয়ের ওই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছিলেন এই স্প্যানিয়ার্ড। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.