আহতদের বিরুদ্ধেই আদালতে উল্টো মামলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জে মদ্যপ অবস্থায় বাড়িঘড়ে হামলায় বৃদ্ধা- শিশুসহ আহত-৫

বিশেষ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার ১নং ওয়ার্ডে বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে বৃদ্ধা, শিশু সহ ৫ জনকে আহত করে উল্টো আহতসহ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
হামলাকারীরা উল্টো মামলা করায় রীতিমত স্তম্ভিত স্থানীয় প্রত্যক্ষদশর্শী লোকজন ও হামলার শিকার পরিবারের লোকজন। গত (২১ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় শাহজামাল (৩০) মদ পান করে পূর্বশত্রুতার জেরে এই হামলা চালিয়েছে বলেও জানা গেছে।
হামলায় আহতরা হলেন, মোসা. সামনূর (৭০), মো. ডালিম (৪৫), নূর আলম (১৭) জান্নাতুল ফেরদৌস (১৯) ও তুহিন (৮) এছাড়াও আরও কয়েকজন হামলার শিকার হয়েছেন। হামলকারী শাহজামাল চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার ১ নং ওয়ার্ডের নয়াগোলা গাইনপাড়া মহল্লার প্রবাসী বাদশার ছেলে।
নেশাগ্রস্থ ও সন্ত্রাসী শাহজামালের মা শাহাজাদী বেগম বাদী হয়ে ঘটনা উল্টোদিকে প্রবাহিত করতে আদালতে একটি সাজানো মামলা দায়ের করে বলেও জানা গেছে। হামলা-মারধর চলাকালে পুলিশকে খবর দেয়ায় শাহজামালের মা শাহাজাদী একই মামলায় সাংবাদিক রাজাবাবু’র নামও দিয়ে দেন।
জানা গেছে, অভিযুক্ত শাহজামাল একজন মাদকাসক্ত, সে প্রায় নেশা করে এলাকায় বিভিন্ন বাসা বাড়ির দরজায় লাথি মারে, কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে তার কিশোর গ্যাং বাহিনীর কিশোরদের দিয়ে মারধর বা হামলা চালায়। ভুক্তভোগী মাউনজেরা বলেন, ঠুনকো কথাতেই এই শাহজামাল লাঠি, লোহার দিয়ে আমাদের উপর হামলা করে, শাহজামালের অত্যাচারে আমরা কয়েকটি পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছি।
তিনি আরও বলেন, শাহজামালের অত্যাচার থেকে বাঁচতে থানায় লিখিতভাবে এজাহার দায়ের করেছি। জি.আর-৪২৭ মামলা নং-৩ এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গৃহিণী মাউনজেরা গত ইং ২১/০৭/২০২৪ তারিখ সন্ধ্যা ০৭.৩০ ঘটিকার সময় তার বসত বাড়ীর সামনে আঙ্গিনায় দাড়িয়ে ছিলেন।
এমন সময় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একই এলাকার মোঃ শাহজামাল (৩০), পিতা-মোঃ বাদশা, মোসাঃ শাহজাদী বেগম (৪৫), স্বামী-মোঃ বাদশা, মোঃ আহাদ আলী নিপু (২৫), পিতা-মোঃ আবুল কালাম আজাদ, মোঃ সাগর আলী (২৫), পিতা- শামসু, মোসাঃ পিয়ারা বেগম (৪৫), স্বামী মোঃ আবুল কালাম আজাদ, মোঃ শরিফ হোসেন (৫০), পিতা-মৃত নাইমুল আলী, মোঃ সুফিয়ারা বেগম (৫০), স্বামী-মৃত সাইদুর আলী, মোসাঃ বিউটি বেগম (৪০), স্বামী মোঃ মাসুদ, মোসাঃ নূর মহল (৪৮), স্বামী মোয়াজ্জেম, মোসাঃ মোসলেমা বেগম (৪৮), স্বামী-শরিফ হোসেন, মোঃ সোবহান (৪০), পিতা-মৃত কয়েশ আলী, মোসাঃ বৃষ্টি খাতুন (২২), পিতা-মোঃ বাদশা আলী, মোসাঃ লেতুন (৩০), স্বামী মোঃ রজব আলী, মোসাঃ নাইমা বেগম (২৫), পিতা-মোঃ রুহুল, সর্বসাং-নয়াগোলা গাইনপাড়া, থানা ও জেলা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ, আসামীরা দলবদ্ধ হয়ে হাতে লাঠি, লোহার রড ও জিআই পাইপ ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হইয়া মাউনজেরার বসতবাড়ীর আঙ্গিনায় প্রবেশ করে এবং তাকে বিভিন্ন ধরনের গালিগালাজ করতে থাকে।
মাউনজেরা আসামীদের গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে বাদশার স্ত্রী মোসাঃ শাহজাদী বেগমের হুকুমে তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র দিয়ে মাউনজেরাকে এলোপাথারী মারপিট করে। এসময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। মাউনজেরার ডাক চিৎকারে তার স্বামী মোঃ ডালিম, শ্বশুড়ী মোসাঃ শামনুর বেগম, ছেলে মোঃ নূর আলম ও মেয়ে মোসাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসী তাকে রক্ষার জন্য আগাইয়া আসিলে আসামীরা লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মাউনজেরার স্বামী মো. ডালিমের মাথায় আঘাত করে। এতে মারত্মক জখম রক্তাক্ত হয়ে সে সময় সে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এসময় সাগর ও শরিফ আহত ডালিমকে এলোপাথারী মারপিট করলে মারাত্মক জখম করে। মাউনজেরার স্বামীকে রক্ষার জন্য তার শ্বশুড়ী শামনুর বেগম আগাইয়া আসিলে আসামী সোবহান এর হাতে থাকা জিআই পাইপ দ্বারা মোসা: শামনুর বেগম কে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। সে সময় মাউনজেরার ছেলে মোঃ নূর আলম ও মেয়ে মোসাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসী তার দাদীকে ধরতে গেলে আসামীরা মাউজেরার ছেলে ও মেয়েকে এলোপাথারি ভাবে মারধর করে।
এসময় আসামীরা মাউনজেরার গলায় থাকা ১২ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন জোর পূর্বক ছিড়ে নেয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিক পুলিশ কে খবর দিলে, পুলিশ আসামাত্র আসামীগন আহতদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও প্রাননাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়।
আহতদের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় স্থানীয়রা দ্রুত ২৫০ সয্যা চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে মোঃ ডালিম ও মোসাঃ শামনুর বেগমকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক রাজাবাবু ঘটনাস্থলের কাছে তার বোনের বাড়িতে অবস্থান করছিলো, গন্ডগোল, চিৎকার শুনে পুলিশকে খবর দিলে শাহজামালের মা শাহাজাদী ক্ষিপ্ত হয়ে একই মামলায় সাংবাদিক রাজাবাবু’র নামও যুক্ত করে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.